শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

বিপাকে ভারতের সেরাম

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

ভারতে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই) তৈরি করছে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রæপের করোনা ভ্যাকসিন। এই ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে জানিয়ে পাঁচ কোটি রুপি দাবি করেছিলেন চেন্নাইয়ের এক স্বেচ্ছাসেবক। ওই ব্যক্তির স্ত্রী বলেছেন, ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় তার স্বামী সৃজনশীলতা হারিয়ে ফেলেছেন। একই কারণে কাজও হারিয়েছেন তিনি। ফলে তার আয়রোজগারেও প্রভাব পড়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই নারী এই দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, অক্সফোর্ডের টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর থেকে তার স্বামীর দেহে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তিনি নিজের সৃজনশীলতা হারিয়ে ফেলেছেন। এতে তার কর্মক্ষমতাও কমে যায়। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি থেকে পাওয়া কাজ ফসকে গেছে। কারণ ওই কাজটি করার জন্য যে মনোযোগ ও সৃজনশীলতা প্রয়োজন ছিল, তা তিনি দেখাতে পারছিলেন না। বর্তমানে অনলাইনে অর্থ লেনদেনের মতো তুলনামূলক সহজ কাজও তিনি করতে পারছেন না।

অবশ্য শুরু থেকেই এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। ওই স্বেচ্ছাসেবকের দাবি ‘মিথ্যা’ আখ্যা দিয়ে ১০০ কোটি রুপির মানহানির মামলাও করেছে সেরাম। প্রতিষ্ঠানটির বক্তব্য, ওই ব্যক্তির অভিযোগগুলো বিপজ্জনক ও ভ্রান্ত ধারণাভিত্তিক। প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশ্যে এমন অভিযোগ করা হচ্ছে। সেরাম আরও বলেছে, অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিন ‘নিরাপদ ও এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সক্ষম।’ তবে ৪০ বছর বয়সী ওই স্বেচ্ছাসেবকের স্ত্রী বলেছেন, অর্থনৈতিক বা অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্য থেকে এসব অভিযোগ করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা পুরো বিষয়টি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানাতে চেয়েছি। ভারত এই ভ্যাকসিনকে বিকল্প হিসেবে দেখছে। আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমরা চুপ থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারতাম...কিন্তু আমাদের মন বলেছে যে এটা করা উচিত।’ ওই নারী বলেছেন, তার স্বামী পেশায় একজন বিপণন পেশাজীবী। তিনি বলেন, ‘লেখার ক্ষমতা, সৃজনশীলভাবে কোনো বিষয় উপস্থাপনের ক্ষমতা তার ছিল। এখন সে তা করতে পারছে না।’ তবে সেই নারী এ-ও বলেছেন, অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু এখনো সহজ কাজ করতে গিয়েও সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন তার স্বামী।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থার তৈরি কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন ভারতে উৎপাদন করছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। এর পৃষ্ঠপোষকতা করছে আইসিএমআর। ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ক্ষেত্রে ওই স্বেচ্ছাসেবককে গত ১ অক্টোবর ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছিল। তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাইয়ের শ্রীরামচন্দ্র ইনস্টিটিউট অব হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ কেন্দ্রে ভ্যাকসিনটি দেয়া হয়। ভুক্তভোগী ওই স্বেচ্ছাসেবক এর আগে দেওয়া নোটিশে বলেছিলেন, শরীরে কোভিশিল্ডের ডোজ প্রবেশ করার পরই তিনি নানা উপসর্গে আক্রান্ত হন। এর জেরে মস্তিষ্কে প্রভাব পড়ে। তার দাবি, স্বাস্থ্য পরীক্ষায় জানা গেছে, ভ্যাকসিন নেয়ার কারণেই তার শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে।

এদিকে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া বলেছে, যতক্ষণ না পর্যন্ত করোনা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা প্রমাণিত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এটি জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হবে না। এ ব্যাপারে ‘নিশ্চয়তা’ দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে একই সঙ্গে ভুক্তভোগী ব্যক্তির দাবিকেও নাকচ করেছে তারা। সূত্র : এনডিটিভি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন