শরীয়তপুরের ডামুড্যায় এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ ও ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলায় তিন আসামিকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আ. ছালাম খান। দন্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার কথাও উল্লেখ রয়েছে আদেশে। একই মামলায় অপর ৯ আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে আসামিদের উপস্থিতিতে এই আদেশ দেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জেলার গোসাইরহাট উপজেলার মধ্য কোদালপুর গ্রামের লুৎফর খবিরের ছেলে মো. মোরশেদ উকিল, ডামুড্যা উপজেলার চর ঘরোয়া গ্রামের খোরশেদ মুতাইতের ছেলে আব্দুল হক মুতাইত ও দাইমী চরভয়রা গ্রামের মজিদ মুতাইতের ছেলে জাকির হোসেন মুতাইত।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, গত বছরের ২০ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে ডামুড্যা উপজেলার চরভয়রা উকিলপাড়া গ্রামের খোকন উকিলের স্ত্রী হাওয়া বেগম পাশের বাড়িতে মোবাইল চার্জ দিতে যায়। ওই রাতে দন্ডপ্রাপ্ত আসামি মোর্শেদ, আব্দুল হক ও জাকির হোসেনসহ অন্যান্য আসামিরা হাওয়া বেগমকে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। পরে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে মজিবর চোকদারের দোচালা টিনের ঘরে লাশ ফেলে যায়। এই ঘটনায় হাওয়া বেগমের স্বামী খোকন উকিল বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করে। তদন্ত শেষে ডামুড্যা থানা পুলিশ ১২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ওই বছরের ৭ অক্টোবর সকল আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করে বিচার কার্যক্রম শুরু করে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের (পিপি) অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ বলেন, এই বিষয়ে প্রথমে একটি হত্যা মামলা হয়। পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা গণধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। পরবর্তীতে অন্যান্য আসামিরাও ভিকটিমকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ভিকটিম ধর্ষণের কথা প্রকাশ করে দিবে বলে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে। আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার দায় ও অন্যান্য আসামিদের সম্পৃক্ততা উল্লেখ রয়েছে। ১২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদালত এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। আদালতের এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি।
অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল আউয়ালসহ অন্যান্য আইনজীবীরা জানান, তারা রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন