শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশে ভ্যাকসিনের দাম কত হবে?

ভারতে মূল্য হাজার রুপি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

সব কিছু ঠিক থাকলে জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে সিরাম ইন্সটিটিউট থেকে করোনাভাইরাসের এই টিকাটি বাংলাদেশ পাবে বলে আশা করছে।
গতকাল বিবিসির এক খবরে বলা হয় সরকারি পর্যায়ে ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট থেকে বাংলাদেশের সরকার পাঁচ ডলার বা চারশো টাকা কিছু বেশি দরে টিকাটি কিনবে। তবে বেসরকারি পর্যায়ে এই টিকাটি কিনতে হবে আট ডলার বা প্রায় সাতশো টাকা করে। গ্রাহক পর্যায়ে দাম আরো কিছুটা বাড়তে পারে। বাংলাদেশে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনাভাইরাসের টিকাটির ভারতের উৎপাদনের দায়িত্ব পেয়েছে সিরাম ইন্সটিটিউট। তাদের (ভারত) কাছ থেকে বাংলাদেশের বেসরকারি ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস টিকাটি আমদানি করে সরবরাহ করবে।
সিরাম ইন্সটিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদার সি পুনাওয়ালা গত সোমবার রাতে একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানের সাক্ষাৎকারে প্রথমবারের মতো বলেছেন, তাদের উৎপাদিত কোভিশিল্ড নামের টিকাটির একটি সিঙ্গেল ডোজ খোলা বাজারে এক হাজার রুপিতে (প্রায় ১৪ ডলার) বিক্রি করা হবে। তবে তিনি জানিয়েছেন, তাদের মোট উৎপাদিত টিকার ৯০ শতাংশই ভারত সরকার কিনে নেবে। ভারত সরকারের কাছে তারা ২৫০ রুপি (চার ডলারের কিছু কম) করে টিকাটি সরবরাহ করবে।
মোট দুইটি ইউনিট মিলে একেকটি সিঙ্গেল ডোজ হয়। জানুয়ারির মধ্যে তারা ১০ কোটি (১০০ মিলিয়ন) ডোজ তৈরি করতে পারবে বলে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে। তবে সিরাম ইন্সটিটিউটের এই টিকাটির এখনো সরকারি অনুমোদন পাওয়ার বাকী রয়েছে।
বাংলাদেশের বেক্সিমকোর কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২১ সালের জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রæয়ারির প্রথম দিকে সিরাম ইন্সটিটিউট থেকে করোনাভাইরাসের এই টিকাটি বাংলাদেশ পাবে বলে আশা করছে। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা রাব্বুর রেজা বিবিসি বাংলাকে বলছেন, সিরাম ইন্সটিটিউটের টিকাটির কার্যক্রম এখন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তাদের টিকাটি ভারতের কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেতে হবে। তবে সেটা হলেই আমাদের চলবে না, আমাদের এখানে আনতে হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা এফডিএ-র মতো সংস্থার অনুমোদন পেতে হবে। সব মিলিয়ে সেটা পেতে হয়তো জানুয়ারি পর্যন্ত সময় লেগে যাবে বলে ধারণা করছি। তিনি জানান, সিরাম ইন্সটিটিউটের সঙ্গে সমঝোতা অনুযায়ী, বাংলাদেশ সরকারের জন্য আপাতত ৩ কোটি টিকা কেনা হবে। তবে বেসরকারি খাতের জন্য তারা এক মিলিয়ন বা দশ লক্ষ টিকার চাহিদা জানিয়েছেন। সব টিকাই আনা হবে বেক্সিমোর মাধ্যমেই। তবে সরকারি টিকা সব একবারে আনবে না। প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে টিকা বাংলাদেশে আসবে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ আরো টিকা আনার চেষ্টা করবে বলে তিনি জানান। ভবিষ্যতে বাংলাদেশও টিকাটি তৈরির চেষ্টা করবে বলে তিনি জানান।
বেসরকারি টিকার দাম বেশি হবে : রাব্বুর রেজা বলছেন, সিরাম ইন্সটিটিউটের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, তাতে বাংলাদেশ সরকারের জন্য আমদানি করা টিকার প্রতি ডোজের দাম পড়বে পাঁচ ডলার বা ৪২৫ টাকার মতো। সেটা সরকারিভাবে বিতরণ করা হবে। তবে তারা যদি ভারতীয় সরকারকে কম দামে দেয়, তাহলে আমাদেরও সেই দামেই দেবে। সেইরকম একটা প্রটেকশন রয়েছে। সেক্ষেত্রে দাম কিছুটা কমতেও পারে। সরকার এক্ষেত্রে বাড়তি কোন দাম নির্ধারণ করবে কিনা, তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে বেসরকারি খাতের জন্য যে ১০ লক্ষ টিকা আনা হবে, সেটার দাম পড়বে আট ডলার করে। কিন্তু সেখানে পরিবহন খরচ, সরকারি নীতি অনুযায়ী অন্যান্য খরচ মিলিয়ে দাম নির্ধারিত করা হবে। ফলে ক্রেতাদের কাছে কিছুটা বেশি পড়তে পারে।
বাংলাদেশে ১৬ কোটির বেশি মানুষের জন্য করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন বা টিকা কেনার জন্য বিপুল অঙ্কের অর্থের যোগান এখনও নিশ্চিত হয়নি বলে জানা গেছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার কাছে বাংলাদেশ অর্থ সহায়তা চেয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে নিজস্ব অর্থে দেড় হাজার কোটি টাকা নিয়ে ভ্যাকসিন কেনার দৌড়ে থাকার কথা বলা হচ্ছে।
বাংলাদেশের কর্মকর্তারা আগেই জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে সামনের সারিতে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী, বয়স্ক ব্যক্তিরা আগে টিকা পাবেন। পর্যায়ক্রমে অন্য সবাইকে এই টিকা দেয়া হবে। তবে কীভাবে সরকারি টিকার বিতরণ হবে, তার কোন গাইডলাইন এখনো তৈরি করা হয়নি। তবে বেসরকারি খাতের টিকার বিতরণের বিষয়টি এখনো চ‚ড়ান্ত হয়নি।
রাব্বুর রেজা বলছেন, বেসরকারি খাতেও যাদের সামনের সারিতে কাজ করতে হয়, এই টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তাদের আমরা অগ্রাধিকার দেব। কারণ দেশের অর্থনীতি চালু রাখতে হলে আরো অনেক খাতের কর্মীদেরও টিকাটি পাওয়া দরকার। তাই আমরা বেসরকারি খাতে এরকম সামনের সারিতে থাকা কর্মীদের জন্য টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বেসরকারিভাবে কিছু টিকা আনছি।
সেটা পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে পারে, যেখানে কোভিড-১৯ টেস্টের মতো আগে তালিকাভুক্ত করে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা হতে পারে বলে কর্মকর্তারা আভাস দিচ্ছেন। তবে আপাতত এই টিকা খোলা বাজারে বা ফার্মেসিতে পাওয়া যাবে না বলেই তারা নিশ্চিত করছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Mimi Ashrifa Momo ২৫ নভেম্বর, ২০২০, ২:৫৫ এএম says : 0
দেশের হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। এখন সরকারের হাতে ভ্যক্সিন কেনার টাকা নেই।
Total Reply(0)
Md. Selim Hossain ২৫ নভেম্বর, ২০২০, ২:৫৫ এএম says : 0
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন নিয়ে এতো মাতামাতি অথচ বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেক কে পূর্ন সহযোগিতা করলে হয়তো অনেক দ্রুত রেজাল্ট পাওয়া সম্ভব ছিল। বর্তমানে তো সব কিছু চেতনার মধ্য আবদ্ধ হয়ে আকাশ ভরা তারা হয়ে গেছে।
Total Reply(0)
Arif Hossain ২৫ নভেম্বর, ২০২০, ২:৫৬ এএম says : 0
যেকোন ভেজাল,দূর্নীতি এড়তে সরকারের উচিত বিপননের ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সুনির্দিষ্ট দাম নির্নয় করে দেওয়া। এতে করে কর্তৃপক্ষ এবং ভোক্তা উভয় সুবিধা পাবে!!
Total Reply(0)
Arpon ২৫ নভেম্বর, ২০২০, ২:৫৬ এএম says : 0
ভারতের ভ্যাকসিন বাংলাদেশের কেউ ব্যবহার করবে না। কারন মেজোরিটি মানুষের মনে সন্দেহ থাকবে যদি গো-মূত্র ঢুকিয়ে দেয় কি না!!
Total Reply(0)
Kaushik Sarkar ২৫ নভেম্বর, ২০২০, ২:৫৭ এএম says : 0
হঠাৎ করে ভারতের ভ‍্যাকসিন নিয়ে এতো আলোচনা কেন ? বাংলাদেশে তো চীন বা তুরস্কের ভ‍্যাকসিন নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিৎ ! কারণ, বাংলাদেশের বেশী মানুষ ভারতীয় পন্যকে ঘৃণা বা অপছন্দ করে, অবশ্য তারা একপ্রকার নিরুপায় হয়েই সেই ভারতীয় পন্য ব‍্যবহার করতে বাধ্য হয় !
Total Reply(0)
Omar Faruque ২৫ নভেম্বর, ২০২০, ২:৫৭ এএম says : 0
উন্নত দেশগুলোর উচিত টাকা সাহায্য না করে টীকা সাহায্য দেওয়া। না হলে অনুন্নত দেশগুলো দুর্নীতি করে শেষ করবে।
Total Reply(0)
asif ২৫ নভেম্বর, ২০২০, ৩:৪৩ পিএম says : 0
Eto bharat nirbhorota keno, bharatio tika use korar thake corona te more jawa bhalo... bangladesh er biggyani ra opodartho ekbare..
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন