বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

শিকলে বাঁধা রিতার জীবন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

২৫ বছর বয়সী রিতার কোমরে শিকলের বাঁধা। শিকলটিও আবার একটি মেহগনি গাছের সঙ্গে তালাবদ্ধ। এরপরও পরিবারের সবাই সব সময় সতর্ক। কখন কী হয়ে যায়। এভাবেই দীর্ঘ ৯ বছর ধরে শিকলবন্দি দিন কাটছে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রিতার জীবন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে নির্বাচনী পরীক্ষা দেয়। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন সবকিছু ওলট-পালট হয়ে যায়। সবার আদরের মেয়ে এক সময় যেন পরিবারের বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। তার কোমরে পরানো হয় লোহার শিকল। মানসিক ভারসাম্য হারানোর পর ৯ বছর ধরেই এমন দুঃসহ জীবন কাটছে মেয়েটির।
সরেজমিনে দেখা যায়, রিতা তার বাড়ির পাশে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে বানানো মাচায় বসে আছে। কোমরে শিকলের সঙ্গে তালা। শিকলের আরেক দিক একটি মেহগনি গাছের সঙ্গে তালাবদ্ধ। সাংবাদিক যাওয়ার পর এলাকার মানুষ জড়ো হয় সেখানে। মানুষ দেখে বিরক্ত হয়ে ঘুরিয়ে নেয় মুখ। রিতার বাবা আলাউদ্দিন দেওয়ান ও মা মেহের বানু জানান, ২০১২ সালে কার্তিকপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল রিতার। নির্বাচনী পরীক্ষায় সে উত্তীর্ণও হয়। হঠাৎ জ্বর; এরপরই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে রিতা।
রিতার চাচা মো. সোহরাব দেওয়ান (৪৫) জানান, অসহায় পরিবারে জন্ম রিতার। টাকার অভাবে মেয়েটির চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। এখনো সঠিকভাবে চিকিৎসা করাতে পারলে ভালো হয়ে উঠতে পারে সে।
রিতার ভাই অন্তর দেওয়ান (২১) বলেন, শিকলে বেঁধে রাখতে হয় রিতা আপাকে। বেঁধে না রাখলে মানুষকে মারধর করে। বাড়ি ছেড়ে চলে চায়। যদি কখনো টাকা জোগাড় করতে পারি তাহলে বোনের চিকিৎসা করাবো।
শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন ডা. এস এম আব্দুল্লাহ আল মুরাদ বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে সরকারি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে মেয়েটি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে। তিনি বলেন, রিতার পরিবারের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করবো, দেখি কি করা যায়। নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর আল নাসীফ বলেন, তার চিকিৎসার জন্য সমাজসেবা কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন