মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীর পাড়ে বসবাস করা মানুষগুলোকে হুমকির মুখে ফেলছে প্রভাবশালীরা। অর্থের মোহে পড়ে বিধিনিষেধ অমান্য করে বালু উত্তোলনের এ যন্ত্রণা ভিটামাটি হারানো অসহায় নারী-পুরুষরা আর সইতে পারছে না। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বালু উত্তোলনের ফলে নদীতে বিলীন হচ্ছে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার কয়েকটি গ্রাম। নিজেদের সহায় সম্বল রক্ষায় অবশেষে প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন মেঘনা পাড়ের মানুষজন।
অবশিষ্ট জমি ও ভিটাবাড়ির অংশ রক্ষা ও অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে গতকাল শুক্রবার সকালে মেঘনা উপজেলার চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের রামপ্রসাদের চর গ্রামের নদীর পাড়ের কয়েকশ’ নারী-পুরুষ প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলা ও মামলার শিকার হতে হয়েছে বলেও ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, রইস উদ্দিন মুকুল প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভ‚ঁইয়া এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী আশরাফ উদ্দিন ভ‚ঁইয়ার নেতৃত্বে তার লোকজন নদীর ভাসানিয়া দড়িচর এলাকায় বালু উত্তোলনের ইজারা নিয়ে সেখান থেকে বালু উত্তোলন না করে শেনারচর, নলচর, রামপ্রাসাদেরচর, মৈশারচরসহ আশপাশের এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। এতে ওইসব এলাকার শত শত মানুষের বাড়িঘরসহ ভিটেমাটি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাকি যেটুকু সহায় সম্বল রয়েছে তাও ভ‚ঁইয়া এন্টারপ্রাইজ নামের প্রতিষ্ঠানের ইজারার লোকজন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে হুমকির মুখে ফেলছে।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া স্থানীয়রা জানান, অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে উল্টো হামলা-মামলার শিকার হতে হয়েছে তাদের। মানববন্ধন শেষে ভিটেমাটি হারানো অনেককে নদীর পাড়ে বসে কাঁদতে থাকেন। কেউ নদীর দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলেন। মেঘনা থানার ওসি আবদুল মজিদ বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এরপরও অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন