নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মঠেরঘাট এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী তীরে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ঘাট এখন মাদক ব্যবসায়ী ও জুয়াড়িদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ঘাটটি সময়মতো উদ্বোধন না করায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এখানে বসে মাদক ও জুয়ার আসর।
উপজেলা তথ্য সূত্রে জানা যায়, মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মঠেরঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদী পথের বিভিন্ন মালামাল লোড আনলোডের জন্য ১ কোটি ৭৪ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৮ টাকা ব্যয়ে ঘাটটি নির্মাণ করা হয়। ঘাট নির্মাণের দরপত্র পান মেসার্স আজমত এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি ঘাট নির্মাণের কাজ শেষ হয়। কিন্তু নির্মাণের ২০ মাস পেরিয়ে গেলেও ঘাটটি এখনো উদ্বোধন হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণের ২০ মাস পেরিয়ে গেলেও ঘাটটি চালু না করায় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অবহেলা ও অযত্নে ঘাটটি নষ্ট হচ্ছে। ঘাটের বেশ কয়েকটি অংশের সিমেন্টের পলেস্তরা উঠে গেছে। ঘাটের সিড়িগুলোর বিভিন্ন স্থানে এবরোথেবরো হয়ে আছে। সিড়ির হাতলের বেশকিছু অংশ বাঁকা হয়ে গেছে ও কিছু অংশে মরিচা পড়েছে। এছাড়া ঘাটের যাত্রী ছাউনিতে বসে স্কুল পড়–য়া শিক্ষার্থী ও মাদক সেবীরা মাদক সেবন করছে বলেও দেখা গেছে। ঘাটের পাশে কয়েকটি ঝোঁপে রিকশাওয়ালা ও স্থানীয়রা মিলে জমিয়ে তোলেন মাদক ও জুয়ার আসর। এ আসর চলে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়েই।
স্থানীয়রা জানান, ঘাটটি চালু না হওয়ায় এখানে সাধারণ মানুষের আনাগোনা খুবই কম থাকে। সাধারণ মানুষ না আসায় ঘাটটি মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী ও জুয়াড়িদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাদক সেবীরা মাদক সেবন করে। এছাড়াও দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ঘাটের পাশে কয়েকটি ঝোপে বসে রমরমা জুয়ার আসর। প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে এ ধরনের অপরাধ যজ্ঞ। এছাড়া ঘাটটি সুনশান হওয়ায় স্থানীয় প্রভাবশালীরা অনেকেই জাহাজের চোরাই তেল লোড আনলোড করেন।
আব্দুস সোবহান নামে এক ব্যক্তি বলেন, ঘাটটি নির্মাণের পর উদ্বোধন না হওয়ায় এখানে অপরাধীদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। ঘাটের এলাকাটি নিরব হওয়ায় এখানে সচরাচর কোন লোকজন যায় না। এখানে নির্বিঘেœ মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক বিক্রি করতে পারেন। আর মাদক সেবীরাও এখানে মাদক সেবন করতে পারছেন। ঘাটটি চালু হলে এ জায়গাটি লোকারণ্য হলে মাদক ও জুয়ার আসর থাকবে না। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী এনায়েত কবিরের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি তার ব্যবহৃত ফোনটি রিসিভ করেনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ্ নূসরাত জাহান বলেন, ঘাটে বসে মাদক সেবন ও জুয়া খেলার বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। বিষয়টি যেহেতু জেনেছি এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন