শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশ বিক্রি করবে ব্যান্ডউইথ

আগ্রহী সউদী আরব ভারত নেপাল ও ভুটান একনেকে ২১১৫ কোটি খরচে ৪ প্রকল্প অনুমোদন কক্সবাজারে বসবে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সউদী আরব, ভারত, নেপাল ও ভুটান। আনুষ্ঠানিকভাবে ভুটান ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য প্রস্তাব দিয়েছে, অনানুষ্ঠানিকভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সউদী আরব ও নেপাল। এদিকে কক্সবাজারে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় দুই হাজার ১১৫ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে সাবমেরিন প্রকল্পসহ মোট চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

গতকাল একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-সচিবরা একনেক সভায় অংশ নেন।

সভা শেষে এসব তথ্য জানিয়েছেন, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম। একনেকে এ বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী কী বলেছিলেন, এ প্রশ্নের জবাবে শামসুল আলম বলেন, ‘আমাদের ইন্টারনেটের চাহিদা প্রতি বছর ৭০ শতাংশ বাড়ছে। আমাদের একটি সাবমেরিন ২০২৫ সালের পর অকেজো হয়ে যাবে বা মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে এই প্রকল্পটি এখনই গ্রহণ করায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত খুশি হয়েছেন যে, এমন একটি প্রকল্প যথাসময়ে আনা হয়েছে। এটা দিয়ে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ রয়েছে।’ শামসুল আলম আরও বলেন, ‘আমাদের পূর্বাঞ্চলে যে সেভেন সিস্টার্স রয়েছে, সেখানে কিছু কিছু ব্যান্ডউইথ সার্ভিস আমরা তাদের দিচ্ছি। এটা আমরা দিতে থাকবো। ভুটান আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে তারা আমাদের কাছ থেকে ব্যান্ডউইথ কিনবে। সেক্ষেত্রে আমাদের একটা সুযোগ আছে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের। আইসিটির সচিব জানিয়েছেন, সউদী আরবও ব্যান্ডউইথ আমাদের কাছ থেকে নিতে চাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন তারা কীভাবে নেবে, আমরা মূল লাইন থেকে দেব নাকি কক্সবাজার থেকে? তখন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বলেছেন, মূল লাইন থেকে সউদী আরবকে দিতে পারবো। এটি বোধহয় আমাদের অপেক্ষায় থাকতে হবে যে, তারা কীভাবে নেয় বা আমরা কীভাবে দিই।

এদিকে, বাংলাদেশের জন্য নির্ভরযোগ্য ও কার্যকর আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো হিসেবে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেম স্থাপনে খরচ হবে ৬৯৩ কোটি ১৬ লাখ ৭১ হাজার টাকা। তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল বসবে কক্সবাজারে। চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।

‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স¤প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন’ শিরোনামের প্রকল্পটি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ/ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্পে বলা হয়েছে, সিঙ্গাপুর থেকে ফ্রান্স পর্যন্ত সংযুক্ত SEA-ME-WE-6 সাবমেরিন ক্যাবলটি ভারত মহাসাগর, আরব সাগর, লোহিত সাগর হয়ে ভূমধ্য সাগর অবধি বিস্তৃত হবে। ক্যাবলটির কোর ল্যান্ডিং স্টেশন হবে সিঙ্গাপুর, ভারত, জিবুতি, মিসর ও ফ্রান্সে। বাংলাদেশের ব্রাঞ্চটি বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজারের ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। কক্সবাজারকে প্রকল্প এলাকা নির্বাচন করা হয়েছে।

কোর সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হবে ১৩ হাজার ২৭৫ কিলোমিটার, ব্রাঞ্চ সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হবে ১ হাজার ৮৫০ কিলোমিটার, যন্ত্রপাতি স্থাপনপূর্বক লাইট আপ করা, সিঙ্গাপুর ও ফ্রান্স ল্যান্ডিং স্টেশনে Carrier Neutral PoP পর্যন্ত ল্যান্ড ক্যাবল সংযোগ স্থাপন করা হবে।

ডাটা সেন্টারের অবকাঠামো ও বৈদ্যুতিক কাজ, একটি ৫০০ কেভিএ স্ট্যান্ড বাই-ডিজেল জেনারেটর স্থাপন করা, স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপণ সিস্টেম স্থাপন করা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ সিস্টেম (Precision Air Conditioner) স্থাপন করা, যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য ভবন এবং একটি আন্তর্জাতিক মানের রেস্ট হাউজ নির্মাণ (২৪২৮ বর্গফুট দোতলাবিশিষ্ট ফাংশনাল বিল্ডিং নির্মাণ এবং ২৫৯৫ বর্গফুট তিনতলা বিশিষ্ট রেস্ট হাউস নির্মাণ) করা হবে।

এছাড়াও গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় দুই হাজার ১১৫ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে সাবমেরিনসহ মোট চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে সরকারি অর্থায়ন এক হাজার ৪৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩০০ কোটি ৮৩ লাখ এবং বৈদেশিক উৎস হতে ঋত ৩৭৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অনুমোদিত চারটি প্রকল্পের মধ্যে তিনটি সংশোধিত এবং একটি নতুন।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘নরসিংদী জেলার অন্তর্ভুক্ত আড়িয়াল খাঁ নদী, হাড়িদোয়া নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা নদ পুনঃখনন’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন আনা হয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ৫০০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীতে ৪০৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা খরচ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯০৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়েছে। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। আজকের সংশোধনীতে এর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে।

তার মধ্যে ‘ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ’ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন আনা হয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল দুই হাজার ৫৭৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সংশোধনীতে ৭৪১ কোটি ৫৪ লাখ বাড়িয়ে করা হয়েছে তিন হাজার ৩১৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুলাইয়ে শুরু হয়েছে। ২০২০ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। সংশোধনীতে মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘মিউনিসিপ্যাল গভারন্যান্স অ্যান্ড সার্ভিসেস’ প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধন আনা হয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল দুই হাজার ৪৭০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীতে এর মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয়েছিল দুই হাজার ৪৭০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আজকের দ্বিতীয় সংশোধনীতে ২৭৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বাড়িয়ে করা হলো দুই হাজার ৭৪৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

একনেক সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ হাসান মাহমুদ; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম; শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন; স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক; বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন; ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
নজরুল ইসলাম ২ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:০৮ এএম says : 0
এটা খুবই ভালো খবর আমাদের জন্য
Total Reply(0)
K.m. Iqbal Hossain ২ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫৬ এএম says : 0
It's a very good decision.
Total Reply(0)
Abdur Razzak ২ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫৭ এএম says : 0
বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জাতির জনকের কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা আমাদের সফল রাষ্ট্র নায়ক।
Total Reply(0)
শাহাব হাওলাদার ২ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫৯ এএম says : 0
যখনই হোক না কেন বিষয়টি শুনতেই ভালো লাগছে
Total Reply(0)
Maahi Ahmed ২ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫৯ এএম says : 0
Congratulations world famous leader Honourable prime minister Sheikh Hasina
Total Reply(0)
Zahid Hossain ২ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:০০ এএম says : 0
অভিনন্দন। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু ✌জয়তু দেশরত্ন শেখ হাসিনা
Total Reply(0)
Nadim ahmed ২ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৫৩ এএম says : 0
This is bogus, just a rumor created by BNP-Jamat. Joy bangla...
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন