শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চার্জশিট দু’একদিনের মধ্যে অভিযুক্ত ১৫

মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৫ এএম

পুলিশের গুলিতে সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালতে জমা দিতে যাচ্ছে র‌্যাব। চার মাসের বেশি সময় আলোচিত মামলাটি তদন্তের পর দু’একদিনের মধ্যে কক্সবাজার আদালতে প্রতিবেদনটি দাখিল করার কথা রয়েছে। হত্যার ঘটনা তদন্ত নেমে র‌্যাব এখন পর্যন্ত ১৫ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে। যার মধ্যে ১৪ জন র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। র‌্যাবের দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ গত রাতে দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, আদালতের নির্দেশে সিনহা হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব। এরই মধ্যে মামলার অভিযোগপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। যেকোনো সময় তা আদালতে হস্তান্তর করা হবে।

র‌্যাবের তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার, বাহারছড়া ক্যাম্পের পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, টেকনাফ থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য ছাড়াও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-এপিবিএনের তিনজন এবং স্থানীয় তিনজনসহ মোট ১৪ জনকে অভিযুক্তের পর গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি একজনের ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যায়নি। গত ৩ জুলাই ‘জাস্ট গো’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ট্রাভেল শো ডকুমেন্টারির শুটিংয়ের জন্য তিনজন সহযোগীসহ কক্সবাজারের নীলিমা রিসোর্টে ওঠেন মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ। এই খবর পৌঁছায় টেকনাফের তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমারের কাছে। তখন থেকেই ওসি প্রদীপ অধীনস্থ পুলিশ সদস্যদের বলেন, ভিডিও পার্টিকে এখান থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে, যেকোনো মূল্যে। এরপর থেকেই সিনহাকে নজরদারিতে রাখেন পরিদর্শক লিয়াকত ও এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত।
গত ৩১ জুলাই সকালে একটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘বৃক্ষরোপণ’ অনুষ্ঠান শেষে ওসি প্রদীপকে জানানো হয়, মেজর সিনহা রাশেদ প্রাইভেটকার নিয়ে টেকনাফের শামলাপুর পাহাড়ে গেছেন। এ সময় সোর্সের মাধ্যমে বাহারছড়া ক্যাম্পের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী সিনহার প্রতি নজর রাখতে থাকেন। ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফ থেকে কক্সবাজারের দিকে আসার পথে বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে তল্লাশির নামে গাড়ি থেকে নামিয়ে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে।

এ ঘটনায় ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ নয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে, যিনি সিনহাকে গুলি করেছিলেন। টেকনাফ থানার ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাশকে করা হয়েছে ২ নম্বর আসামি।

এজাহারে বলা হয়েছে, গুলি করার আগে লিয়াকত তার সঙ্গে ফোনে পরামর্শ করেছিলেন। ওসির ‘প্ররোচণা ও নির্দেশনাতেই’ লিয়াকত ঠান্ডা মাথায় সিনহাকে গুলি করে হত্যা করেন। পরে প্রদীপ ঘটনাস্থলে গিয়ে সিনহার ‘মুখমন্ডল ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পায়ের জুতা দিয়ে আঘাত করে’ বিকৃত করার চেষ্টা করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। মামলার তিন নম্বর আসামি করা হয়েছে টেকনাফ থানার এসআই দুলাল রক্ষিতকে, যিনি সিনহার মৃত্যুর পর মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা করেন। এরপর অভিযুক্ত সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তদন্তে নেমে র‌্যাব হত্যার ঘটনায় স্থানীয় তিনজন ছাড়াও এপিবিএন এবং প্রদীপের দেহরক্ষীসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করে। যে ১৪ জন অভিযুক্ত জেলে রয়েছেন তারা হলেন-বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
মোঃ দুলাল মিয়া ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১:৪৫ এএম says : 0
যদিও মেজর সিনহা চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু একজন মেজর কতে পড়া লেখা করতে হয় একজন মেজর হতে হলে। একটি নিরঅপরাধ লোকের পতি এই দরনের কাজ করেছে মরার পরেও বোড জুতার আঘাত ভাষা নাই কি বলবে।আশা করি জনগণের সামনে তাদের গুলি করে হত্যার পর ঐ ভাবে বোড জুতার আঘাত করবে।
Total Reply(0)
Md Kabir ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১:৫৮ এএম says : 0
সঠিক বিচার হবে তো? বিচার টা যেন সঠিক হয়, দৃষ্টান্ত স্হাপনের জন্য। কোন হ্যালো যেন বিচার কাজকে বাধাগ্রস্ত না করে।
Total Reply(0)
Md. Al Amin ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৫০ এএম says : 0
এভাবেই বছর কে বছর পার হয়ে যাবে কিন্তু বিচার কি হবে ?
Total Reply(0)
জুয়েল ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৫১ এএম says : 0
দ্রুত এই হত্যাকান্ডের বিচার হওয়া দরকার
Total Reply(0)
হেদায়েতুর রহমান ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৫২ এএম says : 0
আমরা সাধারণ মানুষ এই অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করছি
Total Reply(0)
মোঃ হারুনুর রশীদ ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৪৫ এএম says : 0
নির্দেশক কে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি হওয়া উচিত।
Total Reply(0)
মোঃ হারুনুর রশীদ ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৪৬ এএম says : 0
নির্দেশক কে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি হওয়া উচিত।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন