বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সবজি আবাদের ধুম

বৃষ্টি ও নিম্নচাপে বীজতলার ক্ষতি আগাম আবাদেরটা বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যবৃদ্ধি

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

অসময়ের বৃষ্টি ও নিম্নচাপের কারণে এবার আগাম শীতকালীন সবজি উৎপাদনের ক্ষতি হয়েছে। সে কারণে বাজারে সরবরাহ কম। তবে বর্তমান আবহাওয়ায় শীতকালীন সবজি আবাদের ধুম পড়েছে। ‘ভেজিটেবল জোন’ যশোর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বগুড়া, রংপুর, কুমিল্লা, নরসিংদী, মেহেরপুর, রাজবাড়ি, ফরিদপুর ও দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাঠে শীতকালীন সবজি আবাদে ব্যস্ত চাষিরা। শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি আবাদ করছেন। আগাম আবাদের শিম, বাধাকপি, ফুলকপি, বেগুন, লাউ, কচুরমুখী, পেপে, ধনেপাতা, বরবটি ও টমেটোসহ রকমারি সবজি চারিদিকে। নিম্নচাপের পর এখন শীতকালীন সবজি আবাদে মাঠে নেমেছেন চাষিরা।

চাষিরা বলেছেন, বৃষ্টি ও নিম্নচাপে শীতকালীন সবজির বীজতলা ক্ষতি হওয়া আবাদ পিছিয়ে গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশে দু’টি মৌসুমে সবজি আবাদ হয় ৭ লাখ ১২ হাজার হেক্টর জমিতে। মোট উৎপাদন হয় ১ কোটি ৬০লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে বড় অংশই হয় শীতকালে। এবার শীতকালীন সবজি উৎপাদনের টার্গেট রয়েছে সাড়ে ৫ লাখ হেক্টর জমিতে। বাংলাদেশে ৬০ ধরনের ২০০ জাতের সবজি উৎপাদিত হচ্ছে। প্রায় দেড় কোটি কৃষক সবজি চাষের সঙ্গে জড়িত। কৃষি সম্প্রসারণের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. আসাদুল্লাহ বলেছেন, শীতকালীন সবজির আবাদ পরিস্থিতি ভালো। দৈনিক ইনকিলাবের ব্যুরো থেকে পাঠানো সারাদেশের প্রকৃত মাঠচিত্র ফুটে উঠেছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো থেকে সিনিয়র রিপোর্টার রফিকুল ইসলাম সেলিম জানান, চট্টগ্রাম অঞ্চলে শুরু হয়েছে শীতকালীন শাকসবজির আবাদ। আগাম শীতের সবজি বাজারে উঠতে শুরু করেছে। করোনাকালে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবার আরো বেশি জমিতে শাকসবজির আবাদ হচ্ছে। কৃষি বিভাগের হিসাবে, এ অঞ্চলের ৫ জেলায় এবার সর্বোচ্চ ৫৪ হাজার ৪৮৯ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৭৭৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।

গত বছর ১১ লাখ ৬৫ হাজার ৮৫০ হেক্টর শীতকালীন শাকসবজি উৎপন্ন হয়। এবার উৎপাদন আরও বাড়বে বলে জানান কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। চট্টগ্রাম অঞ্চলে ব্যাপকভাবে লাল শাক, পালং শাক, বেগুন, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, শিম, লাউ, বরবটি, ওলকপি, শালগম, মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়। সীতাকুন্ড, চন্দনাইশের দোহাজারী, সাতকানিয়া, হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়াসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়, টিলা এবং সমতলে শীতকালীন শাকসবজির আবাদ হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মনজুরুল হুদা বলেন, এবার বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় শীতকালীন শাকসবজিসহ সব রকমের ফসলের ভাল ফলন হচ্ছে। প্রান্তিক চাষিদের মাঝে শীতের শাকসবজির মানসম্পন্ন বীজ এবং সার দেয়া হয়েছে। আশা করি এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ এবং উৎপাদন হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নাসির উদ্দিন বলেন, এখন মাছ, গোশতের চেয়ে সবজির চাহিদা বেশি। বাজারে দামও ভাল পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে কৃষকরা নিজেদের উদ্যোগে শীতকালীন শাকসবজি চাষ করছে। প্রতিবছরই আবাদের জমি বাড়ছে। চট্টগ্রামের সবজি এখন বিদেশেও রফতানি হচ্ছে।

রাজশাহী ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা রেজাউল করিম রাজু জানান, সবজি উৎপাদনে উদ্বুত্ত অঞ্চল রাজশাহীতে দাম আকাশ ছোঁয়া। এ সময় আগাম শীতের সবজিতে বাজার ভরা থাকে। কিন্তু বান বর্ষণে উৎপাদন কম হয়েছে। কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে শীতকালীন শাকস্বব্জি ও টমেটো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৯শ’ হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা তিনলাখ ১৬ হাজার মে.টন।

তানোর মোহনপুর বাগমারা দূর্গাপুরের বেশকিছু জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে। তারপরও আবাদ মন্দ নয় বলে দেখা যাচ্ছে। গত দু’সপ্তাহ ধরে বাজারে উকি দিচ্ছে শীতকালীন সবজি। দামে অস্বস্তির ছোঁয়া। আগাম সবজি হিসাবে শুরুতে একটু দাম বেশি হয়। তবে সরবরাহ কমের কারণে এখন সবজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি হতে পঞ্চাশ টাকা কেজি দরে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ইলিয়াস হোসেনের অভিমত অতিবৃষ্টি ও বন্যায় এখানকার কৃষিতে যে ক্ষতি হয়েছে তার প্রভাব বাজারে দেখা যাচ্ছে। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামছুল হক বলেন, বিরুপ প্রকৃতি মোকাবেলা করেই আমাদের চাষাবাদ করতে হয়। এবার বন্যা ও অতি বর্ষণে রাজশাহীর বেশ কিছু জমির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার একটা প্রভাব বাজারে থাকলেও এতো বেশি থাকার কথা নয়। যে সকল কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন তারা আবার নতুন করে আবাদ শুরু করেছেন। আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে বাজারে আরো সরবরাহ বাড়বে।

নোয়াখালী ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা আনোয়ারুল হক আনোয়ার জানান, শীত মৌসুমে নোয়াখালীতে শাকসবজি চাষে ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে পলিমাটি বিধৌত নোয়াখালীর উপক‚লীয় অঞ্চলে শাকসবজি চাষাবাদে কৃষকরা এখন থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
নোয়াখালী সদর, সূবর্ণচর, মেঘনাবেষ্টিত হাতিয়া, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি উৎপন্ন হচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে, বিভিন্ন জাতের শাকসবজি। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অবশিষ্ট শাসকসবজি পাশর্^বর্তী জেলায় সরবরাহ করা হয়। এখানে শাকসবজির ফলন ভালো এবং বাজার মূল্য অনুক‚লে থাকায় কৃষকরা শাক সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, আসন্ন শীত মৌসুমে জেলায় ২৫০০ হেক্টরে শাকসবজি আবাদেও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলা কৃষি অফিস থেকে শাক সবজি চাষাবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।
বরিশাল ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা নাছিম উল আলম জানান, দক্ষিণাঞ্চলে এবার দু দফার অকাল অতিবর্ষণে গ্রীষ্মকালীন ও আগাম শীতকালীন সবজি প্রায় সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়েছে।

চলতি রবি মৌসুমে কৃষি মন্ত্রণালয় দক্ষিণাঞ্চলের ৫২ হাজার হেক্টর জমিতে ১১ লাখ টন শীতকালীন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। কৃষকদের সে ধরনের প্রস্তুতি থাকলেও দু’দফার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আর্থিক ক্ষতিও ব্যাপক। গত ভাদ্রের অমাবশ্যায় ভর করে লঘু চাপে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারের সাথে প্রবল বর্ষণ আর উজানের বন্যার পানিতে গ্রীষ্মকালীন সবজি বিনষ্ট হয়। আরেকটি নিম্নচাপে ভর করে গত ২২ ও ২৩ অক্টোবরের প্রবল বর্ষণ ও জোয়ারে আগাম শীতকীলন সবজির পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। শীতকালীন সবজি আবাদ এ অঞ্চলে কিছুটা বিলম্বিত হবার কথা বলছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদগণ।
বগুড়া ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা মহসিন রাজু জানান, বগুড়া চলতি শীতকালীন শাকসবজি রোপনের কর্মসূচি দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও টানা বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হলেও উচু এলাকার জমিতে সবধরনের শাকসবজি, মরিচ, পেঁপে, বেগুন, করলা, পটল সহ অন্যান্য ফসল বাজারে আসতে শুরু করেছে। গত ৩ দিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় বাজারে সবধরনের শাকসবজির সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে।

বগুড়া রাজাবাজার ও মহাস্থানের পাইকারী সবজি বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও আস্তে আস্তে কমে আসছে। বগুড়ায় বৃহস্পতিবার খুচরা বাজারে বেগুন, পটল, করলা, বরবটি, প্রভৃতি সবজি মোটামুটি ৬০ টাকার মধ্যে পাওয়া গেছে। ৫৫ টাকার গোল আলু কমে ৪৫ টাকায় এবং হল্যান্ড আলু ৪৫ টাকা থেকে কমে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানিয়েছে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সব ধরনের শীতের সবজি ৪০/৫০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যাবে। পাশাপাশি শাকসবজিও ২০/৩০ টাকার মধ্যে ক্রেতারা কিনতে পারবে।
দিনাজপুর আঞ্চলিক অফিস থেকে সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল হক আনার জানান, কৃষি নির্ভর দিনাজপুর জেলায় ফলন ভাল হলেও সকল ধরনের সবজির দাম আকাশচুম্বি। এর কারন অন্যান্য জেলার চাহিদা। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে চলতি রবি মওসুমে জেলায় তিন লাখ ৩০ হাজার ৭৬ হেক্টর জমি আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই বাজারে কিছু কিছু শীতকালীন সবজি উঠতে শুরু করেছে। আাগামী ১৫ দিনের মধ্যে পুরোদমে সবজি উঠলে দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসবে বলে ব্যবসায়ীরা মত প্রকাশ করেছে।

সিলেট ব্যুরো থেকে সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ফয়সাল আমীন জানান, বৃষ্টি বহুল এলাকা সিলেটে। এবার বৃষ্টি হয়েছে অঝোরে অপ্রত্যাশিতভাবে। বিগড়ে গেছে আবহাওয়া। তাই গতি প্রকৃতিও হিসেবের বাইরে। সেই সাথে ৩ দফা বন্যায় বিপর্যস্ত ছিল সিলেট। স্থানীয়ভাবে সবজি চাষিরা সেকারণে সুবিধা করতে পারেননি। শহরতলীর কামাল বাজার, টুকেরবাজার ও আশপাশ এলাকায় প্রতিবছর সবজির চাষের প্রাচুর্য থাকে সিলেটে। কিন্তু এবার ভিন্নতা। নিজদের চাহিদা মেটাতে হিমশীম খাচ্ছে চাষিরা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আশ্বিন মাসে প্রথমবার বীজ ও চারা রোপণের পর অতি বৃষ্টির কারণে নষ্ট হয়ে যায় সেগুলো। দ্বিতীয় দফায় আবারো বীজ বুনলে চারা গজানোর পূর্বেই চলতি টানা বৃষ্টিতে সেগুলো হয় নষ্ট। সবজি চাষি হাফেজ মাসুদ বলেন, চলতি মৌসুমে সবজি চাষিরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বৃষ্টির প্রকোপে।

খুলনা ব্যুরো থেকে স্টাফ রিপোর্টার আবু হেনা মুক্তি জানান, শীত আসতে আর বাকি নেই। শীতের আগমনী বার্তা রবি মৌসুম শুরুর জানান দিচ্ছে। এরই মধ্যে খুলনা জেলার ৯টি উপজেলায় শীতকালীন সবজির চাষ শুরু করেছেন চাষিরা। প্রতি বছর আগাম উৎপাদিত সবজি বাজারে তুলে বিক্রয়ে ভালো দাম পেয়ে থাকেন চাষিরা। তাই আগাম সবজি আবাদে আগ্রহী তারা। জেলার নয় উপজেলার কৃষকরা শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

সূত্রমতে, খর্ণিয়া, ভদ্রদিয়া, বরাতিয়া, নরনিয়া, কাঠাঁলতলাসহ বিভিন্ন গ্রামের চাষিরা ব্যস্ত শীতকালীন সবজি চাষে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় শীতকালীন সবজি চাষ লাভবান হওয়ায় কৃষকেরা এদিকেই ঝুঁকে পড়েছেন বলে জানান এলাকার চাষিরা। শীতের শুরুতেই বাজারে বিক্রি করে বেশি টাকা আয়ের আশায় চাষিরা এখন জমিতে শীতকালীন শাকসবজির চারা বপন ও পরিচর্যার কাজ করছেন।

যশোর ব্যুরো থেকে স্টাফ রিপোর্টার শাহেদ রহমান জানান, আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এবার আগেভাগেই শীতকালীন সবজি উৎপাদন হয়েছে। অসময়ের বৃষ্টি ও নিম্নচাপে ছন্দপতন ঘটে। তবে সবজি উৎপাদনের রেকর্ড সৃষ্টির যশোরে তেমন ক্ষতি হয়নি। কিছু বীজতলার ক্ষতি হলেও সামগ্রিকভাবে চলতি মৌসুমে সবজির বাম্পার ফলন হবে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। যশোরের খাজুরা এলাকার সবজি চাষি জানান, আগাম সবজির খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। বৃষ্টি হলেও মাটির উচু বিছানায় সবজির আবাদ করায় সবজি ক্ষেতের খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। তবে শীতকালীন সবজির বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আবাদ পিছিয়ে গেছে। সূত্র জানায়, দেশের মোট সবজি চাহিদার একটা অংশ যশোর অঞ্চল থেকে যোগান হয়। এই অঞ্চলে শুধু মাঠে নয়, চাষিদের ঘরের আঙিনায় ও বহু চাষির উঠান জুড়ে বাণিজ্যিকভাবে সবজি আবাদ ও উৎপাদন হচ্ছে।

কুমিল্লা থেকে স্টাফ রিপোর্টার সাদিক মামুন জানান, এবছর কার্ত্তিক মাসে বৃষ্টি হলেও সবজি চাষের জন্য কুমিল্লা অঞ্চলের আবহাওয়া ছিল অনুক‚লে। যে কারণে ক্ষেতের শাক-সবজির ক্ষতি হয়নি। আবার বীজতলাও নষ্ট হয়নি। যার ফলে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় বিস্তৃীর্ণ ফসলি মাঠ জুড়ে শীতের সবজি চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে সবুজ বিপ্লব ঘটবে বলে ধারণা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

এবারে কুমিল্লার কৃষি প্রধান গ্রামগুলোতে শীতের সবজির বাম্পার ফলন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কৃষি কর্মকর্তারা। কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার ১৭ উপজেলায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক সবজির চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কৃষি অফিস আরও ২ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাকসবজি চাষের ব্যাপারে কাজ করছেন।

রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার হালিম আনছারী জানান, চলতি রবি মওসুমে রংপুরের পাঁচ জেলায় প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ৫৫ লাখ টন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কিন্তু বন্যার কারনে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কিছু জমিতে সবজি চাষ করা হয়নি। ফলে উৎপাদনও কিছুটা কম হবে। তবে বন্যার পর পরই এ অঞ্চলে আগাম জাতের সবজি তোলা শুরু হয়েছে।

ফসলি জমিতে আগাম জাতের সবজি চাষ ব্যাপকভাবে স¤প্রসারিত হয়েছে। আর উৎপাদিত সবজি স্থানীয় বাজারে চড়া মূল্যে বিক্রি করে কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। বৃহৎ পরিসরে শীতকালীন সবজি চাষ করছে। বন্যার পর নদীর চরাঞ্চলের জমিগুলোতে পর্যাপ্ত পলি পড়ায় সেগুলোতে সবজির ফলন ভাল হয়। তাছাড়া অসমতল ও বালির পরিমাণ বেশি হওয়ায় বোরোর পরিবর্তে একই জমিতে একইসাথে কয়েক প্রকার সবজি ও রবিশস্য চাষ করে ব্যাপক লাভবান হওয়া যায়। তাই তারা এসব জমিতে অন্যান্য ফসলের পরিবর্তে সবজি চাষেই ঝুঁকছেন বেশি।
লক্ষীপুর জেলা সংবাদদাতা এস এম বাবুল (বাবর) জানান, লক্ষীপুরে ব্যাপক হারে শীতকালীন শাক-সবজির আবাদ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার ৫ উপজেলার কৃষকরা বাজারে লাল শাক, মুলা শাক, সীম, লাউশাক ও ধনিয়া পাতা সরবরাহ শুরু করেছেন। জমিতে বর্ষার পানি জমে থাকায় কোনো কোনো চাষি এখন সবজির জন্য জমি তৈরি করছেন। লক্ষীপুর জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী আবুল হোসেন বলেন, জেলায় শীতকালীন সবজির যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তার মধ্যে প্রায় ১হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে আবাদ শেষ হয়েছে, চলতি মাসের মধ্যে বাকি জমিতে আবাদ সম্পন্ন হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন