শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের জ্ঞাতার্থে কতিপয় তথ্য ও পরিসংখ্যান

মোবায়েদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

মানুষ সামাজিকভাবে যত উপরে ওঠে তত তার দায়িত্ব এবং কর্তব্য বেড়ে যায়। সেই মানুষের কথাবার্তা ও আচার-আচরণ তার সামাজিক অবস্থানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়ে ওঠে। ইংরেজিতে একটি কথা আছে, Chair makes a man. কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো, ইংরেজির এই কথাটি কোন কোন ক্ষেত্রে খাটে না। সমাজে দুই চার জন মানুষ আছেন, যারা সমাজের উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত। অথচ তাদের আচরণ উক্তি শোভনীয়তার পর্যায়ে পড়ে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে কে এম নুরুল হুদা এই দুই চার জনেরই একজন। তিনি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বাংলাদেশের দ্বাদশ প্রধান নির্বাচন কমিশনার। ২০১৭ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার একটি সাংবিধানিক পদ। এই পদে সরকার নিয়োগ দেয় ঠিকই। কিন্তু একবার নিয়োগ দিলে তাকে আর সরকার বরখাস্ত করতে পারেনা। বাস্তবে এরা যে আচরণই করুন না কেন, সাংবিধানিকভাবে তারা সম্পূর্ণ স্বাধীন। যেমন স্বাধীন হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং বিচারপতিবৃন্দ। বাস্তবে যাই হোক না কেন, কাগজে-কলমে এবং সংবিধানে তারা এতটাই স্বাধীন যে নির্বাচনকালে মন্ত্রীরা সিইসি’র সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য থাকেন। শুধু মন্ত্রীরা নন, পুলিশ বিভাগসহ সমগ্র প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে যায়। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সিইসি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের অফিসারগণকে বদলিসহ কমিশনের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। যেসব দেশে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হয় সেসব দেশেও নির্বাচনকালে সেইসব সরকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হয়। তখন সরকারের প্রকৃত ক্ষমতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে যায় নির্বাচন কমিশনের হাতে। তখন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সরকারের পুতুল হয় না। বরং সরকারকে কমান্ড করে ইসি। সিইসি হবেন এমন এক ব্যক্তি যিনি হবেন অত্যন্ত চৌকষ ও মেধাবী, প্রখর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, নির্ভীক এবং স্বাধীনচেতা।

আমাদের সিইসি কে এম নুরুল হুদাকে সামনে রেখে এসব কথা মনে হলো। মার্কিন নির্বাচন কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশের ইসির মধ্যে তুলনামূলক পর্যালোচনা করতে গিয়ে তিনি এমন একটি উক্তি করেছেন যা শুধু ব্যক্তিগতভাবে তার নয়, বরণ বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন এবং সেই সুবাদে বাংলাদেশের মান মর্যাদাকে ধুলায় লুণ্ঠিত করেছে। আর নুরুল হুদা ব্যক্তিগতভাবে হয়েছেন সকলের হাসির পাত্র।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মার্কিন নির্বাচন সম্পর্কে একটি মন্তব্য করেছিলেন। ঐ মন্তব্যে তিনি বলেন, মার্কিন নির্বাচন ব্যবস্থা থেকে আওয়ামী লীগ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের শিক্ষা নেওয়া উচিত। আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে গণতন্ত্রকে পুরোপুরি ধ্বংস করেছে এবং গণতন্ত্রের সকল সম্ভাবনা বিনষ্ট করেছে। মার্কিন নির্বাচনে সকল চাপের মুখেও নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ অবিচল ছিল এবং জনগণের রায় বহাল রেখেছে। এটাকেই বলে গণতন্ত্র।

মির্জা ফখরুলের এই মন্তব্যের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন থেকে আমেরিকার শেখার আছে। সেখানে তারা ৪/৫ দিনেও নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করতে পারে না। সেখানে আমরা ইভিএম মেশিনে চার থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ফলাফল ঘোষণা করতে পারি। সিইসি নুরুল হুদা এই ধরনের অজ্ঞতাপ্রসূত ও অর্বাচীন উক্তি বিগত চার বছর ধরে অনেক করেছেন। করতে করতে আমেরিকার সদ্য সমাপ্ত নির্বাচন সম্পর্কে তিনি যে বালখিল্য উক্তি করেছেন, সেটি তার অজ্ঞতা এবং তোয়াজ-তোষণের সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা একটু পরে করব। তার আগে একই দিন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটি সিইসির এই প্রগলভতার যোগ্য জবাব। আগে সেটি উল্লেখ করছি।

॥দুই॥
যেদিন সিইসি নুরুল হুদা মার্কিন নির্বাচন সম্পর্কে ঐ উক্তি করেন সেই একই দিন, অর্থাৎ সদ্যসমাপ্ত উপ নির্বাচনের দিন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, এই উপনির্বাচন মোটেই অংশগ্রহণমূলক হয়নি। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপক্ষ, অংশিদারমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হলে দেশের স্থিতিশীলতা ব্যাহত, সামাজিক অস্থিরতা ও ব্যক্তির নৈরাশ্য বৃদ্ধি পায়। নৈরাশ্য থেকে সৃষ্টি হয় নৈরাজ্য। মাহবুব তালুকদার বলেন, ঢাকা ১৮ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে নিকুঞ্জ, খিলক্ষেত ও উত্তরার ১৪ টি কেন্দ্রের ৭০ টি বুথ পরিদর্শন করেছি। নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আমার ধারণা হয়েছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনের চেয়ে এই নির্বাচনের মান আরও নিচে নেমে গেছে। নির্বাচন মোটেই অংশগ্রহণমূলক হয়নি। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বিরোধী দলের কোনো পোলিং এজেন্টকে আমি দেখিনি। পুরো নির্বাচনী এলাকায় একটি মাত্র দলের পোস্টার, প্লাকার্ড ও বিলবোর্ড দেখা গেছে। অথচ সেগুলো আগের দিনই অপসারণ করা উচিত ছিল। মাহবুব তালুকদার নুরুল হুদার নির্বাচন কমিশনের একজন সদস্য। তিনিই বলেছেন যে এই উপনির্বাচনের মান একাদশ সংসদ নির্বাচনের চেয়েও নিচে নেমে গেছে। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, একাদশ সংসদ নির্বাচনের মান কেমন ছিল?

একথা এখন সারা দেশব্যাপী স্বীকৃত যে, একাদশ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ৩০ ডিসেম্বর দিনে। কিন্তু সেই নির্বাচনে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট প্রদত্ত হয় ২৯ ডিসেম্বর রাতে। কি আশ্চর্য, দিনের ভোট যে আগের দিন রাতে আংশিকভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে সে কথা সিইসি নুরুল হুদাও স্বীকার করেছেন। সিইসি বিলক্ষন জানেন যে, বাংলাদেশে সরকারি দল ছাড়া আর সমস্ত দল ইভিএমে (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ভোট দেওয়ার বিরোধী ছিল। উদাহরণ হিসেবে বিরোধী দলসমুহ বলেছিল যে, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ভারতে এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ আমেরিকায় ইভিএমে ভোট হয় না। ইভিএমের বিপক্ষে যুক্তি দিতে গেলে আমরা প্রসঙ্গ থেকে সরে যাব। শুধু এটুকুই বলবো যে, সমস্ত বিরোধী দল, বুদ্ধিজীবী এবং নাগরিক সমাজের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ইভিএমে ভোটগ্রহণের বিরোধিতা করেছিলেন। হাজার হাজার বুথে ইভিএমে ভোট নেওয়ার মত প্রস্তুতিও ইসির ছিল না। তাই হাতেগোনা কয়েকটি কেন্দ্র ছাড়া প্রায় অধিকাংশ কেন্দ্রেই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হয়।

॥তিন॥
ভোটের পর সারাদেশে প্রায় এককন্ঠে বলা হয় যে ৩০ তারিখের ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ২৯ তারিখ রাতেই দেয়া হয়ে গেছে। সারাদেশ যখন এই আলোচনায় মুখর তখন গত বছরের মার্চ মাসে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় নুরুল হুদা বলেন, জেলা ও উপজেলা সদর থেকে অনেক দূরে দূরে ভোট কেন্দ্র হয়। এ কারণে আগের দিন এসব কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ও ব্যালট বক্স পাঠাতে হয়। ওখানে ভোটের দিন সকালে ব্যালট পেপার ও ব্যালট বক্স নিয়ে যাওয়া যায়না। কিন্তু যদি ইভিএমে ভোটের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে আর ভোটের আগের দিন রাতে ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করার সুযোগ থাকবে না”। তিনি আরো বলেন, “যখন সমাজের মধ্যে অনিয়ম ঢোকে তখন তা প্রতিহত করতে পদক্ষেপ নিতে হয়। এ কারণে কমিশন ভাবছে, ইভিএমে ভোট নেওয়া শুরু করব”। সিইসির বক্তব্যে থলের বিড়াল বেরিয়ে এসেছে। অর্থাৎ তিনি স্বীকার করেছেন যে, দিনের ভোট রাতে হয়েছে।

এরপর সিইসি তার পদে থাকেন কিভাবে? আত্মমর্যাদা সম্পন্ন যে কোন ব্যক্তি এরপর অবিলম্বে পদত্যাগ করতেন। কিন্তু তারপরও তিনি গদি আঁকড়ে বসে আছেন। এবং আরও ১ বছর ৮ মাস পর আমেরিকাকে জ্ঞান দিচ্ছেন যে, বাংলাদেশের ইলেকশন কমিশনের নিকট থেকে নাকি আমেরিকার অনেক কিছু শেখার আছে। কি শেখার আছে? নির্বাচনে কারচুপির ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে কত মেরুদণ্ডহীনভাবে সাক্ষী গোপাল থাকতে হয় সেই বিদ্যা? সেই জ্ঞান?

॥চার॥
আমরা বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিশালতা, সেই নির্বাচন পরিচালনায় ত্রুটিহীন দক্ষতা সম্পর্কে সিইসির জ্ঞান খুব সংকীর্ণ। আমেরিকা একটি বিশাল দেশ। আয়তনে ৩৭ লক্ষ ৯৬ হাজার ৭৪২ বর্গমাইল। প্রায় ৩৮ লক্ষ। বাংলাদেশের প্রায় ৭৫ গুণ বড়। জনসংখ্যা ৩৩ কোটি। আমেরিকায় নিবন্ধিত ভোটার সংখ্যা ২৩ কোটি ৩৭ লক্ষ। এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পপুলার ভোট পড়েছে মোট ১৫ কোটি ৪৭ লক্ষ ৯১ হাজার ৭৫৪ টি। এরমধ্যে জো বাইডেন পেয়েছেন সাত কোটি ৮৭ লাখ ৩৮ হাজার ৫১ ভোট। ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ৭ কোটি ৩১ লক্ষ ৪৯ হাজার ৬৮৯ ভোট। অন্যান্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ২৮ লক্ষ ২৪ হাজার ১৪ ভোট।
উপরে যে পরিসংখ্যান দিলাম সেসব পরিসংখ্যান নুরুল হুদাকে বিবেচনায় নিতে হবে। আমেরিকার ফেডারেল নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলেছে যে, প্রতিটি ভোটই গণনা করা হয়েছে। একটি ভোটও বাদ যায়নি। তারা আরো দৃঢ়তার সাথে বলেছে যে, একটি ভোটও কারচুপি হয় নাই। এরপরেই দাম্ভিক ট্রাম্প চুপসে গেছেন। রবিবার এই কলাম লেখার শেষ পর্যায় পর্যন্ত ট্রাম্প সুপ্রিমকোর্টে কোন মামলা করেন নাই। করবেন কোত্থেকে? কারচুপি হলে তো মামলা করবেন।

নুরুল হুদা সাহেবের আরো বিবেচনায় নিতে হবে যে, করোনা ভাইরাসের ফলে এবার আমেরিকায় আগাম ভোট পড়েছে ৯ কোটি ৮০ লক্ষ। পোস্টাল ব্যালটের শর্ত ছিল, সেগুলো যে ৩ নভেম্বরের মধ্যে পোস্ট করা হয়েছে তার সমর্থনে পোস্ট অফিসের সিল ছাপ্পড় থাকতে হবে। সেসব পোস্টাল ব্যালট ৩ তারিখ থেকে শুরু করে পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে পৌঁছাতে হবে। তিন দিনের পরে এলে সেটি গ্রহনযোগ্য হবে না। ইলেকশন অফিসারকে আরো পরীক্ষা করতে হবে যে, ভোটারের সই সঠিক কিনা। একজন সাক্ষ্য দেবে যে, কথিত ভোটার সঠিক ব্যক্তি। আবার সাক্ষীর স্বাক্ষরও পরীক্ষা করা হবে যে সাক্ষী জাল কিনা।

এতসব পরীক্ষা করে তবেই কমিশনকে সিদ্ধান্ত দিতে হবে যে ভোটটি জালভোট বা ভুয়া ভোট নয়। লক্ষ্য করুন, ১৫ কোটি ৪৭ লক্ষ ভোটই কিন্তু প্রদত্ত হয়েছে ম্যানুয়ালি। ইভিএমে নয়। এই ১৫ কোটিরও বেশি ভোট পড়েছে ৫০ টি অঙ্গরাজ্য এবং ওয়াশিংটন ডিসি থেকে। এখন নুরুল হুদা বুকে হাত দিয়ে বলুন যে, ৯ কোটি ৮০ লক্ষ আগাম ভোট সহ ১৫ কোটি ৪৭ লক্ষ ভোট ম্যানুয়ালি গুনতে ডাকঘরের সিল ছাপ্পড় এবং ভোটার ও সাক্ষীর সিল ছাপ্পড় ভেরিফাই করে ৪/৫ দিনে আমেরিকার মতো অবাধ, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ভোট তিনি দিতে পারবেন কিনা? না পারলে ভবিষ্যতে এই ধরনের লুজ টক করে নিজের চেয়ার কে আর হালকা করবেন না।
Email: journalist15@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
কামাল ১৭ নভেম্বর, ২০২০, ২:০০ এএম says : 0
ওনার কথা আর শুনতে মনে চায় না
Total Reply(0)
নিয়ামুল ১৭ নভেম্বর, ২০২০, ২:০০ এএম says : 0
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কথা শুনলেই আমার মেজাজ গরম হয়ে যায়
Total Reply(0)
মিনহাজ ১৭ নভেম্বর, ২০২০, ২:০১ এএম says : 0
আল্লাহ তাকে হেদায়েত দান করুক
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন