বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

শেষ ঘুঁটি ব্রেক্সিট বাণিজ্য আলোচনায়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ব্রেক্সিট-উত্তর বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। রবিবার ব্রাসেলসে যুক্তরাজ্যের প্রধান ব্রেক্সিট আলোচক রবার্ট ফ্রস্ট তার ইইউ প্রতিপক্ষ মাইকেল বার্নিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বৈঠকের আগে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে মতপার্থক্য কমিয়ে আনার ব্যাপারে দুই তরফ থেকে আশা প্রকাশ করা হয়। এখন পর্যন্ত আলোচনা যত দূর গড়িয়েছে, তা আশাব্যঞ্জক নয়। শেষ পর্যায়ে এসে দুই পক্ষই একে অন্যের কাছ থেকে যতটা সম্ভব ছাড় আদায় করে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এই আলোচনা থেকে কেউই বড় কোনো অগ্রগতি আশা করছে না, আবার হাল ছাড়তেও রাজি নয় কোনো পক্ষ। শুক্রবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন এ নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। কিন্তু তাদের সেই আলোচনা ফলপ্রস‚ না হওয়ায় রবিবার দুই পক্ষকে আবার মুখোমুখি হতে হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ-পরবর্তী সময়ে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বছর জুড়ে অচলাবস্থা চলে। জনসন ও লিয়েন শনিবার জানান, জটিল কিছু বিষয়ে তারা মতৈক্যে পৌঁছাতে না পারলেও বৈঠক থেকে কিছু অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দুই পক্ষের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি এখনো নাগালের বাইরে রয়েছে। তাদের দুজনের মধ্যে সোমবার আবার বৈঠক হবে। চলতি মাসে খুব বেশি সময় হাতে নেই। এই সময়ের মধ্যে তারা বাণিজ্যচুক্তিতে পৌঁছাতে না পারলে চুক্তি ছাড়াই ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যিক সম্পর্কের যে অবসান ঘটবে তা নয়, ব্রিটেনে ২৭ জাতি থাকাকালে দুই পক্ষ যেসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করত সেগুলো থাকবে না। আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইমন কভেনি শনিবার তার দেশের সানডে ইন্ডিপেনডেন্ট পত্রিকায় বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে। কারণ এর সঙ্গে সব পক্ষের স্বার্থ জড়িত। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন বলেছেন, একটি বাণিজ্য চুক্তিতে একমত হওয়ার ব্যাপারে তিনি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী। ইইউ দেশগুলোর অন্যতম চাওয়া ব্রিটিশ জলসীমায় মাছ ধরার সুযোগ অবারিত রাখা। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, বিচ্ছেদের পর ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিসের ভ‚মিকা কি হবে? চুক্তি না হলে নতুন করে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ এবং দুই তরফে কর আরোপ শুরু হবে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ তার দেশের মৎস্যশিল্প যাতে ব্রিটিশ পানিসীমায় যথাযথ সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করতে চান। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি ব্রেক্সিট বাস্তবায়িত হলেও পরবর্তী সময়ে দুই পক্ষের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নির্ধারণ করতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল। সে সময় এখন শেষ হওয়ার পথে। চুক্তি না হলে দুই পক্ষকেই একে অন্যের আরোপ করা শুল্ক দিতে হবে। যেসব বিষয়ে সমঝোতা হয়নি, তার মধ্যে আছে মৎস্য আহরণ, ব্যবসার জন্য ভর্তুকি দেওয়ার নিয়ম এবং কীভাবে চুক্তিটি বাস্তবায়িত হবে তার খুঁটিনাটি। টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের পক্ষের এক আলোচক বলেছেন, চুক্তি নিয়ে এ সপ্তাহের শুরুতে ইতিবাচক হিসাবে দেখা গিয়েছিল। তবে ইইউর মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে ১০ বছর ব্রিটিশ পানিসীমায় থাকতে দেওয়ার দাবিটি আলোচনার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। ফ্রান্সের ইউরোপবিষয়ক মন্ত্রী বলেছেন, তারা চুক্তিতে সন্তুষ্ট না হলে ভেটো দেবেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ দেশের মৎস্যশিল্প যাতে ব্রিটিশ পানিসীমায় যথাযথ সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করতে চান। এর আগে ইইউর সঙ্গে সংঘাত এড়াতে যুক্তরাজ্য ব্রেক্সিট চুক্তির শর্ত ভেঙে আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা ইন্টারনাল মার্কেট বিল পার্লামেন্টে নিয়ে আসে। এ আইনের ফলে জনসন সরকার ব্রেক্সিট চুক্তির কিছু অংশ বাতিল করার ক্ষমতা পায়। ইইউর মামলার হুমকির মুখে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্স সেপ্টেম্বরে বিতর্কিত এই ইন্টারনাল মার্কেট বিল ৩৪০-২৫৬ ভোটে অনুমোদন করে। বিলের উদ্দেশ্য ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ হয়ে যাওয়ার পর উত্তর আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের বাদবাকি অংশের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য সুরক্ষিত রাখা। ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যৎ বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা ভেঙে পড়লেও এই বিল তাদের সুরক্ষা দেবে বলে জনসন সরকার আশাবাদ ব্যক্ত করে। সূত্র : টেলিগ্রাফ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mustafizur Rahman Ansari ৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ১:৪০ এএম says : 0
Wait and see
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন