লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে গণপিটুনি দিয়ে আবু ইউনুস মো. শহিদুন্নবী জুয়েলকে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর ঘটনায় দায়ের করা তিন মামলায় রাসেল ইসলাম রাজ ওরফে বিশুর (২২) পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ নিয়ে ১৩ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হলো। এদিকে গত শনিবার রাতে আরো একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । রবিবার দুপুরে আমলি আদালত-৩ এর বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌসী বেগম এ রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। এর আগে শুক্রবার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার রাসেল রাজকে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পরিদর্শক মাহমুদুন্নবী। রিমান্ডের আদেশপ্রাপ্ত রাসেল রাজ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের জুম্মাপাড়া এলাকার হামিদুল ইসলামের ছেলে। এদিকে গত শনিবার রাতে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের বামনদল এলাকার পরমদ্দিনের ছেলে আবু কালাম ওরফে গামছা কালামকে (২৯) গ্রেফতার করে পুলিশ। গতকাল রোববার বিকেলে কালামকে একই আদালতে সোপর্দ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পরিদর্শক মাহমুদুন্নবী।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, শহিদুন্নবী জুয়েল হত্যা মামলায় দায়ের করা তিন মামলার অজ্ঞাত নামীয় আসামি রাসেল রাজকে গত বৃহস্পতিবার রাতে পাটগ্রাম কলেজ মোড় এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
দায়ের করা তিনটি মামলায় তদন্তে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় রাসেলকে গ্রেফতার করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার রাসেল রাজকে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদনের পাঁচ দিনই মঞ্জুর করেছেন আদালত।
এছাড়াও গত শনিবার রাতে গ্রেফতার কালামকে বিকেলে আদালতে সোপর্দ করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। এ নিয়ে আলোচিত এ ঘটনার ৩ মামলায় মোট ৩৬ জনকে গ্রেফতার করা হলো। যার মধ্যে ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এর মধ্যে প্রধান আসামি বুড়িমারী ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি আবুল হোসেন ওরফে হোসেন ডেকোরেটর এবং মসজিদের খাদেম জোবেদ আলীসহ চারজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও জানান ওসি ওমর ফারুক।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর রাতে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক শহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রিপাড়ার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক ছাত্র। গত বছর চাকরিচ্যুত হওয়ায় কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন