টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় দুই শিশু অপহরণের পর হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদন্ড, তিনজনের আমৃত্যু ও তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাউদ হাসান এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- ধামরাই উপজেলার চরহাট গ্রামের শামসুল হকের ছেলে বাহাদুর মিয়া, একই গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে মিল্টন, মির্জাপুর উপজেলার সুজালিলজা গ্রামের বাছেদ মিয়ার ছেলে রনি মিয়া। আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হলো- মির্জাপুর উপজেলার আমরাইল তেলিপাড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে আবদুল মালেক, উপজেলার শশ্বধরপট্টি গ্রামের মমরেজের ছেলে জহিরুল ইসলাম, চরচৌহাট গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে শাহনুর শাহা। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলো- চরচৌহাট গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে শামীম মিয়া, একই গ্রামের তাজেল মিয়ার ছেলে আরিফ ও মির্জাপুরের আমরাইল তেলিপাড়া গ্রামের জব্বার মল্লিকের ছেলে জাকির হোসেন। এদের মধ্যে ধামরাই উপজেলার চরচৌহাট গ্রামের তাজেল মিয়ার ছেলে আরিফ (২৮) পলাতক রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্তি পিপি রফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি বিকেলে মির্জাপুর উপজেলার হারিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেখতে যায় ঢাকার ধামরাই উপজেলার চরচৌহাট এলাকার প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে শাকিল (১০) ও একই গ্রামের প্রবাসী আবু বক্করের ছেলে ইমরান (১১)। তিনি আরও জানান, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেখতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন চতুর্থ শ্রেণির ওই দুই শিক্ষার্থী। পর দিন ২৮ জানুয়ারি মোবাইল ফোনে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পরে ২৯ জানুয়ারি রাতে মির্জাপুর উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের একটি লেবু বাগান থেকে নিখোঁজ ওই দুই শিশুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। ৩০ জানুয়ারি শিশুর মা জ্যোৎস্না বেগম বাদী হয়ে মামলা করেন। পরে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ৮ জুন আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত। এর পর ৯ আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। বাকি এক আসামি এখনও পলাতক রয়েছেন। ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জহিরুল ইসলাম বলেন, এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে আসামিরা জড়িত নয়। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে আমরা আপিল করব। মামলার বাদী জ্যোৎস্না বেগম বলেন, রায়ে আমি সন্তুষ্ট। দ্রত এ রায় কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন