দেশে শত শত কোটি টাকা ঋণ নিয়ে প্রভাবশালীরা দেউলিয়া হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়না। কিন্তু ব্র্যাক ব্যাংকের একটি ঋণের কারনে ৩টি পরিবার নি:স্ব।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সিলেটের বিশ^নাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের কাটলি পাড়া গ্রামের মৃত যদেশ^র (যন্যেশ^র) মালাকারের পুত্র রাধা মালাকার বৈরাগী বাজার মেসার্স চুমকি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর দোকানের নামে ১৭% সুদে বিশ^নাথ ব্রাক ব্যাংক শাখা থেকে ২০০৮ সালের ১৭ নভেম্বর ৬ লাখ ৫০ হাজার ৫৪৮ টাকার ঋণ গ্রহণ করনে। এই ঋণের আবেদন ফর্মে রাধা মালাকারের ভাই রাখাল মালাকার ও একই গ্রামের হামিদ আলীর পুত্র নিরক্ষর মখলিসুর রহমান স্বাক্ষীর কলামে স্বাক্ষর করেন। ঋণ গ্রহনের সময় ফর্মে স্বাক্ষী দিলেও এ ঋণের টাকা স্বাক্ষীগন পরিশোধ করতে হয়, এমন কথা তারা কোন দিন জানতেন না। রাধা মালাকার ঋণের টাকা প্রতিমাসে ৩২ হাজার ২৯৫ টাকা ২৪ কিস্তিতে পরিশোধ করার কথা ছিল। তিনি ১লাখ ৯২ হাজার টাকা ঋণ ও পরিশোধ করেছিলেন।
২০০৯ সালের ২৯ ডিসেম্বরের পর হতে ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করতে পারায় ব্যাংকের ক্রমাগত চাপ ও নোটিশের কারনে মানুষিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন রাধা মালাকার। তিনি দীর্ঘ দিন জেলেও ছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি স্ত্রী পুত্রকে বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায়। আজ পর্যন্ত তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। স্ত্রী পুত্ররা অনাহারে দীর্ঘদিন দিনাতিপাত করার পর তারাও বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। ব্রাক ব্যাংক টাকা উদ্ধারের জন্য ২০১৫ সালে সিলেটের অর্থঋণ আদালতে ঋণ গ্রহীতা রাধা মালাকারের ভাই রাখাল মালাকার ও স্বাক্ষী মখলিসুর রহমানকে আসামি করে ১৩ লাখ ৪৬ জাহার ২৬৪ টাকা ঋণ পরিশোধের মামলা দায়ের করে ব্যাক ব্যাংক, (অর্থঋণ মামলা নং-০৫/২০১৫)।
স্বাক্ষী রাখাল মালাকার দীর্ঘদিন পলাতক থাকবস্থায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রæয়ারী মাসে মৃত্যু বরণ করেন। অপর স্বাক্ষী মখলিসুর রহমান টাকার অভাবে আদালতে জামিনের আবেদন পর্যন্ত করতে পারেননি। ফলে পূরো ৬ মাস সাজা ভোগ করেন। তার পরও ব্রাক ব্যাংক তাদের পিচু ছাড়েনি। ব্যাংক ঋণ পরিশোধের জন্য আরো একটি জারি মোকদ্দমাও দায়ের করে, (মামলা নং-১৩/২০১৭)। এই খবরে মখলিসুর রহমান মানুষিকভাবে বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছেন। ব্যাক ব্যাংকের একটি ঋণের কারনে ৩টি পরিবার এখন ধবংসের দারপ্রান্তে। এ ঘটনায় এলাকায় দারুণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে এলাকায় গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মখলিসুর রহমান ব্রাক ব্যাংকের ঋণের কারন আত্মহত্যাও করতে পারেন বলে জানিয়েছেন। একথা এখন এলাকার মানুষের মুখে মুখে প্রচারিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসি ৩টি পরিবারকে রক্ষায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন