শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর বন্ধ করুন

তিনটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার বিবৃতি : জাতিসংঘ তিন বছরেও মিয়ানমারকে বোঝাতে পারেনি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৫ এএম

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানাস্তরের বিরোধিতা অব্যাহত রেখেছে। গতকাল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও রিফিউজি ইন্টারন্যাশনাল পৃথক পৃথক বিবৃতিতে কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা থেকে বিরত থাকতে বাংলাদেশকে আহŸান জানায়।

সাংবাদিকরা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের থাকার পরিবেশ তৈরিতে ব্যর্থ জাতিসংঘ। তাই ভাসানচরে স্থানান্তর নিয়ে আপত্তি অযৌক্তিক। তিন বছরেও যেহেতু মিয়ানমারকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে, সেই জাতিসংঘের মুখে এমন কিছুই মানায় না।
অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক প্রচারক সাদ হামাদি এক বিবৃতিতে বলেন, রোহিঙ্গাদের পূর্ণ সম্মতি ছাড়া এবং তাদেরকে বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অবহিত না করে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনায় না বসে ভাসানচর বা অন্য কোনো স্থানে স্থানান্তর পরিকল্পনা করা যায় না। এই কার্যক্রম বাতিল করা উচিত। ভাসানচরে পূর্ব অনুমতি ব্যতিত কোনো মানবাধিকার সংস্থা বা সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারেন না, বিষয়টি মানবাধিকারের জন্য উদ্বেগের। জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ভাসানচরের পরিস্থিতি সম্পর্কে পূর্ণ স্বাধীন পর্যবেক্ষণের পরই স্থানান্তরের প্রক্রিয়ার বিষয়ে ভাবা উচিত। অ্যামনেস্টির দাবি, কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থী ইতোমধ্যেই ভাসানচর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন এটি তাদের নিজ পরিবার ও স¤প্রদায় থেকে আলাদা করে দেবে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক নির্বাহী ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা পূর্ণ সবুজ সংকেত না দেয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের কাছে কোনো রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর না করার অঙ্গীকার করেছিলো। যদি সরকার ভাসানচরের বাসযোগ্যতা সম্পর্কে সত্যিকারভাবেই নিশ্চিত থাকে তবে কর্তৃপক্ষের উচিত স্বচ্ছ¡ থাকা ও তাড়াহুড়ো না করা।
রিফিউজি ইন্টারন্যাশনালের মানবাধিকার বিষয়ক সিনিয়র আইনজীবী ড্যানিয়েল সুলিভান রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনাকে অদূরদর্শী ও অমানবিক পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন। সংস্থাটি ভাসানচরকে ‘গণআটককেন্দ্র’ বলে অভিহিত করে বলেছে, এই দ্বীপে রোহিঙ্গাদের সাইক্লোনসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হওয়ার বড় ধরনের আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে জাতিসংঘ বলেছে তারা সরাসরি রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে যুক্ত নয়। সরকারের অনুমতি পেলে নিরাপদ স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চায়। ইউরোপিয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনসজি তিরিংক বলেছেন, ভাসানচরে জাতিসংংঘের পূর্ণ প্রবেশাধিকার ব্যতীত স্থানান্তর নিয়ে কোনো মন্তব্য করবে না তারা।
জাতিসংঘ ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করার সরকারের উদ্যোগের বিরোধিতা করছে বলে দাবি করে আসছিলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অবশেষে গত বুধবার জাতিসংঘ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অনেক আগেই ভাসানচরের সার্বিক মূল্যায়নের প্রস্তাব দেয়া হয় সরকারকে। তবুও এই প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। সরকারের অনুমতি পেলে মূল্যায়নের জন্য ভাসানচর যেতে চায় জাতিসংঘ। বিবৃতিতে, ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরে জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত না করার অভিযোগে ক্ষোভ জানানো হয়। বিবৃতিতে জাতিসংঘ আরো জানায়, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থান্তান্তর হতে হবে স্বেচ্ছায়। নিশ্চিত করতে হবে মৌলিক সব অধিকার।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Nurun Nabi ৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:১৯ এএম says : 0
How many countries around Bangladesh supported UN Draft L.34 on Nov 18th. What about India.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন