বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চট্টগ্রামে বিএনপি গা ছাড়া

ঝিমিয়ে নেতারা স্থবির সাংগঠনিক কার্যক্রম

রফিকুল ইসলাম সেলিম | প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রামে রাজনীতির মাঠে গা ছাড়া ভাব বিএনপির। নেই কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি। স্থানীয় ইস্যুতেও নীরব দলটি। কেন্দ্রীয় কিছু কর্মসূচি পালিত হয় দায়সারাভাবে। নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয় চত্বরেই সীমিত রাজনৈতিক কর্মকান্ড। মহানগর কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে দুই বছর আগে। চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় কমিটি নেই প্রায় এক যুগ ধরে। দক্ষিণ জেলায় আহ্বায়ক কমিটি হলেও নেই কোন তৎপরতা। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, নেতাদের গা ছাড়া ভাব কর্মীদের হতাশা করছে। এতে ঝিমিয়ে পড়েছে রাজনীতি এবং সাংগঠনিক কর্মকান্ড।
এক-এগারোর বড় ধাক্কা। এরপর টানা তিনটি জাতীয় নির্বাচনের দুটিতে পরাজয়-একটি বর্জন, সেইসাথে ব্যাপক দমন পীড়নে বেহাল বিএনপির অবস্থা। এক যুগের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে দলটি। হাজার হাজার নেতাকর্মী ঘরবাড়ি ছাড়া। অনেকের মাথায় অগণিত মামলা, হুলিয়া। আদালতের বারান্দা আর আইনজীবীর চেম্বারে কাটছে বেশিরভাগ সময়। এরপরও জাতীয়তাবাদী শক্তির ঘাঁটি খ্যাত চট্টগ্রাম অঞ্চলের নেতাকর্মীরা দলের হাল ছাড়েনি। যে কোন কর্মসূচিতে তারা সামিল হয়েছে।
তবে বিগত জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে তেমন কোন কর্মসূচি নেই মাঠের বিরোধী দল বিএনপির। এতে হতাশ মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মী, সমর্থকেরা। করোনার অজুহাতে অনেকটা হাত গুটিয়ে নেন দলের নেতারা। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিছু তৎপরতা দেখা গেলেও নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর তাও এখন বন্ধ রয়েছে। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে ছোটখাটো সমাবেশ কিংবা মানববন্ধনের মতো শীতল কর্মসূচি পালন করছে দলটি। আর এসব কর্মসূচিতে ঘুরেফিরে হাতেগোনা কিছু নেতাকর্মী দেখা যায়। অথচ সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনসাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের নেতৃত্বে মহানগর কমিটিতে নেতার সংখ্যাই ২৭৫ জন।
একই অবস্থা চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপিতেও। উত্তর জেলা বিএনপি কোন্দলে জর্জরিত দীর্ঘদিন ধরে। বেশিরভাগ উপজেলা ও পৌর এলাকায় রয়েছে কলহ-বিরোধ। এক যুগের বেশি সময় ধরে নেই জেলা কমিটি। দলের যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে কমিটি করা হয়। কমিটির সদস্যসচিব হাসান চৌধুরী মারা গেছেন অনেক আগে। আসলাম চৌধুরী বছরের পর বছর কারাগারে। এতে সাংগঠনিক অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। নাজুক অবস্থার মধ্যেও দলীয় কোন্দল থেমে নেই। বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয় পৃথকভাবে।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। আহবায়ক করা হয় চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ানকে। তাকে চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের উপ-নির্বাচনে ধানের শীষের মনোনয়নও দেওয়া হয়েছিলো। তবে তার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলায় তেমন কোন রাজনৈতিক তৎপরতা নেই বলে জানান দলের নেতাকর্মীরা। জেলার বিভিন্ন উপজেলা এবং পৌরসভায় নেই কোন সাংগঠনিক তৎপরতা।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন আসন থেকে বার বার নির্বাচিত কেন্দ্রীয় নেতারাও অনেকটা চট্টগ্রাম বিমুখ। চট্টগ্রামের কোন রাজনৈতিক এমনকি সামাজিক অনুষ্ঠানেও এখন তাদের দেখা যায় না। আগে নানা ইস্যুতে তারা চট্টগ্রামের রাস্তায় নামতেন। তাদের আগমনে নেতাকর্মীরা উৎসাহিত- উজ্জীবিত হতেন। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জানান, এখন অনেক নেতা দলের কর্মীদের খবর নেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেন না। স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টাসহ চট্টগ্রামের বেশ কয়েকজন নেতা কেন্দ্রীয় দায়িত্বে আছেন।
তবে মহানগর ও জেলার নেতারা দাবি করেন, তারা সরকারের নানা জুলুম নির্যাতনের মধ্যেও মাঠে আছেন। দীর্ঘদিন থেকে বড় কোন সভা-সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। আর তাই দলীয় কার্যালয়েই তাদের কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন