মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন, রোহিঙ্গারা বঞ্চিত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

আজ রবিবার মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন। সামরিক জান্তার শাসনমুক্ত হওয়ার পর এটাই সেখানে দ্বিতীয় নির্বাচন। তবে এ নির্বাচনেও রোহিঙ্গারা তাদের ভোটাধিকার পাচ্ছেন না। নির্বাচনে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি এবং ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে। এছাড়াও আঞ্চলিক পর্যায়ে আরও ৯১ দল অংশ নিচ্ছে। নির্বাচন কমিশনে নথিভুক্ত মোট দলের সংখ্যা ৯৫টি। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ কোটি ৭০ লাখ। এর মধ্যে তরুণ ভোটার রয়েছে ৫০ লাখ। দ্যা গার্ডিয়ান জানায়, এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ কোটি ৭০ লাখ। তবে বরাবরের মতোই ২৬ লাখ জাতিগত সংখ্যালঘু মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়াও এবারের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে কম সংখ্যক ভোটার উপস্থিত হবে বলে ধারণা করছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা। ১৯৯০ সালের ২৭ মে সামরিক শাসকদের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে সু চি’র দল জয় পেলেও ২০১১ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনা করে সেনাবাহিনী। এর আগে ২০১৫ সালে সবশেষ নির্বাচনে বড় জয় পায় সু চি’র দল ‘ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি’ (এনএলডি)। কিন্তু রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হন সু চি। এমনকি তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার অভিযোগও ওঠে। অনলাইন সিএনএন লিখেছে, নির্বাচনে আবারও ক্ষমতায় যেতে পারেন অং সান সুচি ও তার দল। ২০১৫ সালের নির্বাচনে তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি ভূমিধস বিজয় পায়। এরপর ৫০ বছর দেশকে বিচ্ছিন্ন রাখা ও সামরিক কর্তৃত্বের অবসান ঘটে। আসে প্রথম বেসামরিক সরকার। তার নেতৃত্বে আসেন সুচি। তারপর কেটে গেছে ৫ বছর। এর মধ্যে রোহিঙ্গা গণহত্যার মতো নারকীয়তা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। কিন্তু মানবতার নেত্রী হিসেবে সে সময়ে সুচি ছিলেন একেবারেই নিশ্চুপ। উপরন্ত তিনি সেনাবাহিনীর পক্ষ নিয়ে কথা বলেছেন। সেনাবাহিনীকে রক্ষা করতে হেগে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) দাঁড়িয়েছেন। সারা বিশ্বে এ জন্য তার কড়া সমালোচনা থাকলেও সুচি এখনও জাতিগত বার্মা সংখ্যাগরিষ্ঠদের কাছে জনপ্রিয়। তারা মনে করছে, তিনি আবার ক্ষমতায় ফিরবেন। কিন্তু ২০১৫ সাল আর ২০২০ সাল এক নয়। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পশ্চিমাদের চোখে এ সময়ের গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে পরিচিত সুচি এখন আর গণতন্ত্রের প্রতীক নন। কারণ, তিনি রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী যে নৃশংসা চালিয়েছে তার বিরুদ্ধে তিনি কোনো ব্যবস্থাই নেন নি। সেনাবাহিনীর এই নৃশংসতাকে জাতিসংঘ জাতিনিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এর পলে কমপক্ষে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। বেঁচে থাকা রোহিঙ্গারা বর্ণনা করেছেন তাদের ওপর চালানো নৃশংসতা। তাদেরকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। গণহত্যা চালানো হয়েছে। নির্যাতন করা হয়েছে। সম্পদ ধ্বংস করে দিয়েছে সাধারণ মানুষের। এখনও রাখাইনে যেসব রোহিঙ্গা আছেন তারা রয়েছেন বিচ্ছিন্ন অবস্থায়। তাদেরকে জেলখানায় বসবাসের মতো অবস্থায় সেখানে বাস করতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাদের চলাচলে, শিক্ষা গ্রহণে এবং স্বাস্থ্যসেবায় রয়েছে বিধিনিষেধ। মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন ফোর্টিফাই রাইটসের সিনিয়র বিশেষজ্ঞ জন কুইনলে বলেছেন, এখনও রোহিঙ্গাদের ভোটাধিকার ইেন। তাদেরকে ১৯৮২ সালের বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব আইনের অধীনে পূর্ণাঙ্গ নাগরিক অধিকার দেয়া হয় নি। রোহিঙ্গাদেরকে শুধু ভোটাধিকার থেকেই বঞ্চিত করা হয়নি। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনের বাইরে রাখা হয়েছে। গার্ডিয়ান, সিএনএন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন