ধানের জেলা হিসাবে পরিচিত দিনাজপুর এখন মৌসুমী ফল চাষে এগিয়ে যাচ্ছে। গত এক দশকে লিচু’র খ্যাতি অর্জন করেছে এই জেলা। এবার মাল্টা চাষেও কৃষকেরা সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছে। সম্পূর্ণ বিষমুক্ত ও রাসায়নিক সারের পরিবর্তে গোবর সারেই ভাল সাফল্য মিলেছে মাল্টা চাষে। হলুদ নয় সবুজ রংয়ের মাল্টা অন্যান্য দেশের মাল্টার চেয়েও বেশি মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় দেশিয় মাল্টার চাহিদা বেড়েই চলেছে। গোলাভরা ধানের পরিবর্তে খাঁচা ভরা ফল নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে শুরু করেছে কৃষকেরা। ইতিমধ্যেই দিনাজপুরের বাজারে উঠা মাল্টা বিক্রি হচ্ছে।
দিনাজপুর সদর উপজেলা সংলগ্ন চিরিরবন্দর উপজেলার রাণীরবন্দর এলাকার এক যুবকের মাল্টা চাষের সাফল্য এখন আশ-পাশের কৃষকদের উৎসাহী করে তুলেছে। সাধারণ পদের সরকারি চাকরির পাশাপাশি আয়ের (অর্থ-উপার্জনের) অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে কৃষি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার উৎসাহে মাত্র এক একর জমিতে লাগানো ২শ’ গাছ রোপন করে সে। মাত্র ৪ বছরের মাথায় বেড়ে উঠা গাছগুলিতে থোকায় থোকায় ঝুলতে থাকা মাল্টা দেখে সে মহাখুশি। অন্যান্য দেশ থেকে আসা মাল্টার চেয়ে মিষ্টি ও সুস্বাদু এই মাল্টা। প্রতিদিন তার মাল্টার বাগান দেখতে আসছে কৃষকসহ সকল পেশার মানুষ। মুখে নিয়ে দেশিয় মাল্টার স্বাদে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছে। ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই দেশিয় প্রযুক্তিতে কিটনাশক ও রাসায়নিক সার মুক্ত মাল্টা বাজারজাত করা সম্ভব হবে। মাল্টা আবাদে সাফল্য অর্জনকারী আহসান হাবীব রাসেলের মুখ থেকেই শোনা যাক ধানের জমিতে মাল্টা আবাদের কথা
ইতোমধ্যেই সুস্বাদু ফল প্রেমিক থেকে ব্যবসায়ীরা বাগানে যাচ্ছে মাল্টা ক্রয়ের জন্য। মিষ্টি ও স্বাদে ভিনদেশি মাল্টার চেয়ে অনেক ভাল বলে স্থানীয়রা মত প্রকাশ করেছে। চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানালেন ২০১৭ সাল থেকে সরকারের রাজস্ব খাতের অর্থায়নে বাগান স্থাপন করা হয়। বারী-১ জাতের এই মাল্টা সম্পূর্ণ কিটনাশক ও রাসায়নিক সার মুক্ত। এর মূল উপাদান হচ্ছে গোবর।
চলতি বছর দিনাজপুর জেলায় ২০ হেক্টর জমিতে মাল্টার আবাদ করা হয়েছে। যা থেকে ১০৩ মেট্রিক টন মাল্টা উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। ধানের পাশাপাশি বিভিন্ন মৌসুমী ফল আবাদ নিশ্চিত করা গেলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সু-স্বাদু ফল রফতানির খাতায় নাম লিখাবে বাংলাদেশ। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে মৌসুমী ফল হবে অন্যতম একটি খাত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন