মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী জীবন

মানবীয় মূল্যবোধ ও টেকসই উন্নয়নের প্রধান উদ্দেশ্য

মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

উৎপাদনশীল সম্পদের দীর্ঘস্থায়ী টেকসহিতা চ্যালেঞ্জার সমাধানসহ কৌশলপিেত্র বিবৃত রুপকল্প অর্জনের জন্য এন এসডিএস (২০১০-২০২১) তিনটি পারস্পরিভাবে সম্পৃক্ত ক্ষেত্রসহ পাঁচটি কৌশলগত অগ্রাধিকার ক্ষেত্র চিহ্নিত করে। কৌশলগত অগ্রাধিকার প্রাপ্ত ক্ষেত্রগুলোতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে অব্যহত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অগ্রাধিকার মূলক খতগুলোর উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষা, পরিবেশ, প্রাকৃতিক সম্পদ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা। যে তিনটি পারস্পরিকভাবে যুক্ত বিষয়াবলি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত এলাকাগুলো টেকসই উন্নয়নে সহায়তা দান করবে সেগুলো হলো, দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, ও জলাবায়ূ, সুশাসন এবং জেন্ডার। কৌশলগত বাস্তবায়নের অগ্রগতি পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য শীর্ষ সংস্থা হিসেবে কাজ করবে টেকসই উন্নয়ন পরিবীক্ষণ পরিষদ (এসডিএমসি)।
অব্যাহত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঃ পরিবেশগত টেকসহিত্বের প্রশ্নে কোন আপস ছাড়াই মধ্যম আয়ের মর্যাদায় অর্থনীতির রুপান্তরসহ উন্নতর জীবন মান দ্রুত দারিদ্র্য নিরসন ও কর্মসৃজন নিশ্চিত করার জন্য ত্বরান্বিত প্রবৃদ্ধিতে প্রধান উন্নয়ন কৌশল হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।
অবকাঠামো কর্মসূচি, মানব সম্পদ উন্নয়ন, গবেষনা ও উন্নযন এবং তথ্য প্রযুুক্তিতে সরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে এবং বিনিয়োগ প্রণোদনা বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নসহ পিপিপি প্রবর্ধনে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগকে উৎসাহিত করে, শিক্ষা ও দক্ষতা শিক্ষণের মানসহ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ও বহুমুখীকরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বৈদেশিক কর্ম সংস্থানের প্রসার, জাতীয় ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং সবুজ প্রবৃদ্ধি প্রবর্ধনের মাধ্যমে অব্যাহত ও ত্বরান্বিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব।
অগ্রাধিকারমূলক খাত সমূহের উন্নয়ন ঃ দেশের টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকারমূলক খাতসমূহের মধ্যে রয়েছে, কৃষি শিল্প, জ্বালানি, পরিবহন ও মানব সম্পদ উন্নয়ন। এ খাতগুলোর জন্য সুপারিশকৃত কৌশল অর্থনীতিকে সঠিক নির্দেশনা দানের উপর জোর দেয়া হয়েছে, কেননা এ খাতগুলোই আগামীতে সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি থাকবে এবং দেশের টেসকই উন্নয়নে সহায়তা করবে।
নগর পরিবেশ ঃ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে যেহেতু দ্রুত নগরায়ণ অপ্রতিরোধ্য, সুতরাং টেকসই নগর উন্নয়নের ওপর নানাদিক থেকেই দেশের টেকসই উন্নয়ন নির্ভরশীল। এই অংশে নগরাঞ্চলের টেকসই উন্নয়নে পাঁচটি প্রধান বিষয়ে সমাধান অন্বেষন করা হয়েছে। সেগুলো হলো, নগর,গৃহায়ন , পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন, দূষণ ব্যবস্থাপনা, নগর পরিবহণ এবং নগর ঝুঁকি হ্রাস।
সামাজিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ঃ টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনের স্বার্থে সকল নাগরিকের অনুকূলে মানসম্মত ও নূন্যতম মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবার অধিকার এবং সেই সাথে সেবা ও ইউলিটি সেবা তাদের জন্য সহজলভ্য করা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্ঠনী, নারীদের অগ্রগতি ও অধিকার, শিশুদের অগ্রগতি ও অধিকার, বয়োবৃদ্ধ এবং অসমর্থ মানুষের জন্য বিশেষ সেবা দান, কর্মসংস্থানের সুযোগের বিস্তৃতি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ও সুবিধাবলিতে অ্যাকসেস বৃদ্ধি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এগুলো সামাজিক উন্নয়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক। বস্তুত সামাজিক উন্নয়ন টেকসই উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তিসমূহের অন্যতম।
পরিবেশ, প্রাকৃতিক সম্পদ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ঃ এই কৌশলগত অগ্রাধিকার প্রাপ্ত এলাকার প্রাথমিক উদ্দেশ্যবলির অন্যতম হলো, প্রাকৃতিক সম্পদের দক্ষ ব্যবহারসমূহ এর সংরক্ষন ও উন্নয়ন যথাযথ গুরুত্ব দান সহ মানব, ইকোসিষ্টেম ও সম্পদের জন্য পরিবেশগত সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ,পানি সম্পদ, বন ও জীববৈচিত্র ভূমি ও মাটি উপকূলীয় ও সামুদ্রিক সম্পদ এবং প্রাকৃতিক দূযোর্গ ও জলবায়ূ পরিবর্তন এর আওতাভূক্ত।
পরষ্পর সর্ম্পকযুক্ত এলাকা ঃ জাতীয় টেকসই উন্নয়ন কৌশলপত্রের কৌশলগত অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত এলাকাগুলোতে সহায়তা দিতে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা শনাক্ত করা হয়েছে। পারস্পরিকভাবে সর্ম্পকযুক্ত এই এলাকাগুলি হলো, সুশাসন, জেন্ডার, এবং দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস, ও জলবায়ূ পরিবর্তন। এটি প্রতীয়মান হয় যে, জলবায়ূ পরিবর্তন সমস্যা উপেক্ষা করে সামগ্রিক ভাবে টেসই উন্নয়ন কখনো অর্জন করা সম্ভব নয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন