করোনা চিকিৎসা দিতে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, একদিকে সরকার করোনার তথ্য গোপন করে অতি সামান্য আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য নেতা-মন্ত্রীরা নিরাপদে আইসোলেশনে থেকে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন। আর সাধারণ মানুষ বিনা চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন, হাসপাতালের বেড ইত্যাদির অভাবে কাতরাচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকাসহ কোথাও আইসিইউ খালি নেই মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, চিকিৎসার এমন করুন অবস্থা যে, অক্সিজেনের অভাবে মায়ের কোলেই সন্তান মারা যাচ্ছে। আপনারা ঠাকুরগাঁওয়ে দেখেছেন বাচ্চা দুইটা কিভাবে মারে কোলে মারা গেছে। শুধু কি তাই, বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে করোনা রোগীকে ফেরত দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে জ্যামিতিক হারে। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সরকারের কোন দায়িত্ব নেই। সরকার যেন চোখ বুজে ধ্যান করছে।
অটো-পাস দিয়ে একটি প্রজন্মকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়া হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বিকল্প পন্থা অবলম্বন করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় চালু রেখেছে। অনলাইন অথবা অন্য কোন বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অব্যাহত রেখেছে। শিক্ষার হাব নামে খ্যাত দেশগুলো যেমন গ্রেট ব্রিটেন, ভারত, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা বা আমেরিকাসহ কোন দেশেই আজকের বাস্তবতায় অটো পাস দেওয়া হয়নি। সকল দেশেই শিক্ষার্থীর মেধার মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষার বিকল্প শুধু পরীক্ষাই রাখা হয়েছে। অন্য কিছু নয়। কিন্তু বাংলাদেশ চলছে সম্পূর্ণ উল্টো পথে-উল্টো রথে। সব চলছে করোনা ভাইরাসের অজুহাতে। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করে রাখা রয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার সারাক্ষণ ডিজিটাল বাংলাদেশের শ্লোগান দিচ্ছে তাহলে বাসায় থেকে কিংবা অন্য কোনো বিকল্প পদ্ধতিতে কিভাবে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে পারে সে ব্যাপারে সরকার কি আদৌ কোন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে? তা না করে অটো পাশ আর ফটোকপির পাশ এসব করে সরকার একটি প্রজন্মকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দেশের লক্ষ কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কোনো ভিশন নেই বলেই লাখ লাখ শিক্ষার্থী অন্ধকারের অতল গহব্বরে তলিয়ে যাচ্ছে। অথচ অফিস, আদালত, শিল্প, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন সবকিছুই খুলে দেয়া হয়েছে।
বিজয় দিবসের ভোর রাতে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের বাসায় হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে রিজভী বলেন, যারা ক্ষমতার প্রশ্রয়ে অন্যের বাড়িতে হামলা চালায় তাদেরকে কাপূরুষ ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। তবে এরই মধ্যে ইশরাক এই সরকারের আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। তাকে ভয় দেখানোর জন্য রাতের অন্ধকারে হামলা করা হয়েছে। তবে হামলা-মামলা দিয়ে ভয় দেখানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, সেলিমুজ্জামান সেলিম, এম এ খালেক, মহানগর নেতা নবী উল্লাহ নবী প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন