শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সাত দেশের ৩০ জন লাপাত্তা

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলার তদন্ত থমকে গেছে। তথ্য না পাওয়ায় জড়িতদের শনাক্ত করে চার্জশীট দাখিল করতে পারছেন না তদন্ত সংশ্লিষ্ট সিআইডির কর্মকর্তারা। যে কারণে তদন্তের সমাপ্তি টানতে পারছে না সিআইডি। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পর ৫ বছর পার হতে চলেছে। সাতটি দেশের ৩০ জন অভিযুক্ত লাপাত্তা বলে অভিযোগ তদন্তের সাথে জড়িত কর্মকর্তাদের।

তদন্ত সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, অন্যান্য যেসব দেশের অপরাধীরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের কাছে তথ্য চেয়েও আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছেন না তারা। এ পর্যন্ত মাত্র ফিলিপাইন ছাড়া আর কোনো দেশই তথ্য সরবরাহ করেনি। ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রায় ১০১ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। যার সঙ্গে জড়িত দেশি-বিদেশি অনেক দুর্বৃত্ত। রিজার্ভ চুরির বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে মানি লন্ডারিং আইনে ওই বছরের ১৫ মার্চ (২০১৬) মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা মানি লন্ডারিং আইনে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরির অভিযোগ এনে এই মামলা করেন। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুরু থেকেই মামলাটির তদন্ত করে আসছে সিআইডি। রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দেশের ভেতরের লোকজন ছাড়াও বাইরের কয়েকটি দেশের ৩০ জনেরও বেশি দুর্বৃত্তকে শনাক্ত করেছে সিআইডি। এসব ব্যক্তির তথ্য পেতে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে চিঠি চালাচালি হচ্ছে। তবে ফিলিপাইন ছাড়া আরও কোনও দেশ এখনও এসব অপরাধীর তথ্য সরবরাহ করেনি। ফিলিপাইন ছাড়াও হংকং, ম্যাকাও, চীন, শ্রীলঙ্কা, মিসর, সিঙ্গাপুর ও জাপানের অপরাধীরা জড়িত এই রিজার্ভ চুরির সঙ্গে। সেসব অপরাধীর তথ্য পেতে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। এসব বিদেশি অপরাধীর তথ্য কবে নাগাদ হাতে পাবে সিআইডি, সেটাও সঠিকভাবে বলতে পারেননি তারা। ফলে তারা তদন্তের সমাপ্তিও টানতে পারছেন না।

সিআইডির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, এ মামলার তদন্তের বিষয়ে আদালতকে নিয়মিত অবহিত করতে হয় তদন্ত সংস্থাকে। মামলা দায়েরের পর থেকে এ পর্যন্ত ৪৪ বার আদালতকে তদন্ত শেষ না হওয়ার বিষয়টি অবহিত করেছে সিআইডি। আগামী ৬ ডিসেম্বর এ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য সিএমএম আদালতে দিন ধার্য রয়েছে।

রিজার্ভ চুরি মামলার তদারক কর্মকর্তা সিআইডির অর্গানাইজড ও ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মো. মোস্তফা কামাল বলেন, এ মামলা খুব জটিল। কবে নাগাদ শেষ হবে বলা যাচ্ছে না। তবে কয়েকদিন আগে এ মামলার অগ্রগতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। যে বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। আবারও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কাছে তথ্য চেয়ে তাগাদা দিয়ে চিঠি পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। সিআইডির পক্ষ থেকে সেটি এরইমধ্যে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

তিনি আরো জানান, রিজার্ভ চুরির এই ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশ ছাড়াও আরও আটটি দেশের লোকজন জড়িত। ফিলিপাইন ছাড়া এখন পর্যন্ত আর কেউ তথ্য দেয়নি। অন্যরা তথ্য না দিলে কীভাবে তদন্ত শেষ করা সম্ভব? তাদের তথ্যগুলো পেলেই আমরা এ মামলার তদন্তের ইতি টানতে পারব।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে সুইফট কোডের মাধ্যমে ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রায় ১০১ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। এরমধ্যে দুই কোটি ডলার চলে যায় শ্রীলঙ্কায় এবং আট কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
কিরন ২৫ নভেম্বর, ২০২০, ৩:১৫ এএম says : 0
কিছু বলার নেই
Total Reply(1)
Sayed, Freedom Fighter ২৫ নভেম্বর, ২০২০, ৪:৪১ এএম says : 0
Yes, these political economic elits will always remain out of reach because they are from a social stage where the general people have no access. And those who will try to catch them, they are also from the same group.

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন