শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সকালটা শিশুদের বিকাল সবার

প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইখতিয়ার উদ্দিন সাগর : বইমেলায় প্রথম সাপ্তাহিক ছুটির দিন, আর তার সাথে যুক্ত হয়েছে শিশুপ্রহর। সকাল এগারটায় মেলার দুয়ার খুললেও দুপুরের পর থেকে যেন মানুষের স্রোত নামে বইমেলা প্রাঙ্গণে। মোট কথা লেখক-প্রকাশক আর পাঠকদের এ মেলায় গতকাল এসেছিল তার পরিপূর্ণ রূপ। শীতের মিষ্টি রোদে বইপ্রেমীদের উচ্ছ্বাসে বইমেলা ছিলো প্রাণবন্ত।
আনুষ্ঠানিকভাবে গতকাল মেলা কমিটি বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিশুদের অভিভাবকসহ স্বাচ্ছন্দ্যে বই কেনার সুবিধার্থে ঘোষণা করেছিল শিশুপ্রহর। তবে এ ঘোষণা ষোলোআনাই স্বার্থক। দিনের শুরুতে মেলা সত্যিই অন্য রকম ছিল খুদে পাঠকদের কারণে। বড়দের ভিড় ও ধাক্কাধাক্কি নেই। মা-বাবার হাত ধরে মনের খুশিতে শিশুদের ঘুরে বেড়ানো। বায়না ধরে দুই হাত ভর্তি করে বই কেনা। নতুন নতুন বইয়ের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার হাতছানিও পুরণ করেছেন পিতামাতা। ঝকঝকে মলাট আমন্ত্রণী আহ্বান নিয়ে উন্মুখ বসে থাকা প্রকাশকদের মুখেও হাসি ফিরেছে গতকাল।
রাজধানীরা ধানমন্ডির একটি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে অধ্যায়নরত সাদাফ মেলায় এসেছিলেন মায়ের সাথে। হাতে একগাদা বই। মেলায় কেন এসেছ জানতে চাইলে বলেন, আম্মু মেলায় নিয়ে এসেছে। অনেকগুলো বইও কিনে দিয়েছে বলে হাত উচিয়ে বই দেখালেন। একই চিত্র মোহাম্মদপুরের ব্যবসায়ী জমিরউদ্দিন তার দুই সন্তানকে নিয়ে মেলায় এসেছেন। তিনি বলেন, বইমেলা আমাদের সংস্কৃতির সাথে মিশে গেছে। শিশুদের এসব জায়গায় নিয়ে আসলে তারাও কিছুটা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যর গুরুত্ব বুঝতে পারবে। এবারই মেলার শিশু কর্নারটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মেলার বর্ধিত অংশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বরেণ্য শিশু সাহিত্যিক রোকনুজ্জামান খান দাদাভাইয়ের নামে এবারের শিশু কর্নারটি সাজানো হয়েছে। শিশু কর্নারে রয়েছে ৩৯টি শিশু প্রকাশনা সংস্থা।
বেলা এগারটা থেকে দুপুর পর্যন্ত শিশুদের কলতানে মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত থাকলেও দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই ঠিক উল্টো চিত্র। প্রতিবছরই ছুটির দিনগুলোতে প্রকাশকদের প্রত্যাশা থাকে বইপ্রেমীরা মেলায় ভির করবেন। তবে এবার প্রথম ছুটির দিনেই যেন প্রত্যাশার পারদকে ছাড়িয়ে গেছে অনেকটা। শাহবাগ থেকে দোয়েল চত্বরে তিল ধারণের ঠাই ছিলনা অনেকটা। প্রবেশ পথের আটটি গেটেই দর্শনার্থী ও পাঠকদের দীর্ঘ সারি। উদ্যানে কিংবা বাংলা একাডেমি সর্বত্রই ছিল এমন চিত্র। তবে মেলা প্রাঙ্গনে প্রতিবছর জায়গা সংকটের কারণে যে অসহনীয় পরিস্থিতির উদ্ভব হত এবার তা আর দেখা যায়নি। বইপ্রেমীরা অনেকটা ছিমছাম পরিবেশেই বইমেলায় ঘুরে বেরিয়েছেন। পছন্দের বই কিনতে তাদের তেমন বেগ পেতে হয়নি।
অমর একুশে উদ্যাপন উপলক্ষে গতকাল সকালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় শিশুকিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন শিল্পী সমরজিৎ রায়চৌধুরী। প্রতিযোগিতা ক-শাখায় ২৬৫ জন, খ-শাখায় ২২৫ জন এবং গ-শাখায় ৭২জন সর্বমোট ৫৬২জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি তারিখ প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
মূলমঞ্চের অনুষ্ঠান : বিকেল ৪ টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী : অভিধান ও ব্যাকরণ কর্মসূচি, অতীত থেকে বর্তমান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর স্বরোচিষ সরকার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন প্রফেসর হাকিম আরিফ এবং প্রফেসর মোহাম্মদ আজম। সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর আহমদ কবির।
আজকের অনুষ্ঠান : অমর একুশে উদ্যাপন উপলক্ষে শনিবার সকাল ১০ টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে শিশুকিশোর সাধারণ জ্ঞান ও উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতার প্রাথমিক বাছাই। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন খায়রুল আলম সবুজ, প্রফেসর মোহাম্মদ সেলিম এবং অপরেশ কুমার ব্যানার্জী।
এয়াড়াও বিকেল ৪:০০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী : ফোকলোর কর্মসূচি, অতীত থেকে বর্তমান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ড. ফিরোজ মাহমুদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন অসীমানন্দ গঙ্গোপাধ্যায়, শাহিদা খাতুন, নন্দলাল শর্মা এবং সাইফুদ্দীন চৌধুরী। সভাপতিত্ব করবেন প্রফেসর শামসুজ্জামান খান। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন