করোনা মহামারির কারণে দেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ কোচিং ও প্রাইভেট পড়ানো বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অথচ কিশোরগঞ্জে এই নির্দেশ অমান্য করে কিছু অর্থলোভী শিক্ষক প্রাইভেট ও কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব শিক্ষক তাদের বাসা অথবা ভাড়া করা কক্ষে ৫০ থেকে ৬০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ব্যাচ করে গাদাগাদি করে বসিয়ে এ কার্যক্রম চালাচ্ছেন। স্থানীয় ব্যক্তিরা এ নিয়ে প্রতিবাদ করলেও ওই শিক্ষকরা তা কানে তুলছেন না।
উপজেলা সদর, পৌরশহরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় অনেকটা প্রকাশ্যেই প্রাইভেট বাণিজ্য শুরু হয়েছে। আবার অনেক অর্থলোভী শিক্ষক তাদের শিক্ষার্থীদের স্কুলব্যাগ ও পোশাক ব্যবহার না করে চটের ব্যাগে পাঠ্য বই নিয়ে তাদের বাসায় প্রবেশ করিয়ে প্রধান দরজা বন্ধ করে পড়াচ্ছেন। নানা কৌশলে প্রশাসনের নজরদারি এড়িয়ে নির্ভয়ে তারা প্রাইভেট বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার গুরুদয়াল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রধান সুজিত কুমার দে, ইংরেজি প্রভাষক গৌতম রায়, মোফাজ্জল হোসেন, পদার্থ বিজ্ঞানের প্রভাষক আমিনুল হক, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক, একই বিভাগের প্রভাষক শফিকুল ইসলাম, মাসুদুল হক সরকারি মহিলা কলেজ। তিনি পড়ান কলেজ রোড এলাকার একটি বাসায়, সহকারী অধ্যাপক গুরুদয়াল সরকারি কলেজ তিনি পড়ান পৌর সভার মোড়ে, এছাড়াও পিটি আইয়ের গলি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. হুমায়ুনসহ বিভিন্ন সরকারি ও নামীদামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন এমন কিছু শিক্ষকও প্রাইভেট বাণিজ্যে মেতে উঠেছে। প্রাইভেট ও কোচিং নিষিদ্ধ করার পর বেশ কিছুদিন তারা পড়ানো বন্ধ রেখেছিলেন। কিন্তু তারা আবারও আগের মতোই প্রায় প্রকাশ্যেই প্রাইভেট বাণিজ্য শুরু করেছেন। করোনার মধ্যে কোচিং সেন্টার খোলা রাখায় ইতোমধ্যে ৪টি কোচিং সেন্টারকে জরিমানাসহ সিলগালা করা হয়েছে এবং সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কোচিং বাণিজ্য প্রতিরোধ কমিটি কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সদস্য ও পৌর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী বলেন, কোচিং বাণিজ্যের বিরুদ্ধে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। শুধু তাই নয়, করোনার কারণেও রয়েছে বিশেষ কিছু নিষেধাজ্ঞা। সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিছু শিক্ষক শপিং মল চালু করেছে। যে মলে শিক্ষাকে পণ্য হিসেবে ব্যাবহার করা হচ্ছে। এই পণ্য বিক্রেতা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ও সরকার একটি শক্ত ভূমিকা নেবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন