বহুমাত্রিক এক জীবন কাটিয়েছেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। ফুটবল মাঠে ধরা দিয়েছে কত অর্জন। মাঠের বাইরে তর্কে-বিতর্কে সবসময় ছিলেন আলোচনায়। সাইকোলজিস্ট ও লেখক গুস্তাভো বেরনস্তেইন তার মাঝে দেখেছিলেন গোটা আর্জেন্টিনার ছায়া।
কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে বুধবার মারা গেছেন এই কিংবদন্তি। ফুটবল ইতিহাসের রোমাঞ্চকর এক অধ্যায়েরও সমাপ্তি ঘটেছে এতে। রয়ে গেছে অনেক স্মৃতি। স্মৃতির পাতা থেকেই তার বর্ণাঢ্য জীবনের ৭০টি তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেছে গোল ডটকম।
০১. আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আইরেসের উপকণ্ঠে ১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর জন্ম।
০২. জাতীয় দল আর্জেন্টিনার হয়ে ৯১ ম্যাচ খেলে ৩৪ গোল।
০৩. দেশের হয়ে চারটি বিশ্বকাপ খেলেন ম্যারাডোনা।
০৪. বার্সেলোনাতে যোগ দেওয়ার আগে ১৯৮২ সালে বোকা জুনিয়র্সের লিগ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ে ভ‚মিকা রাখেন। ১৯৮৪ সালে বার্সেলোনা থেকে পাড়ি জমান নাপোলিতে। সেরি দলটির হয়ে ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত জেতেন দুটি সেরি আ শিরোপা।
০৫. বিশ্বকাপে কোনো দলের অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড ম্যারাডোনার। ১৬টি ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।
০৬. বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে মোট ২১টি ম্যাচ খেলেন।
০৭. আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের হয়ে ১৯৭৬ সালের ২০ অক্টোবর মাত্র ১৫ বছর বয়সে পেশাদার ফুটবলে অভিষেক।
০৮. জাপানে হওয়া ১৯৭৯ সালের যুব বিশ্বকাপে বাজিমাত করা আর্জেন্টিনা দলে ছিলেন ম্যারাডোনা।
০৯. বুয়েন্স আইরেসের বোমবোনেরা স্টেডিয়ামে ১৯৭৭ সালের ২৭ ফেব্রæয়ারি হাঙ্গেরির বিপক্ষে ১৬ বছর বয়সে আর্জেন্টিনার জার্সিতে অভিষেক।
১০. ম্যারাডোনার বাহুতে আছে চে গেভারা এবং বাঁ পায়ে আছে ফিদেল কাস্ত্রোর ট্যাটু।
১১. বিশ্বকাপের এক আসরে সবচেয়ে ফাউলের শিকার হওয়ার রেকর্ড ম্যারাডোনার। ১৯৮৬ সালের মেক্সিকো বিশ্বকাপে মোট ৫৩ বার তাকে ফাউলের করা হয়েছিলেন।
১২. বিশ্বকাপে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশিবার ফাউলের শিকার হওয়ার রেকর্ডও তার। ১৯৮২ বিশ্বকাপে ইতালির বিপক্ষে ম্যাচে ২৩ বার ফাউলের শিকার হন তিনি।
১৩. ম্যারাডোনার অধিনায়কত্বে পশ্চিম জার্মানিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয় করে আর্জেন্টিনা।
১৪. ওই আসরে ম্যারাডোনা তার অসামান্য পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি হিসেবে জেতেন গোল্ডেন বল।
১৫. ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার-ফাইনালে হাত দিয়ে গোল করেন ম্যারাডোনা। ‘হ্যান্ড অব গড’ নামে যে গোলটি এক নামে পরিচিতি। ওই গোল নিয়ে পরে তিনি বলেছিলেন, ‘ওই গোলটি কিছুটা ঈশ্বরের হাত এবং কিছুটা ম্যারাডোনার মাথা থেকে হয়েছিল।’
১৬. ১৯৮৭ সালে নাপোলির হয়ে সেরি আর শিরোপা জেতেন। ১৯৯০ সালে করেন একই সাফল্যের পুনরাবৃত্তি। জয় করেন ১৯৮৯ সালে উয়েফা কাপও।
১৭. ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে মাত্র দুটি ম্যাচ খেলেছিলেন ম্যারাডোনা-গ্রিসের বিপক্ষে গোল করেন-এরপর ডোপ টেস্ট পাস করতে ব্যর্থ হওয়ায় ফিরেন বাড়িতে।
১৮. বুয়েন্স আইরেসে ১৯৮৯ সালের ৭ নভেম্বর ক্লাওদিও ভিয়াফানকে বিয়ে করেন ম্যারাডোনা।২০০৪ সালে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে।
১৯. ২০০৫ সালে আর্জেন্টিনার একটি টেলিভিশনে টকশো শুরু করেন ম্যারাডোনা। তার প্রথম শোয়ে অতিথি ছিলেন পেলে; শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে ব্রাজিলের এই কিংবদন্তির সঙ্গেই তার যত দ্বৈরথ।
২০. ২০০৮ সালের অক্টোবরে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব নেন।
২১. তার অধীনে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বলিভিয়ার বিপক্ষে ৬-১ গোলে হারে, স্পর্শ করে সবচেয়ে বাজে হারের আগের রেকর্ডকে। এই ম্যাচের পর সমালোচনার মুখে পড়তে হয় ম্যারাডোনাকে। পরে আর্জেন্টিনা বাছাই উৎরে গেলে বাজে মন্তব্য করেন ম্যারাডোনা। ফিফা তাকে ওই ঘটনায় দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয়।
২২. ২০০৮ সালের ১৯ নভেম্বর আর্জেন্টিনার কোচ হিসেবে অভিষেক হয় ম্যারাডোনার। হ্যাম্পডেন পার্কের সেই ম্যাচে স্কটল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারায় তার দল।
২৩. ২০১০ সালের ২২ জুনে বিশ্বকাপের বল ‘জুবিলানি’র সমালোচনা করতে গিয়ে ফিফাকে একহাত নেন ম্যারাডোনা। বলেন, ‘আমি ফিফার পরিচালকদের বলব, আমাকে নিয়ে কথা বলা বন্ধ করতে এবং উপযুক্ত বল তৈরি নিয়ে কাজ শুরু করবে। এই বল কোনো কাজের নয়। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব।’
২৪. ২০১০ সালের বিশ্বকাপের নকআউট পর্বের সংবাদ সম্মেলনের সময় ম্যারাডোনা লাফিয়ে এসে (নিরাপত্তা দেয়াল পেরিয়ে) নাপোলির সাবেক সতীর্থ সালভাতোরে বাগনিকে জড়িয়ে ধরেন। ফুটবল পন্ডিত হওয়া বাগনি ওই ঘটনা নিয়ে বলেছিলেন-দিয়েগো তোমাকে বিস্মিত করতে সবসময় কিছু না কিছু করবে।
২৫. ২০১০ সালের বিশ্বকাপ থেকে আর্জেন্টিনা বিদায় নেওয়ার পর সমালোচনার মুখে থাকা লিওনেল মেসিকে আগলে রাখেন ম্যারাডোনা। বলেছিলেন, ‘যে বলে বিশ্বকাপে মেসি দুর্দান্ত সময় কাটায়নি, সে একটা নির্বোধ।’
২৬. সাবেক সতীর্থ হোর্হে ভালদানো ২০০৬ সালে ম্যারাডোনা সম্পর্কে বলেছিলেন-সে এমন একজন যাকে অনেক মানুষ অনুকরণ করতে চায়, বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব, যাকে ভালোবাসে, ঘৃণা করে, যে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছিল, বিশেষ করে আর্জেন্টিনায়...। তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কাটাছেঁড়া করা ভুল হবে। মাঠে ম্যারাডোনার কোনো জুটি ছিল না কিন্তু সে তার জীবনকে নতুন একটা শোয়ে রূপ দিয়েছিল, এবং এখন সে কঠিন জীবনযাপন করছে, যেটা করা উচিত নয়।
২৭. আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ফিফার কাছে নাম্বার ১০ জার্সি অবসরে পাঠানোর (তুলে রাখার) অনুরোধ করেছিল, ফিফা সে অনুরোধে অস্বীকৃতি জানায়।
২৮. আর্জেন্টিনোর জুনিয়র্স নিজেদের স্টেডিয়ামের নাম দিয়েছে ইস্তাদিও দিয়েগো আর্মান্দো ম্যারাডোনা।
২৯. ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারানোর পর ম্যারাডোনা বলেছিলেন, ‘এটা ছিল যেন আমরা একটা দেশকে হারিয়েছি, যেটা ফুটবলের চেয়েও বেশি কিছু।’
৩০. ১৯৯৬ সালে ম্যারাডোনা বলেছিলেন, ‘আমি ছিলাম, আমি আছি এবং আমি সবসময় ড্রাগে আসক্তই থাকব। ড্রাগে অসক্ত মানুষকে প্রতিদিনই এর সঙ্গে লড়াই করতে হয়।’
৩১. ফিফা ২০০০ সালে সিদ্ধান্ত নেয় নতুন শতাব্দীতে সেরা ফুটবলার একজনকে ঘোষণা করার। শতাব্দীর সেরার প্রশ্নে পেলে ও ম্যারাডোনাকে যৌথভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রেক্ষিতে পেলে বলেছিলেন, ‘যদি সে (ম্যারাডোনা) মনে করে সে শতাব্দীর সেরা, তাহলে সেটা তার সমস্যা।’
৩২. ১৯৯০ এ সেরা একাদশ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আর্জেন্টিনার কোচ কার্লোস বিলার্দো সেই বিখ্যাত উক্তি করেছিলেন, ‘ম্যারাডোনা এবং বাকি দশ জন।’
৩৩. ২০০৫ সালে ম্যারাডোনাকে বোকা জুনিয়র্সের সহ-সভাপতি করা হয়। এক বছর পর সে পদ ছাড়েন তিনি।
৩৪. সার্বিয়ার চলচিত্র নির্মাতা এমির কুসতুরিচা ম্যারাডোনাকে নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন। সেটি ২০০৮ সালের কান চলচিত্র উৎসবে দেখানো হয়।
৩৫. ১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ডের সাবেক কোচ স্যার ববি রবসন বলেছিলেন, ‘ম্যারাডোনাকে নিয়ে আর্সেনাল বিশ্বকাপও জিততে পারে।’
৩৬. ইংল্যান্ডের সাবেক ডিফেন্ডার ফিল নেল ১৮ বছর বয়সী ম্যারাডোনাকে ১৯৭৮ সালে দেখে বলেছিলেন-এই ছোকড়া অবিশ্বাস্য-আমার দেখা সবার সেরা।
৩৭. ১৯৯৮ সালে বুয়েন্স আইরেসে ভক্তরা ‘চার্চ অব ম্যারাডোনা’ শুরু করেছিল।
৩৮. হ্যান্ড অব গড-গোলের চার মিনিট পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চোখ ধাঁধানো সেই দ্বিতীয় গোলটি করেছিলেন ম্যারাডোনা। ১৯৮৬ বিশ্বকাপের সেই কোয়ার্টার-ফাইনালে দুর্দান্ত ড্রিবলিংয়ে ইংল্যান্ডের ডিফেন্ডারদের ছিটকে দিয়ে পিটার শিলটনকে পরাস্ত করে স্কোরলাইন ২-০ করেছিলেন। ফিফা এ গোলটিকেই ‘গোল অব দ্য সেঞ্চুরি’র মুকুট পরিয়ে দেয়।
৩৯. ফরাসি শো ‘লেস গুইগঁলস দে এল ইনফো’তে ম্যারাডোনার সদৃশ একটা পাপেট আছে।
৪০. কিউবার নেতা রাউল কাস্ত্রোর সঙ্গে দারুণ বন্ধুত্ব ম্যারাডোনার।
৪১. ১৯৯১ সালে কোকেন নেওয়ার কারণে ড্রাগ টেস্টে ব্যর্থ হওয়ায় সেই বছর নাপোলি ছাড়তে হয়।
৪২. ২০০৬ সালের জার্মানির বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যেতে অস্বীকৃতি জানান ম্যারাডোনা বলেছিলেন, ‘ব্লাডি পেলে চারপাশে ঘুরঘুর করছে, সেটা দেখার জন্য আমি এখানে নেই।’
৪৩. দুজনের মধ্যে কথার যুদ্ধ শুরু হলে জাতীয় দলের কোচ হিসেবে ব্যর্থ হওয়া ম্যারাডোনাকেও খোঁচা মারেন পেলে। বলেন, ‘এটা ম্যারাডোনার দোষ নয়। যারা তাকে দায়িত্ব দিয়েছে, দোষটা তাদের।’ ম্যারাডোনা পাল্টা জবাবে বলেন, ‘পেলের উচিত জাদুঘরে যাওয়া এবং সেখানেই থাকা।’
৪৪. ইতালি কর্তৃপক্ষ ২০০৯ সালে জানায় ম্যারাডোনার কাছে তাদের পাওনা ৩ কোটি ৭০ লাখ ইউরো। আসল দেনার অর্ধেকেরও বেশি সুদ মিলিয়ে অঙ্কটা ওই পর্যায়ে পৌঁছেছিল।
৪৫. ঘরোয়া ক্লাব প্রতিযোগিতায় ম্যাচ প্রতি ম্যারাডোনার গোল গড় ০ দশমিক ৫২৬।
৪৬. আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় ম্যারাডোনা পঞ্চম। তার উপরে আছে লিওনেল মেসি, গাব্রিয়েল বাতিস্তুতা, সের্হিও আগুয়েরো এবং এরনান ক্রেসপো।
৪৭. স্কটিশ ফ্যান গ্রুপ ‘দি টারটান আর্মি’ ম্যারাডোনার প্রশংসায় মাতে তাদের প্রতিবেশী ইংল্যান্ডকে ১৯৮৬ বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করে দেওয়ায়!
৪৮. ১৯৯৮ বিশ্বকাপ নিয়ে ম্যারাডোনা বলেছিলেন, ‘সব খেলোয়াড়ের পা সোজা। তারা রোবোকপের মতো। মাসাজ করার চেয়ে তাদের আরও বেশি লুব্রিকেন্ট (তেল) দরকার। আমি বিশ্বাস হয় না, টুর্নামেন্ট এত বাজে হতে পারে।’
৪৯. ২০০৮ সালে দি আইআইএমএসএএম ম্যারাডোনাকে তাদের শুভেচ্ছাদ‚ত করেছিল।
৫০. ১৯৯৭ সালে ম্যারাডোনাকে নিয়ে লেখা এক বইয়ে আর্জেন্টিনার সাইকোলজিস্ট এবং লেখক গুস্তাভো বেরনস্তেইন বলেছিলেন, ‘উদাহরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ম্যারাডোনা আমাদের সর্বোচ্চ সীমা। আমাদের সত্তাকে তার চেয়ে বেশি কেউ বহন করে না, আমাদের প্রতীক তার চেয়ে কেউ বেশি বহন করে না। গত ২০ বছরে আমরা আর কারো প্রতি এত আবেগ দেখাইনি। আর্জেন্টিনা হচ্ছে ম্যারাডোনা, ম্যারাডোনা হচ্ছে আর্জেন্টিনা।’
৫১. ম্যারাডোনা ফুটবল ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড় যিনি ট্রান্সফার ফির রেকর্ড দুইবার ভেঙেছেন।
৫২. ফ্রাঙ্কো বারেসি এবং পাউলো মালদিনি ম্যারাডোনাকে আখ্যা দিয়েছিলেন ‘মুখোমুখি হওয়ার সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ হিসেবে।’
৫৩. ম্যারাডোনা এবং মেসিই কেবল ফিফা বিশ্বকাপ ও ফিফা অন‚র্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে গোল্ডেন বল জিতেছেন।
৫৪. ২০১৫ সালের ১৭ই অগাস্ট ম্যারাডোনা তিউনিশিয়ান রেফারি আলি বিন নাসেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাকে নিজের সাক্ষরিত আর্জেন্টিনার জার্সি উপহার দেন। বিন নাসের ইংল্যান্ড-আর্জেন্টিনার সেই কোয়ার্টার-ফাইনাল পরিচালনা করেছিলেন, যে ম্যাচে হাত দিয়ে গোল করেছিলেন ম্যারাডোনা।
৫৫. ২০০০ সালে ম্যারাডোনা প্রকাশ করেন আত্মজীবনী ‘আই অ্যাম দি দিয়েগো।’ এই বইয়ের সত্ব তিনি কিউবার মানুষকে দান করেন।
৫৬. আর্জেন্টিনাভিত্তিক কোনেক্স ফাউন্ডেশন ১৯৯০ সালে তাকে ডায়মন্ড কোনেক্স পুরস্কার দেয়। যেটি আর্জেন্টিনার সবচেয়ে মর্যাদাকর সাংস্কৃতিক পুরস্কার। খেলাধুলায় অবদানের জন্য এই পুরস্কার পান তিনি।
৫৭. অনুপ্রেবশকারী ফটোগ্রাফারের গাড়ির কাঁচ গুঁড়িয়ে দিয়ে ম্যারাডোনা বলেছিলেন, ‘এ কাজটি আমি করেছি হ্যান্ড অব রিজন (যুক্তি)-এর হাত দিয়ে।’
৫৮. ম্যারাডোনাকে নিয়ে বব উইলসন বলেছিলেন, ‘সে একজন ত্রুটিযুক্ত প্রতিভা, যে এখন হয়েছে ন’ প্রতিভা।’
৫৯. রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচে ড্রিবলিং করে গোলরক্ষককে কাটানোর পর ডিফেন্ডার হুয়ান জোসেকে কাটিয়ে গোল করে প্রতিপক্ষ সমর্থকদের তালি পেয়েছিলেন ম্যারাডোনা। খুব কম সংখ্যাক খেলোয়াড়ই এমন হাততালি পেয়েছেন।
৬০. ব্রুনো জিওর্দিনো এবং কারেকার সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে নাপোলিকে ১৯৮৯-৯০ সালের সেরি আ শিরোপা এনে দিয়েছিলেন। আক্রমণভাগের এই ম্যাজিক ত্রয়ীর নাম হয়ে গিয়েছিল ‘মা-জি-কা’।
৬১. বয়স মাত্র ১৭ বছর ছিল বলে কোচ সেসার লুইস মেনোত্তি ম্যারাডোনাকে ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপ দলে ঠাঁই দেননি।
৬২. ২০১৯ সালে ‘ম্যারাডোনা’ নামের বায়োপিক মুক্তি পেয়েছিল।
৬৩. ম্যারাডোনার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে কর্তৃপক্ষ আজটেকা স্টেডিয়ামে তার ‘গোল অব দ্য সেঞ্চুরির’ ম‚র্তি প্রবেশদ্বারে স্থাপন করেছিল।
৬৪. আইনত ম্যারাডোনা দুই সন্তানের জনক। পিতৃত্ব নিয়ে একবার তিনি বলেছিলেন, ‘আমার আইনসিদ্ধ সন্তান দালমা ও জিয়ান্নিনা। বাকিগুলো টাকা আর ভুলের ফল।’
৬৫. ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে ম্যারাডোনা ইরানের মানুষের সমর্থনে নিজের সাক্ষরিত জার্সি উপহার দেন। ইরানের পররা’্র মন্ত্রণালয়ের জাদুঘরে এটি আছে।
৬৬. ২০১৩ সালের এপ্রিলে ম্যারাডোনা হুগো সাভেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, পরে যিনি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে সাভেসকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছিলেন, ‘সংগ্রাম চালিয়ে যাও।’
৬৭. চলচিত্র পরিচালক কুসতুরিকা একবার ম্যারাডোনা নিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি নিজেকে জিজ্ঞেস করলাম-এই লোকটা কে। এই ফুটবল জাদুকর, আন্তর্জাতিক ফুটবলের সেক্স পিস্তল, কোকেনের শিকার, যে অভ্যাসটাকে লাথি মেরেছে, ফ্যালস্টাফের মতো দেখায় এবং স্প্যাগেটির মতো দুর্বল ছিল? যদি অ্যান্ডি ওয়ারজোল বেঁচে থাকত, সে নিশ্চিতভাবে ম্যারাডোনাকে মেরিলিন মোনরো এবং মাও সে-তুংয়ের পাশে বসাত। আমি নিশ্চিত, সে যদি ফুটবলার না হত, তাহলে বিপ্লবী হত।’
৬৮. ফিফা ১৮ এবং প্রো ইভোলিউশন সকার ২০১৮ তে ম্যারাডোনা কিংবদন্তি খেলোয়াড় হিসেবে চিত্রিত হয়েছেন।
৬৯. আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের মধ্যে দ্বৈরথ সত্তে¡ও ব্রাজিল বংশোদ্ভ‚ত দিয়েগো কস্তার নামে ‘দিয়েগো; যোগ করা হয় ম্যারাডোনাকে সম্মান জানাতে।
৭০. ২০১০ বিশ্বকাপ উপলক্ষে শাকিরার গাওয়া ‘ওয়াকা ওয়াকা’ গানের মিউজিক ভিডিওতে ম্যারাডোনাকে দেখানো হয়। ম্যারাডোনার ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ জয়ের উদযাপনের দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে ওই ভিডিওতে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন