বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

প্রবাসীর নামে প্লট বরাদ্দ করতেন স্বাক্ষর জাল

ডিবির রিমান্ডে গোল্ডেন মনির

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বর্ণ চোরাচালান, প্লট জালিয়াতি, অবৈধ অস্ত্র কেনা ও প্রভাবশালীদের সাথে নেটওয়ার্ক সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য প্রকাশ করছেন গোল্ডন মনির। কীভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় তিনি হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন, দুই শতাধিক প্লট এবং শুল্কমুক্ত গাড়ি হাতিয়ে নিয়েছেন এর সবকিছু সম্পর্কে মুখ খুলছেন গোল্ডেন মনির। ডিবি হেফাজতে রিমান্ডে সোনা চোরাচালানের মাধ্যমে অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার কথাও স্বীকার করেছেন তিনি। গোল্ডেন মনিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন ডিবির একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিবির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, দখল করা বেশির ভাগ প্লট তিনি প্রবাসী কোনো ব্যক্তির নামে বরাদ্দ নিতেন, এরপর স্বাক্ষর জাল করে নিজের দখলে নিয়ে নিতেন। এরই মধ্যে তার দেশ-বিদেশে থাকা সম্পদের তথ্য জানতে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) চিঠি দিয়েছে সিআইডি। সাবেক ও বর্তমান দুজন এমপির নামে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা বিলাসবহুল দুটি গাড়ি তিনি কিনে নিয়েছিলেন। দুই কোটি টাকা দরে গাড়ি দুটি তিনি নেন। অলিখিত চুক্তিতে গাড়ি দুটি ৫বছর পর নিজের নামে নিবন্ধন করার কথা ছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে মনির স্বীকার করেন। সবকিছুই করতেন রাজউকের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে। ১৫ বছর ধরে তিনি রাজউকের চেয়ারম্যান ও মেম্বারের নিচে কারও সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতেন না। তার সব সম্পর্ক ছিল শীর্ষপর্যায়ে। এ ছাড়া হুন্ডির মাধ্যমে দুবাই, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে তিনি টাকা পাচার করেছেন বলেও জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, রিমান্ডে সোনা চোরাচালান করে অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। পরে তিনি বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করে সম্পদ বাড়িয়েছেন বলে দাবি করছেন। ব্যাবসায়িক কারণে তার অনেক প্রভাবশালী বন্ধু হয়েছে। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসাও করছেন তিনি। প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ কারবার করার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে রিমান্ডে চুপ থাকছেন তিনি।

সূত্র জানায়, মনিরের কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র, মাদকদ্রব্য ও সোনা উদ্ধারের ঘটনার তদন্ত চলছে। পাশাপাশি বিদেশে অর্থপাচারের ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে। এদিকে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা করতে মনিরের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া শুরু করেছে সিআইডি। সিআইডির এএসপি জিসানুল হক বলেন, এ রকম ঘটনা ঘটলে নিয়মানুযায়ী আমরাই অনুসন্ধান করে মানি লন্ডারিং মামলা করব। আমরা তদন্তকারীদের কাছ থেকে একটি চিঠি পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।
গত ২১ নভেম্বর শনিবার সকালে রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকায় ডিআইটি প্রজেক্টের ১১ নম্বর রোডের নিজ বাসা থেকে মো. মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। অভিযানে ওই বাসা থেকে ৬০০ ভরি (আট কেজি) স্বর্ণ, ১টি বিদেশি পিস্তল-গুলি, মদ, ১০টি দেশের বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা ও নগদ ১ কোটি ৯ লাখ টাকা জব্দ করা হয়। এছাড়া তার বাড়ি থেকে অনুমোদনহীন দুইটি বিলাসবহুল গাড়ি এবং অটো কার সিলেকশান নামের তার গাড়ির শোরুম থেকে তিনটি অনুমোদনহীন বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করা হয়। পরে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে র‌্যাবের করা তিনটি মামলায় ১৮দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। প্রথমে তাকে বাড্ডা থানা হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে গত মঙ্গলবার ২৪ নভেম্বর বিকেলে তিনটি মামলার তদন্তভার ডিএমপির গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের গুলশান বিভাগের কাছে ন্যাস্ত করা হয়েছে। বর্তমানে গোল্ডেন মনির ডিবি হেফাজতে রয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Ali Kadar ২৮ নভেম্বর, ২০২০, ৬:৫৮ এএম says : 0
থলের বিড়াল বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে, এসব এমপি বাহাদুর রাঘব বোয়াল বা রাজনৈতিক দলের আশ্রয় ছাড়া কিভাবে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়,সঠিক তদন্তের প্রয়োজন,এরাই দেশের বারো টা বাজায় দিচ্ছে,এমপি হাজী সেলিম,এমপি আসলাম,আরো হাজারো নমুনা রয়েছে এরকম ।এতদিন তো পুকুর চুরির গল্প শুনেছি আর এখন তো মাশাআললাহ সাগর চুরি দেখতেছি
Total Reply(0)
Kazi Zabed Uddin ২৮ নভেম্বর, ২০২০, ৬:৫৮ এএম says : 0
রাজনৈতিক পশ্রয় এবং বিভিন্ন কাজে ব‍্যবহার করার জন্য এদেরকে রাজনৈতিক নেতা রাই গড়ে তুলে।
Total Reply(0)
Mostafizar Rahman ২৮ নভেম্বর, ২০২০, ৬:৫৮ এএম says : 0
যারা জনগনের সেবক, তাদের এতো নামীদামী গাড়ির দরকার নাই। এমপিদের মোটর সাইকেল , মন্ত্রীদের করলা গাড়ি আর চেয়ারম্যানদের সাইকেল দেওয়া উচিত। যাতে করে তৃনমুল জনগনের দোরগোড়ায় সাইকেল নিয়ে, পায়ে হেঁটে, জনগনকে আপন করে, সেবা দিতে পারেন।
Total Reply(0)
Azmi Rana ২৮ নভেম্বর, ২০২০, ৬:৫৯ এএম says : 0
এতো টাকা পয়সা কামাওরে ভাই শেষ জীবনে জেলের ঘানি টানো আর মোটা চালের ভাত খাও। কি হবে তোমার এসব টাকা পয়সা রেখে গেলে। তুমিতো ভোগ করতে পারবা না শেষমেষ। তাই সৎভাবে টাকা উপার্জন করে শেষ বয়সে একটু আরাম করে মরো। বিবেককে একটু নাড়া দাও তোমাদের।
Total Reply(0)
Emran Chowdhury Rajib ২৮ নভেম্বর, ২০২০, ৬:৫৯ এএম says : 0
এইসব.... নমিনেশন দিয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দেওয়া কোনভাবেই আর উচিত নয়। এদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হোক
Total Reply(0)
Nurul Arefin ২৮ নভেম্বর, ২০২০, ৭:০০ এএম says : 0
শুধু গোল্ডেন মনির নয় আরো এমন হাজারো মনিরের গাড়ী আছে ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাড়ীর পার্কিংয়ে বিলাশ বহুল গাড়ী যা সরকারের কর ফাকি দিয়ে আনা
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন