নরসিংদীর একজন পাপিয়ার জন্য সারা দেশে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। কার সাপোর্টে পাপিয়া দলে ঢুকে ছিল? কে দিয়েছিল পাপিয়াকে যুব মহিলা লীগের পদ? গত রোববার নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এক ভার্চুয়াল বক্তৃতায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এই প্রশ্নমূলক বক্তৃতা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয় নরসিংদীতে।
নরসিংদীর রাজনৈতিক অঙ্গনে এই প্রশ্ন নিয়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়। মুখ থেকে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে ওবায়দুল কাদেরের এই প্রশ্ন। আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা বলছেন প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে বা যারাই পাপিয়াকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে দলে ঢুকিয়ে থাকুক তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করা উচিত। কোন কোন নেতা বলছেন, ওবায়দুল কাদেরের এই প্রশ্নের জবাব তার ধরাছোঁয়ার মধ্যেই রয়েছে। তিনি ইচ্ছে করলেই নরসিংদী থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করতে পারেন। পাপিয়া কাদের দ্বারা রিক্রুটেড হয়েছে, তার দালিলিক প্রমাণ নরসিংদীর জনগণের হাতেই রয়েছে। যারা প্রথম তাকে রিক্রুট করেছে তাদের সাথে পাপিয়ার বহুসংখ্যক ছবি রয়েছে।
আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন পাপিয়া ও তার স্বামী সুমনকে প্রথম রিক্রুট করেছিল মেয়র লোকমান হোসেন। সুমন ছিল সাবেক মেয়র লোকমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ও মানিক হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি। মেয়র লোকমানের সাথে মানিক হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পর সে দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকে। পরে তারা আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসে।
এর কিছুদিন পরেই মেয়র লোকমান পাপিয়ার সাথে সুমনের বিয়ে দেয়। এরপর থেকে পাপিয়া ও সুমন জুটি লোকমানের মৃত্যু পর্যন্ত তার আশ্রয় থাকে এবং লোকমানের মাধ্যমে দল ও দলের নেতাকর্মীদের সাথে তাদের পরিচয় ঘটে। দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দলে মেয়র লোকমান নিহত হবার পর পাপিয়া ও সুমন মেয়র লোকমানের ছোট ভাই বর্তমান মেয়র কামরুজ্জামান কামরুলের আশ্রয়ে চলে যায়। মেয়র কামরুলের সাথে পাপিয়া ও সুমনের দৈনন্দিন চলাফেরার অনেক ছবি রয়েছে। মেয়র কামরুলের আশ্রয়ে থেকে পাপিয়া নরসিংদী শহরের মহা দাপটে ঘুরে বেড়াতে থাকে।
নরসিংদী শহরের বিভিন্ন রাস্তাঘাটে তার স্বামীর মোটরসাইকেলের পিছনে বসে বেপরোয়াভাবে শহরের রাস্তাঘাটে ঘোরাফেরা করতে থাকে। এই ঘোরাফেরা করার সময় কোন ব্যক্তি, কোন রিকশা বা কোন যানবাহনের সাথে সামান্য কিছু টক্কর লাগলে কিংবা জটে পড়লে পাপিয়া মোটরসাইকেল থেকে নেমে যাকে তাকে চড় থাপ্পড় কিল-ঘুষি-লাথি মারতো। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে তার অবৈধ পিস্তল উঁচিয়ে মারধর করতো। এমন কয়েকটি ঘটনা নিয়ে লেডি মাস্তান শিরোনামে দৈনিক ইনকিলাবের প্রথম পাতায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেদিন রাতেই্ পাপিয়া নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একটি কমিটি গঠন করে বিষয়টি তদন্ত করেন তবে অতি সহজেই বেরিয়ে আসবে কে পাপিয়ার মত একজন বাজে মহিলাকে যুব মহিলা লীগের নেত্রী বানিয়েছে। কাদের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে পাপিয়া আওয়ামী নেতাদের এতটা ঘনিষ্ঠতা অর্জন করেছে।
যাদের কারণে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি এতটা ক্ষুন্ন হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা ও নরসিংদী পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর রিপন সরকার জানান, পাপিয়া পশু মন যখন মেয়র লোকমানের আশ্রয়প্রার্থী হয়ে থাকে তখন নরসিংদী সদরের বর্তমান এমপি কর্নেল হিরু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ছিলেন না। দলের মধ্যে তার কোন প্রভাবও ছিল না। অতএব কর্নেল হিরুর বিরুদ্ধে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তারাই পাপিয়াকে দলের নেত্রীও বানিয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন