তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান তার দেশের বিরুদ্ধে আমেরিকা ও ইউরোপের নিষেধাজ্ঞার নিন্দা করে বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞার কারণে দুই পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে; এতে কেউ লাভবান হবে না। শুক্রবার তুরস্কের ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট পার্টি বা একে পার্টির সদস্যদের এক সমাবেশে তিনি একথা বলেন। এরদোগান বলেন, আমেরিকা ও ইউরোপের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক নষ্ট করা ঠিক হবে না। এসময় তিনি ইউরোপ ও আমেরিকার রাজনীতিকদের তুর্কি-বিরোধী প্রভাবশালী লবি ভেঙে দেয়ার আহবান জানান। এরদোগান বলেন, এমন কোনো সমস্যা নেই যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব নয়। বৃহস্পতিবার এক সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা তুরস্কের কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রশ্নে একমত হন। পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তেল-গ্যাসের অনুসন্ধান করতে গিয়ে তুরস্ক প্রতিবেশী গ্রিস ও সাইপ্রাসের সঙ্গে দ্ব›েদ্ব জড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় ফ্রান্সের মতো ইউরোপের প্রভাবশালী দেশের সঙ্গেও তুরস্কের দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। এদিকে, রাশিয়া থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার জন্য তুরস্কের বিরুদ্ধে আমেরিকা যে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে তার সমালোচনা করেছেন এরদোগান। তিনি বলেন, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা ন্যাটো সদস্যদের দেশের জন্য অপমানজনক। অপর এক খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনায় তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার খুব কাছাকাছি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন দুই কর্মকর্তাসহ চারটি সূত্র বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এটির সত্যতা নিশ্চিত করেছে। যেকোনো দিন তুরস্কের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো। আঙ্কারার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিলে তুরস্কের সঙ্গে ন্যাটো জোটের দূরত্ব আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়ার সঙ্গে ২৫০ কোটি ডলারের সামরিক চুক্তি করে তুরস্ক। এই চুক্তির আওতায় রাশিয়ার কাছ থেকে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনা নিশ্চিত করে তুরস্ক। এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহারের মাধ্যমে জঙ্গিবিমান, ক্রুজ এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সহজে ধ্বংস করা যায়। এছাড়া ভূমিতে স্থাপিত যেকোনো স্থাপনার বিরুদ্ধেও এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা অত্যন্ত কার্যকরী। গত বছরের জুলাই মাসে তুরস্কের কাছে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কয়েকটি চালান সরবরাহ করে রাশিয়া। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই তুরস্ককে এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনা এবং চালু করার বিরুদ্ধে সতর্ক করে আসছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার কাছে মার্কিন এফ-৩৫ বিমানের দূর্বলতা প্রকাশ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই মূলত তুরস্কের ওপরে এই ব্যবস্থা না কেনার চাপ সৃষ্টি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আনাদোলু, রয়টার্স,পার্সটুডে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন