বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

অবরোধের মুখে দিল্লি, শক্ত অবস্থানে বিক্ষোভকারী কৃষকরা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০২০, ১:৩৯ পিএম

এবার বিক্ষুব্ধ কৃষকদের অবরোধের মুখে ভারতের রাজধানী দিল্লি। দেশটির হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে দেশের রাজধানীতে এ যেন আরেক ‘কুরুক্ষেত্র’। একে তো করোনা মহামারি, তার ওপর উত্তর ভারতের কড়া শীত। এ সব কথা মাথায় রেখেই বেশ কয়েক মাসের রসদ সঙ্গে নিয়েই দিল্লির দরবারে উপস্থিত বিক্ষোভকারীরা।

গতকাল মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) কৃষকদের বিক্ষোভ ষষ্ঠ দিনে পড়েছে। বিজ্ঞানভবনে এক দফা আলোচনাও হয়েছে সরকারের সঙ্গে। কিন্তু তাতে বরফ গলেনি। বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে নয়া ৩ কৃষি আইন প্রত্যাহারে নারাজ ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। উল্টো দিকে অনড় কৃষকরাও। টানাপড়েন যে আরও কত দিন চলবে তার নিশ্চয়তা নেই। তাই আগেভাগে পরিকল্পনা করে খাবার, পানি, বালিশ, বিছানা, কম্বল, ত্রিপল, ওষুধ, অ্যাম্বুল্যান্স—- সব গুছিয়ে নিয়েই পথে নেমে পড়েছেন পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যের কৃষকরা।

বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে রাজা-মহারাজাদের অবরোধ। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে দীর্ঘকাল ধরে সীমানা অবরুদ্ধ করে রাখার কৌশল। এমন সব অবরোধের সঙ্গে থাকত প্রচুর খাবারদাবার, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং নিত্য প্রয়োজনীয় অন্য জিনিসপত্রও। ইতিহাসে এমন বর্ণনা মেলে বিস্তর। কয়েকশো কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচি ঠিক যেন সেই ছবি। হরিয়ানা-দিল্লির সিঙ্ঘু সীমানায় জিটি কার্নাল রোডের পাশে সাজানো বিক্ষোভকারীদের একের পর এক শিবির।
দাঁত মাজার ব্রাশ, মাজন থেকে শুরু করে খাবার, পানি, ওষুধ বা ঘুমনোর জন্য প্রয়োজনীয় কম্বল, বিছানা- সবই মজুত কৃষকদের ট্রাক্টরে। জামাকাপড় কাচার জন্য রয়েছে ডিটারজেন্ট এবং সাবান। তা শুকানোর জন্য সার দিয়ে দাঁড় করানো ট্রাক্টরে বাঁধা হয়েছে দঁড়ি। এক ঝলকে দেখলে মনে হবে রাজপথের পাশেই নতুন কোনও জনপদ।
সকালে ঘুম ভাঙার পর বিক্ষোভকারীদের হাতে হাতে চা, ক্ষীর ইত্যাদি সরবরাহ করছে খালসা এড ফাউন্ডেশন। দেওয়া হচ্ছে মিনারেল ওয়াটারের বোতলও। ফাউন্ডেশনের অধিকর্তা অমরপ্রীত সিংহ বলন, ‘খাবার ছাড়াও মহিলাদের জন্য আমরা ২০টি মোবাইল শৌচাগার বসিয়েছি। কৃষকরা এখানে দিনরাত বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। আমরা চাই না ওঁরা কোনও অসুবিধার সম্মুখীন হোন।’

যেমন পাঞ্জাবের কপূরথালা থেকে একদল কৃষক দিল্লি পৌঁছেছেন অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে। সঙ্গে রয়েছে বিপুল পরিমাণ ওষুধপত্রও। দিল্লির সীমানায় যেখানে অবরোধ চলছে, সেই সিঙ্ঘু এলাকায় খোলা হয়েছে স্বাস্থ্যশিবির। তার পরিচালক অবতার সিংহ ওয়ালিয়া বলছেন, ‘চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা দেখা দিলে কী করতে হবে সে জন্য আমাদের সঙ্গে রয়েছেন চিকিৎসকও। আমরা কৃষকদের কাপড়ের মাস্ক বিলি করছি। এখানে অনেক লঙ্গরখানাও খোলা হয়েছে।’
বিজ্ঞানভবনে মঙ্গলবার কৃষক সংগঠনগুলোর ৩৫ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর, কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল এবং শিল্প প্রতিমন্ত্রী সোম প্রকাশ। কিন্তু প্রথম দফার সেই আলোচনা ব্যর্থ।

এ দিন বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আলোচনা চলবে। আমি কৃষকদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। আমরা ৩ ডিসেম্বর ফের আলোচনায় বসব। বিক্ষোভে ইতি টানার জন্য কৃষকদের কাছে আবেদন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।’ কিন্তু তাতে রণে ভঙ্গ দেননি আন্দোলনকারীরা।
কিন্তু এভাবে কত দিন? কত দিনের রসদ মজুত রয়েছে ভাঁড়ারে? আন্দোলনকারীদের একটি শিবিরের পরিচালকরা বলছেন, তাদের সঙ্গে রয়েছে অন্তত ৬ মাসের খাবারদাবার এবং অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। সূত্র : আনন্দবাবজার

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
সোহাগ ২ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:১৮ পিএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ 2018 সালের একটি প্রতিবেদন করেছিলেন,,,, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম সম্পর্কে হিন্দু ধর্ম কি বলে ????খুব ভালো লাগলো এই বিষয়টা আমি অনেকদিন ধরে খুজতেছিলাম ???? অনেক অনেক ধন্যবাদ
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন