ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের একজন সিনিয়র উপদেষ্টা গতমাসে ইহুদিবাদী ইসরাইল সফর করেছেন। ইসলামাবাদ তেল আবিবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ‘প্রচণ্ড চাপ’ উপেক্ষা করছে বলে যখন ইমরান খান জোর গলায় বলে এসেছেন তখন এ গুজব ছড়িয়ে পড়ল।
ওই উপদেষ্টার নাম প্রকাশ করা না হলেও ইমরান খানের সিনিয়র উপদেষ্টা জুলফি বুখারি ইসরায়েল সফরের কথা অস্বীকার করে ‘সোশ্যাল মিডিয়া প্রোপাগান্ডা’ বলে দাবি করেছেন। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও টিভি এখবর জানিয়েছে।
ইসরাইলি মন্ত্রিসভার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ‘ইসরাইল হাইয়োম’সহ আরো কিছু পত্রিকা দাবি করেছে, গত ২০ নভেম্বর ইমরানের ওই উপদেষ্টা ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি বিমানে ইসলামাবাদ থেকে লন্ডন গেছেন এবং পরে সেখান থেকে একই এয়ারলাইন্সের বিএ১৬৫ নম্বর ফ্লাইটে তেল আবিবে পৌঁছেছেন। ইসরাইলি পত্রিকাগুলো ইমরান খানের ওই উপদেষ্টার নাম প্রকাশ করেনি।
ওই উপদেষ্টা কয়েকদিন তেল আবিবে অবস্থান করে বেশ কয়েকজন ‘পদস্থ’ ইসরাইলি কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসব সাক্ষাতে তিনি ইসরাইলি কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, ইমরান খান তেল আবিবের সঙ্গে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ‘কৌশলগত সিদ্ধান্ত’ নিয়েছেন।
কথিত এই সফরের খবর জেরুজালের পোস্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হলেও পরে তা সরিয়ে ফেলা হয় এবং দৈনিকটির প্রিন্ট ভার্সনে খবরটি ছাপা হয়নি।
লন্ডনভিত্তিক ইসলামিক থিওলজি অব কাউন্টার টেরোরিজমের (আইটিসিটি) প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক নূর দাহরি দাবি করেছেন, এই সফর অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেছেন, ইমরান খানের ওই উপদেষ্টা তার ব্রিটিশ পার্সপোর্ট ব্যবহার করে তেল আবিব সফর করেন। আরব দেশগুলোর সঙ্গে পাকিস্তানের বর্তমান শীতল সম্পর্ক থেকে ইসলামাবাদকে বের করে আনার পাশাপাশি আরও বেশি কিছু ‘অর্জনের’ বিনিময়ে ইমরান খান ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে রাজি হয়েছেন বলে তিনি জানান।
পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত গবেষক দাহরি বলেন, পাক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তেল আবিবে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ইয়োসি কোহেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার কাছে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের এক গোপন বার্তা পৌঁছে দেন।
এরপর তিনি ইসরাইলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বার্তা পৌঁছে দেন। দাহরি বলেন, “তুর্কি ব্লক থেকে বেরিয়ে এসে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য পাকিস্তানের ওপর আরব দেশগুলোর প্রচণ্ড চাপ রয়েছে।”
গত মাসে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দাবি করেন, ফিলিস্তিনি জাতির জন্য কোনো গ্রহণযোগ্য সমাধান ছাড়া তিনি ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে রাজি হবেন না। অনেকেই ধারণা করছেন, ইমরান খান যে চাপের কথা বলেছেন তা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পক্ষ থেকে এসেছে। সূত্র : পাক অ্যাফেয়ার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন