বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

জয় চায় বাংলাদেশ, ছাড় দেবে না নেপাল!

জাহেদ খোকন | প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০২০, ৮:২১ পিএম | আপডেট : ৮:৫৬ পিএম, ১২ নভেম্বর, ২০২০

করোনাকালেই নেপালের বিপক্ষে ফিফা আন্তর্জাতিক দুই প্রীতি ম্যাচের সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। যার নামকরণ হয়েছে মুজিববর্ষ ফিফা আন্তর্জাতিক ফুটবল সিরিজ। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি মাঠে গড়াবে শুক্রবার। এদিন বিকাল ৫টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হবে বাংলাদেশ-নেপাল প্রথম প্রীতি ম্যাচ। খেলা সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও টি-স্পোর্টস। এছাড়া বাংলাদেশ বেতার ম্যাচের ধারা বিবরনী প্রচার করবে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের আগে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের থাবায় অনেকটাই জর্জরিত নেপাল জাতীয় দল। করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় দলটি ৬ ফুটবলারকে দেশে রেখেই ঢাকায় এসেছে। ঢাকায় আসার পর নেপালের আরও এক ফুৃটবলারের করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসায় স্বাভাবিকভাবেই তারা হতাশ। তবে বাংলাদেশ দলের সব খেলোয়াড়ের করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসায় ম্যাচের আগে নেপালের চেয়ে মানসিকভাবে অনেকটাই চাঙ্গা স্বাগতিকরা। যদিও চোটের কারণে লাল-সবুজদের ছয় ফুটবলার চুড়ান্ত দলে জায়গা পাননি। প্রীতি ম্যাচে জয় চায় বাংলাদেশ, কিন্তু ছাড় দেবে না নেপাল। বৃহস্পতিবার দুপুরে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানান দু’দলের কোচ ও অধিনায়ক।

করোনার কারণে গত মধ্য মার্চ থেকে খেলার বাইরে বাংলাদেশের ফুটবলাররা। দীর্ঘ সাত মাস পর নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরছেন তারা। স্বাভাবিকভাবেই তাদের মধ্যে শিহরণ কাজ করছে। কারণ প্রীতি ম্যাচ হলেও এটা বাংলাদেশের প্রতিশোধের ম্যাচ। নেপালের কাছে টানা তিন হার রয়েছে লাল-সবুজদের। ২০১৩ ও ২০১৮ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপাল একই ব্যবধানে (২-০) হারিয়েছিল বাংলাদেশকে। আর গত বছর সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে বাংলাদেশ অলিম্পিক দল ১-০ গোলে হারেছিল এই নেপালীদের বিপক্ষে। তাই তো অতীত মনে করে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেন,‘বেশ লম্বা সময় পর আমরা নেপালের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলব। আমি জানি আমার দলের খেলোয়াড়রা শতভাগ ফিট নয়। কিন্তু আমরা গত তিন সপ্তাহ ধরে অনুশীলন করছি। আশা করছি, এই সিরিজ আমরাই ভালো করবো।’ তিনি যোগ করেন,‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে খেলার জন্য ফিট হয়ে ওঠা। কিন্তু একজন খেলোয়াড় হিসেবে অবশ্যই আমি জিততে চাই। সবাই ম্যাচ জিততে চায়। গত ক’বছরে আমরা নেপালের কাছে তিন ম্যাচ হেরেছি, সেটা আমার মাথায় আছে এবং আমি দুই ম্যাচই জিততে চাই।’

ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে নেপাল ১৭০তম স্থানে থাকলেও বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৭। ২০১৫ সালে ফিফা প্রীতি ম্যাচে বাংলাশে ১-০ গোলে জিতেছিলো নেপালের বিপক্ষে। পরের বছর আরেকটি প্রীতি ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে লাল-সবুজরা। তবে সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে শক্তির বিচারে কিছুটা এগিয়ে হিমালয় কণ্যার দেশটি। কিন্তু ঘরের মাঠ আত্মবিশ্বাস যোগাবে জামাল ভূঁইয়াদের।

তবে বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে অবশ্য এই সিরিজকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতি হিসেবে নিচ্ছেন। ম্যাচের ফলাফল নিয়ে মাথা ব্যথা নেই তার। জেমি বলেন, ‘প্রস্তুতি ভালো হয়েছে। ছেলেরা যতটা সম্ভব তাদের সাধ্য অনুযায়ী কঠোর পরিশ্রম করেছে। আমাদের লক্ষ্য ম্যাচে ভালো করা। তবে ম্যাচের ফলাফল নিয়ে চিন্তিত নই। আমাদেরকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে এখন পরিস্থিতিটা ভিন্ন। আমরা এই ম্যাচের অভিজ্ঞতা ডিসেম্বরে কাতার ম্যাচে কাজে লাগাতে চাই। নেপালের বিপক্ষের ম্যাচগুলো হবে কাতার ম্যাচের ওয়ার্মআপ ম্যাচ।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমরা সাত মাসেরও বেশি সময় মাঠে থাকতে পারিনি। এ সময়টা অনুশীলনও করতে পারিনি। নেপালেরও একই অবস্থা। তাই এখন দু’দলের মধ্যে কারা এগিয়ে আছে বলা সম্ভব না।’

সিরিজ জিততে শতভাগ আশাবাদি নেপালী কোচ বালগোপাল মহারজন। তিনি বলেন, ‘করোনাতো এখন জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একে মানিয়ে নিয়েই চলতে হবে আমাদের। বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে বৈকি। তবে আমি মনে করি করোনা আক্রান্ত আমাদের ৭ ফুটবলারের জায়গায় যাদের খেলানো হবে তারাও ভালোমানের। দলের প্রতি শতভাগ নিবেদিতই থাকবে ওরা। করোনা পরিস্থিতির কারণে আট-নয় মাস ধরে খেলায় নেই আমাদের ছেলেরা। সঙ্গে যোগ হয়েছে অনুশীলনের জন্যে অল্প সময় পাওয়া। যে কারণে খেলাটা বড় চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে দিনে দিনে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।’

মহারজন যোগ করেন, ‘এই মাঠেই বঙ্গবন্ধু ও সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে খেলেছি। তখন প্রস্তুতির জন্যে পর্যাপ্ত সময় পেয়েছিলাম। কিন্ত এখন সময়টা ভিন্ন। করোনার কারণে ভালো ভালো কিছু খেলোয়াড়কে পাচ্ছি না আমি। তবু নিজেদের সেরাটাই দেয়ার চেষ্টা থাকবে ছেলেদের। আমি মনে করি দু’দলই কাছাকাছি অবস্থানে আছে। আমি আমার দলের কাছে ব্যক্তিগত ও দলগতভাবে ভালো পারফম্যান্স চাই।’ অধিনায়ক কিরন চেমজং বলেন, ‘মাঠে ফিরতে মুখিয়ে আছি আমরা। অনেক দিন ধরেই দুই দেশ খেলায় নেই। লম্বা সময় পর অবশেষে ফুটবলে ফিরতে পারাটা বাংলাদেশের জন্যে ভালো, আমাদের জন্যেও। ম্যাচটা দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। আমরা প্রস্তুত, মাঠে নিজেদের সেরাটা দিয়েই লড়বো এবং জয় পাবো।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন