বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বন্দর ও সামরিক ঘাঁটির দখল ক্ষমতার প্রতিফলন

রেড সি ডায়নামিক্স-২

দ্য আফ্রিকা রিপোর্ট | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

লোহিত সাগর বহুপক্ষীয় আন্তর্জাতিক চুক্তিতে পরিচালিত এবং কয়েক ডজন কৌশলগত বন্দর এবং সামরিক ঘাঁটি এর সাথে সংযুক্ত। বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ততম বাণিজ্য রুটের দীর্ঘ উপক‚লরেখার বন্দরগুলো দিয়ে তেল থেকে ছাগল পর্যন্ত সমস্ত রকমের ভোগ্যপণ্য পরিবহন করা হয় এসব বন্দরের মাধ্যমে। এগুলোর সাথে বিভিন্ন দেশের সামরিক ঘাঁটিগুলোও যুক্ত রয়েছে, যেগুলো লোহিত সাগরের কৌশলগত অবস্থানকে প্রতিরক্ষা এবং আক্রমণের কাজে ব্যবহার করে। বন্দর এবং ঘাঁটি কে বা কাদের দখলে আছে, তা অবাধ শক্তি কাঠামো, রাজনৈতিক সুবিধাবাদ এবং আর্থিক কারবারের প্রতিফলন ঘটায়, যা লোহিত সাগরের জটিল আঞ্চলিক রাজনীতির ফলাফল। বিগত কয়েক দশক ধরে আঞ্চলিক শক্তিগুলো এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জোট লোহিত সাগরে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা ও সমন্বয় সাধন করার চেষ্টা করে আসছে।

লোহিত উপক‚লে মিসরের প্রায় ২০টি বন্দর রয়েছে। এছাড়াও, দেশটির পাঁচটি পেট্রোলিয়াম, খনি এবং পর্যটন বন্দর পাশাপাশি কমপক্ষে তিনটি শিল্প ফিশিং বন্দর রয়েছে। লোহিত সাগরে অন্য তীরে সউদী আরবের ছয়টি প্রধান বাণিজ্যিক বন্দর রয়েছে। সুদানের প্রধান বন্দরটি সুদান সমুদ্র বন্দর কর্পোরেশন দ্বারা পরিচালিত। সংস্থাটি সুকিন দ্বীপে ওসিফ সি পোর্ট এবং প্রিন্স ওসমান দিগনা সি পোর্টও পরিচালনা করে, যেখানে তুরস্ক একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে স্থানটির পুনর্নির্মাণের জন্য ৯৯ বছরের ইজারা স্বাক্ষর করেছে। ম্যাসাভা বন্দরটি ইরিত্রিয়ার আমদানিকৃত পণ্যগুলির প্রধান আগমন স্থান। পোর্ট ডি জিবুতি আন্তর্জাতিক শিপিং লেনগুলোর মোড়ে অবস্থিত। চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন জিবুতি বন্দরে একটি খনিজ টার্মিনাল তৈরি করেছে যেখানে চায়না কমিউনিকেশন কন্সট্রাকশন কোম্পানির স্থানীয় লবণ সম্পদের ব্যবহারের একচেটিয়া অধিকার রয়েছে।

২০১৬ সাল থেকে সোমালিল্যান্ডের বারবেরা বন্দর পরিচালনার জন্য ডিপি ওয়ার্ল্ডের ৩০ বছরের ছাড় রয়েছে। ইথিওপিয়া বন্দর প্রকল্পটির ১৯ শতাংশের মালিক। এদিকে, গার্ড বা স্কাল্ডের মতো আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক বিমা সংস্থার মতে, ইয়েমেনের দুটি তেল রফতানি টার্মিনালসহ সাতটি অপারেশনাল বন্দর রয়েছে। তবে, ইয়েমেনের চলমান সঙ্ঘাত দেশটির উন্মুক্ত বাণিজ্যিক বন্দরের কার্যক্রমের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। উদাহরণস্বরূপ, সউদী জোট এ অঞ্চলটি দখল করার পর থেকেই ওমানের আল-মাহ্রা গভর্নোরেটের সীমান্তবর্তী শেহনের বন্দরের কৌশলগত বাণিজ্যিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ অঞ্চলে বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি তাদের কাজকর্ম সম্পর্কে সাধারণ জনগণের কাছে সীমিত তথ্য সরবরাহ করে আসছে। ইরিত্রিয়ার আসাবে আরব আমিরাতের নৌ ঘাঁটিটি ইয়েমেনে সউদী-আমিরাত সামরিক অভিযানে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে লোহিত সাগর উপকূল জুড়ে তার উপস্থিতি বাড়াতে আগ্রহী।

অন্যদিকে, পোর্ট সুদানের নৌ ঘাঁটিটি ২০১৭ সালে স্বাক্ষরিত একটি সহযোগিতার চুক্তির অংশ হিসাবে রাশিয়ান যুদ্ধজাহাজ প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। সুদানে রাশিয়ান নৌ সরবরাহ কেন্দ্র স্থাপনের জন্যও একটি চুক্তি কথা চলছে। জিবুতিতে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স (জার্মান এবং স্পেনসহ), জাপান এবং ইতালির সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। দেশটির অভ্যন্তরে স্থিতিশীলতা থাকা সত্তে¡ও, জিবুতি উপক‚লে ক্রমেই আধিপত্যবাদিদের ভিড় বাড়ছে এবং লোহিত সাগরে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ছে। ২০১৮ সালে জিবুতির নিকটবর্তী মার্কিন সামরিক বিমানগুলিতে লেজার তাক করার জন্য চীনকে অভিযুক্ত করা হয়। তুরস্ক সুদানের দ্বীপ সুকিনে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে, গণমাধ্যমরে এমন দাবি সত্তে¡ও তুর্কি কর্মকর্তারা বারবার এটি অস্বীকার করেছেন। (চলবে)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন