রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ কেনার কারণে সম্প্রতি তুরস্কের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এ বিষয়ে আলোচনা করতে গ্রিসে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত গ্রিসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে যখন এথেন্সের সঙ্গে আঙ্কারার সম্পর্কে উত্তেজনা চলছে তখন এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।
গতকাল এথেন্সে গ্রিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোস ডেনডিয়াসের সঙ্গে সাক্ষাতে এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেফরি পিয়াট। সাক্ষাতে আমেরিকার সঙ্গে গ্রিসের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগর পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন দুই কূটনীতিক।
দুই বছরেরও বেশি সময় আগে তুরস্ক রাশিয়ার কাছ থেকে এই ব্যবস্থা কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় থেকেই আমেরিকা এর বিরোধিতা করে আসছে। তবে এরদোয়ান সরকার প্রথম থেকেই মার্কিন বিরোধিতাকে উপেক্ষা করে এসেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের লজিস্টিক ও সমরাস্ত্র খাতকে টার্গেট করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর আগে গত বছর ট্রাম্প প্রশাসন তুরস্ককে এফ-৩৫ জঙ্গি বিমান সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছিল।
মার্কিন সরকার তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের চেয়ারম্যান ইসমাইল দামির এবং এই শিল্পের আরও তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা তুরস্কের খাতগুলোর জন্য আমেরিকা থেকে কোনকিছু আমদানি করা যাবে না এবং আমেরিকায় থাকা এসব খাতের সম্পদ জব্দ করা হবে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার কারণে আমেরিকার সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা কোনও কাজে আসবে না। কিন্তু এতে বিপরীত ফল হবে; সম্পর্কের ক্ষতি হবে।
এছাড়া তুরস্কের মিলিটারি প্রকিওরমেন্ট এজেন্সি এসএসবির প্রধান ইসমাইল ডেমির জানিয়েছেন, এর ফলে তুরস্কের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে কোনো ক্ষতি হবে না। তুরস্ক নিজের দেশে সম্পূর্ণ স্বাধীন প্রতিরক্ষা শিল্প গড়ে তুলবেই।
আঙ্কারা আগেই জানিয়েছিল, তারা প্রথমে মার্কিন প্যাট্রিয়ট মিসাইল সিস্টেম কিনতে চেয়েছিল। কিন্তু আমেরিকা তা বিক্রি করতে রাজি হয়নি। তখন তারা রাশিয়ার সিস্টেম কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। এছাড়া গ্রিসও রাশিয়ার তৈরি ক্ষেপনাস্ত্র কিনেছে। তাদেরকে আমেরিকা কিছু বলেনি। অথচ, তুরস্কের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো। এটা দুমুখো নীতি।
প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার মাস খানেক আগে ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত নিলেন। অবশ্য এ ক্ষেত্রে বাইডেনও মনে করেন, তুরস্ক রাশিয়ার মিসাইল সিস্টেম কিনে ভুল কাজ করেছে। গত অক্টোবরে তুরস্ক প্রথমবার রাশিয়ার মিসাইল পরীক্ষা করে দেখে। তখনই আমেরিকা তাদের সর্তক করেছিল। সূত্র: পার্সটুডে, রযটার্স, এপি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন