শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ইকোনমিক জোন উচ্ছেদের সুপারিশ

বুড়িগঙ্গা-তুরাগে আসলামের স্থাপনা অবৈধ : নদী রক্ষা কমিশন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদের প্রায় দেড়শ বিঘা জমি অবৈধভাবে দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে মাইশা পাওয়ার প্ল্যান্ট ও আরিশা ইকোনমিক জোন। এই প্রতিষ্ঠান দুটির মালিক ঢাকা-১৪ আসনের এমপি আসলামুল হক। আর উচ্ছেদের খরচ আদায় করতে বলা হয়েছে আসলামুল হকের কাছ থেকে। প্রতিষ্ঠান দুটির বৈধতা নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট আটটি সংস্থার সুপারিশ নিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছে নদীরক্ষা কমিশন। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। ডিজিটাল পদ্ধতিতে মাপজোক করায় প্রতিবেদনে ভুল হওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে নদী কমিশন।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, নদীর জায়গা দখল করে অবৈধভাবে গড়ে তোলা স্থাপনা উচ্ছেদ করে স্থায়ী সীমানা খুঁটি স্থাপন করা হবে। যৌথ জরিপে বলা হয়, অতিদ্রুত দখলদার নিজে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নদীর জায়গা ফিরিয়ে না দিলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সব গুঁড়িয়ে দিতে বলা হয়েছে। যার সব ব্যয়ভার দখলদারকে বহন করতে হবে।

এদিকে নদী দখল করে গড়ে তোলা মাইশা পাওয়ার প্ল্যান্ট ও আরিশা ইকোনমিক জোনের নামের প্রতিষ্ঠান দুটির কারণে নদীর ৫৪ একর জায়গা এখন মৃত। কয়েক বছর আগেও যেখানে বুড়িগঙ্গা ও তুরাগের পানি বহমান ছিল, আজ যে জায়গা থেকে বোঝার উপায় নেই যে, এটি নদীর জায়গা। তবে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার সুপারিশে বের হয়ে এসেছে মূল তথ্য।

গত ৩ মার্চ বুড়িগঙ্গা নদীর ওয়াসপুর অংশে নদী দখল করে গড়ে তোলা আসলামুল হকের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে অভিযানে যায় বিআইডব্লিউটিএ। অভিযানের শুরুতেই বাধার মুখে পড়তে হয় সংস্থাটিকে। এসময় সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অপরাধে মাইশা গ্রæপের সমন্বয়ক মোস্তাফিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এমপি আসলামুল হক বলেছিলেন, আদালত এবং নদী কমিশন যে যৌথ জরিপ করেছে তাতে আমার স্থাপনা অবৈধ হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই। আমি আইনে যাব। আমি কি এভাবে ছেড়ে দেবো নাকি? আপনি অন্যায়ভাবে ভাঙবেন, এই ধরনের স্থাপনা ভেঙে দেবেন। আমাকে নোটিশ করবেন না? আমি তো বিআইডবিøউটিএ’র অনুমতি নিয়েই করেছি। অভিযানটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাবীবুর রহমান হাকীম। তিনি জানিয়েছিলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটির উত্তর পশ্চিমে ২৫০ ফুট ও দক্ষিণ পশ্চিমে এক হাজার ফুট জায়গাসহ মোট পাঁচ একর জায়গা উদ্ধারে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরপর বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা জায়গাটি তার নিজের জমি দাবি করে উচ্চ আদালতের তিনটি বেঞ্চে শরণাপন্ন হন এমপি আসলামুল হক। পরে আদালতের নির্দেশে সরকারি আটটি সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে প্রায় তিন মাস পর তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে নদীরক্ষা কমিশন। তদন্ত প্রতিবেদন বলা হয়েছে, মাইশা পাওয়ার প্ল্যান্ট ও আরিশা ইকোনমিক জোনের নাম দিয়ে দখলকৃত জায়গাটি নদীর অংশ ও তীরভূমি। এরমধ্যে প্রায় ১৩ একর জায়গা পুরোপুরি নদীর জায়গা আর প্রায় আট একর নদীর তীরভূমি ও বন্দরসীমা। বাকি অংশ ড্যাপের আওতাভুক্ত বন্যাপ্রবণ এলাকা। নদীর জায়গা দখলের পাশাপাশি পাওয়ার প্ল্যান্ট ও ইকোনমিক জোন দেখিয়ে ঢাকার এই এমপি ব্যাংক থেকে বড় অংকের ঋণ নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন