শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভারতের বিক্ষুব্ধ কৃষকরা আজ অনশনে যাচ্ছেন : টোল সংগ্রহে বাধা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৪ এএম

শনিবার দিল্লি সীমান্তে প্রতিবাদের ১৭ তম দিনে বিক্ষোভরত কৃষকরা হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের পশ্চিম অংশে টোল প্লাজায় ফি আদায় বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আন্দোলন আরও তীব্র করার জন্য তারা আজ সোমবার একদিনের অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।

শনিবার সকালে কৃষি আইনের স্বপক্ষে ‘সুফল’ তুলে ধরেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হল না। বরং আন্দোলন আরও জোরদার করতে অনশন করার সিদ্ধান্ত নিলেন কৃষক সংগঠনের নেতারা। এদিন দিল্লি-হরিয়ানার সিংঘু সীমান্তে সাংবাদিক সম্মেলনে সংযুক্ত কিষান আন্দোলনের নেতা কানওয়ালপ্রীত সিং পান্নু জানান, নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে কৃষক সংগঠনের নেতারা সোমবার সকাল আটটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সিংঘু সীমান্তে অনশন করবেন সকল কৃষক নেতারা। গতকাল সকাল থেকেই রাজস্থানের শাহাজাহানপুর থেকে কয়েক হাজার চাষিরা ‘দিল্লি চলো’ অভিযান শুরু করেন। এ সময় জয়পুর-দিল্লি হাইওয়ে সম্পূর্ণ তাদের দখলে চলে যায়। ভারতের অন্যান্য প্রান্তের কৃষকরাও বিক্ষোভে সামিল হতে আসছেন। সকলে মিলে আগামিদিনে কৃষক আন্দোলনকে আরও জোরদার করা হবে বলে জানিয়ে কৃষক নেতা পান্নু অভিযোগ করেন, বিক্ষোভ দুর্বল করে দেয়ার চেষ্টা করেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। কিন্তু বিক্ষোভরত কৃষকরা সেই চেষ্টা সফল হতে দেবেন না। আন্দোলন যাতে শান্তিপূর্ণভাবেই হয়, সেদিকে পুরোপুরি নজর দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কৃষকদের আন্দোলনের মঞ্চকে যাতে ‘অপব্যবহার’ না করা হয়, আন্দোলনরত কৃষকদের তা নিশ্চিত করার কথা বলেছে কেন্দ্র। গত কয়েকদিনে টিকরি সীমান্তে কয়েকজন বিক্ষোভকারীর ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। তাতে বিভিন্ন ধারায় অভিযুক্তদের মুক্তির দাবি তোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর দাবি করেন, বিক্ষোভের পরিবেশ বিনষ্ট করতে কৃষকদের ছদ্মবেশে ‹সমাজবিরোধী› এবং ‹বামপন্থী এবং মাওবাদী›-রা ষড়যন্ত্র করছেন। তারইমধ্যে পান্নু জানিয়েছেন, তারা এখনও কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি। তবে সবার আগে কৃষি আইন প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা করতে হবে। তিনি বলেন, ‘যদি সরকার আলোচনা করতে চায়, আমরা তৈরি। তবে আমাদের মূল দাবি থাকবে তিনটি আইন প্রত্যাহার। তারপরই আমাদের অন্যান্য দাবির বিষয়ে আলোচনা করব।’

গতকাল দিল্লি-সিঙ্ঘুু সীমানায় এক কৃষক বলেন, ‘শনিবার রাতে আমরা উপস্থিত হয়েছি। রাজস্থান, হরিয়ানা, পঞ্জাব থেকে আরও অনেক কৃষক আসছেন। ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে কৃষকদের নিয়ে কম করে ৫০০টি ট্রলি আসার কথা।’ সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, জাতীয় সড়ক যাতে বেশি ক্ষণ অবরুদ্ধ না থাকে, সে জন্য সেখান থেকে কৃষকদের সরাতে ৪ হাজার পুলিশের বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গুরুগ্রাম পুলিশের এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘আমরা সম্প‚র্ণ প্রস্তুত। এই বিক্ষোভ কোনও ভাবেই যাতে বড় আকার নিতে না পারে, সেই চেষ্টা আমরা করব।’
শনিবার কৃষকেরা জাতীয় সড়ক অবরোধ করবেন ভেবে বিরাট নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু তার বদলে কর্মসূচি অনুযায়ী কৃষক সংগঠনগুলি পাঞ্জাব, হরিয়ানা থেকে তেলঙ্গানা, ওড়িশার মতো বিভিন্ন রাজ্যের টোল প্লাজা দখল করে টোল আদায় বন্ধ করে দেন। অম্বানী-আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভের কর্মসূচি মেনে অনেক জায়গায় রিলায়্যান্সের পেট্রল পাম্পের সামনে অবরোধ হয়। ইতিমধ্যেই কৃষি আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে একটি সংগঠন। আগামী বুধবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে তার শুনানি। কৃষিমন্ত্রণালয় দাবি করেছে, হরিয়ানার একগুচ্ছ সংগঠন কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমরের সঙ্গে দেখা করে নয়া আইন তৈরির জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে। কিন্তু দিল্লির সীমানায় আন্দোলনকারী নেতাদের দাবি, এ সব বিজেপির সাজানো।

এরই মধ্যে, ক্রমবর্ধমান কৃষক বিক্ষোভে রাশ টানতে বিজেপি’র অন্দরমহল থেকেও চাপ তৈরি হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে ফের আলোচনায় বসতে পারে মোদি সরকার। শনিবার প্রধানমন্ত্রী কৃষি আইনের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলেছিলেন, ‘এই কৃষি আইনের ফলে কৃষকরা উপকৃত হবেন।’ কিন্তু তাতে কৃষকরা ভরসা রাখতে পারেননি। সূত্র : টিওআই।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন