শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

প্রণোদনা যায় কোথায়?

‘কর্মসৃজন-গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুজ্জীবন’ শীর্ষক সেমিনার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৬ এএম

অর্থসচিব ও গভর্নরকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ পরিকল্পনা মন্ত্রীর

করোনাভাইরাসের পাদুর্ভাবের কারণে কয়েক মাস সবকিছুই বন্ধ ছিল। লকডাউন, আইস্যোলেন, কোয়ারেন্টাইন নানা কারণে কর্মজীবী মানুষকে ঘরে বসে থাকতে হয়। কর্মহীন মানুষের জন্য সরকার নানাভাবে প্রণোদনা দেয়। তালিকা করে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্যাংকের মাধ্যমে যেমন প্রণোদনা দেয়া হয়েছে; তেমনি বিকাশের মাধ্যমে মানুষের হাতে টাকা পৌঁছে দেয়ার উদোগ নেয়া হয়। কিন্তু প্রণোদনা দেয়া শুরু হলে ব্যাপক অভিযোগ আসে প্রণোদনার অর্থ অন্যেরা নিয়ে যাচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, চেয়ারম্যান, স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতার বিরুদ্ধে প্রণোদনার হাজার হাজার টাকা তসরুপের অভিযোগ উঠে। গতকাল এক সেমিনারে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান ‘করোনায় প্রণোদনার টাকা অনেকই পাচ্ছেন না’ এটা স্বীকার করেছেন। প্রশ্ন হলো ঢাকঢোল পিটিয়ে করোনাকালে যে প্রণোদনার শত শত কোটি টাকা দেয়া হলে তা কার পকেটে গেছে? সাধারণ মানুষ না পেলে সরকারের প্রণোদনার টাকা কোথায় যায়?
গতকাল ‘কর্মসৃজন ও গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুজ্জীবন’ শীর্ষক সিরিজ মতবিনিময় সভায় পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেছেন, করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনার অর্থ অনেকেই পাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে অর্থসচিব ও গভর্নরকে ব্যবস্থা নিতে নিতে হবে। আমাদের অর্থ ছিল, অর্থ দিয়েছি। যদি কোনো ব্যাংক কথা না শোনে বা আইন না মানে তাহলে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে প্রণোদনার পর প্রণোদনা, এটা সঠিক মাধ্যম নয়। এজন্য প্রণোদনা ভর্তুকি কমিয়ে যদি পলিসি সার্পোট বেশি দেই ও সংস্কার করি তাহলে রিটার্ন বেশি হবে।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া প্রণোদনা প্যাকেজের এই দ্বিতীয় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। সভায় কি-নোট উপস্থাপন করেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, প্রণোদনার অর্থ আমরা পাঠাচ্ছি। কিন্তু তার বড় একটা অংশ যাচ্ছে না। আমাদের চ্যানেলটা বা ব্যাংকিং, ওখানে আমাদের গলদ। আমি কাউকে দোষ দেব না। এখানে অর্থসচিব আছেন ও গভর্নর আছেন, ব্যাংকগুলো থেকে অনেকেই সহায়তা পাননি। কেন এটা হলো? এখানে আর্থিক খাতের দুই প্রধান ব্যক্তি উপস্থিত আছেন। আইন মানতে তারা বাধ্য, আইনকে অসম্মান করা যাবে না। তাহলে কী করতে হবে? আমাদের তথ্য হলো কেউ কেউ আইন মানছেন না। যদি কোনো ব্যাংক আপনার কথা না মানে তাহলে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে পারেন। কারণ, আমরা সবাই একই পথের যাত্রী।
মন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কৌশলের মূল বার্তাটি হচ্ছে স্বাবলম্বী করা। আমাদের অনেক অর্জন আছে। কিন্তু কাজ করতে হবে আমাদের। আমাদের সবাইকে সার্বিকভাবে নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। তবে আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যাটা হলো মিস টার্গেটিং। এর ফলে আমরা সার্বিকভাবে রিটার্ন কম পাচ্ছি।
এম এ মান্নান বলেন, দেশের এসএমই খাতে টাকা যাচ্ছে না। কারণ, অধিকাংশ উদ্যোক্তার ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। তারা পারিবারিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করেন। তারা ব্যাংকে যান না, আসেনও না। তাদের ব্যাংকের আওতায় আনতে উদ্যোগ নিতে হবে। তা না হলে প্রণোদনা কাজে আসবে না। মানুষ টাকা চায় বা লাগে। কিন্তু সেখানে আমরা প্রণোদনা যাই হোক দিচ্ছি। তার যদি শক্তি না থাকে প্রণোদনা-ভর্তুকি দিয়ে লাভ হবে না। এজন্য প্রণোদনা ভর্তুকি কমিয়ে যদি পলিসি সার্পোট বেশি দেই ও সংস্কার করি তাহলে আমাদের রিটার্ন বেশি হবে। প্রতিনিয়ত প্রণোদনার পর প্রণোদনা এটা সঠিক মাধ্যম নয়। তিনি বলেন, করোনার সেকেন্ড ওয়েভ মোকাবিলায় আমাদের অর্জিত সক্ষমতা ও জনগণের ঐক্য থাকলে করোনা মোকাবিলা করতে পারব। তবে আমরা সার্বিকভাবে উৎরে যাবে বা গেছি সেটা বলব না। খুঁটিনাটি কিছু ব্যর্থতা ছিল। সেটা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। তবে ব্যর্থতার কারণ নিয়ে আমরা খোঁজ নিয়ে দেখব।
প্যানেল আলোচকদের মধ্যে বক্তৃতা করেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহণন প্রকাশ প্রমূখ।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
দুলাল ৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১:৩৬ এএম says : 0
ক্ষমতাসীনদের পকেটে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন