মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

করোনা নিয়েই উন্মুক্ত প্রোগ্রামে স্বেচ্ছাসেবক দল সাধারণ সম্পাদক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০২০, ৫:০৫ এএম

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যেখানে ঘরের বাইরে বের হতে বারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও চিকিৎসকরা, সেখানে উন্মুক্ত সভায় অংশ নিয়েছেন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূইয়া জুয়েল। শুধু অংশগ্রহণই নয়, আসন গ্রহণ করেছেন মঞ্চে, দিয়েছেন বক্তব্য, নেতাকর্মীদের সাথে মিলিয়েছেন হাত, অনুষ্ঠানে থাকা অর্ধশত শিশুদের নিয়ে কেটেছেন কেক, বিতরণ করেছেন শীতবস্ত্রও। অনুষ্ঠান চলাকালে বিষয়টি অনেকের অজানা থাকলেও অনুষ্ঠান শেষে বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতা হওয়ার কারণে প্রকাশ্যে সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে কেউ কথা না বললেও ঘনিষ্টজনদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

জানা যায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৬তম জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার (২০ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট বার অডিটোরিয়ামে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে দুঃস্থ ও গরীব শিশুদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণসহ রান্না করা খাবার বিতরণ এবং ৫৬ পাউন্ড কেক কাটা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিশেষ অতিথি ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু।

স্বেচ্ছাসেবক দলের অনুষ্ঠান হওয়াতে সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূইয়া জুয়েল।

স্বেচ্ছাসেবক দল সূত্রে জানা যায়, গত ১ নভেম্বর আবদুল কাদির ভূইয়া জুয়েল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি টেস্টের ফলাফল পজিটিভ পাওয়ার পর তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে তা তুলে ধরে সকলের দোয়া চান। তখন থেকেই তিনি বাসাতে আইসোলেশনে ছিলেন। পরবর্তীতে গত ১৭ নভেম্বর জুয়েল আবারও করোনাভাইরাস টেস্ট করান। তার ফলাফল ১৮ তারিখ হাতে পান। দ্বিতীয় টেস্টেও তার করোনা পজিটিভ আসে। ওই দিনই তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের কুমিল্লা বিভাগীয় টিমের একটি ভার্চুয়াল মিটিংয়ে জানান তিনি আবারও করোনা পজিটিভ হয়েছেন। এর ঠিক দুইদিন পর শুক্রবার তারেক রহমানের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েও অংশ নিয়েছেন জুয়েল।

বিষয়টি নিয়ে অনুষ্ঠান শেষে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। যেহেতু জুয়েল সংগঠনটির অন্যতম শীর্ষ নেতা তাই প্রকাশে বিষয়টি নিয়ে কথাও তুলেননি। তবে অনুষ্ঠান শেষে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে এমন নেতারা একে অপরের কাছে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহ-সভাপতি বলেন, করোনা পজিটিভ হওয়ার পরও কিভাবে তিনি এমন উন্মুক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলেন তা আমাদের হতবাক করেছে। শুধু কি অনুষ্ঠানে এসেছেন? তিনি অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন, বক্তব্য দিয়েছেন, যারাই এসেছে প্রত্যেকের সাথে হ্যান্ডশ্যাক করেছেন, ছোট ছোট বাচ্চারা প্রায় অর্ধশতাধিক ছিল তাদের সাথেসহ সবার সাথে মিলে কেক কেটেছেন এবং শিশুদের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দিয়েছেন।

আবদুল কাদির ভূইয়া জুয়েলের ঘনিষ্ঠ একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা মনে করেছিলাম করোনা পজিটিভ হওয়ায় তিনি আসবেন না। কিন্তু হঠাৎ দেখি তিনি হাজির। আমরা যারা বিষয়টি (করোনা পজিটিভ) জানি তারা সবাই হতবাক। যেহেতু সাধারণ সম্পাদক তাই বিষয়টি নিয়ে কেউ কথা তুলেনি। তবে এর মাধ্যমে সকলকেই ঝুঁকিতে ফেলে দেয়া হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এক নেতা বলেন, আমি আগে থেকে বিষয়টি জানতাম না। কিন্তু প্রোগ্রাম শেষে শোনার পর কি বলবো নির্বাক হয়ে গেছি। একজন শীর্ষ নেতার কাছ থেকে এটি আশা করিনি। তিনি জানান, বাসায় ফিরে তিনি পরিবার থেকে আলাদা থাকা শুরু করেছেন।

বিষয়টি জানতে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূইয়া জুয়েলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সত্যতা স্বীকার করেন। জুয়েল জানান, ১৭ তারিখ টেস্টের পর ১৮ তারিখ তার পজিটিভ আসে। তবে শারীরিক দুর্বলতা ছাড়া অন্য কোন উপসর্গ নেই। এছাড়া চিকিৎসক তাকে জানিয়েছে তার মাধ্যমে এখন আর কেউ আক্রান্ত হবেন না।

সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিবের শ্যালক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তিনি আইসোলেশনে রয়েছেন। যদিও তার মধ্যে কোন উপসর্গ নেই। কিন্তু নিজের পরিবারের সদস্য আক্রান্ত হওয়াতে তিনি সচেতন নাগরিক হিসেবে নিজেই কোয়ারেন্টাইনে চলে যান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন