শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় নেকীর কাজ জুমার খুৎবার বয়ানে পেশ ইমাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৪৭ পিএম

আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত প্রাপ্ত হয়ে বান্দা যদি শুকরিয়া আদায় করে তাহলে এটাও তার জন্য নেকীর কাজ" সুতরাং আমাদের উচিত আল্লাহ তায়ালার নেয়ামতের বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করা এবং মুসিবতের সময় সবর করা। আজ নগরীর বিভিন্ন মসজিদে খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমামরা এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হয়। মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজমে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে। 

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি এহসানুল হক জিলানী আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা বান্দার উপর অসংখ্য-অগণিত নেয়ামত বরাদ্দ করে রেখেছেন। পবিত্র কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন" যদি তোমরা আল্লাহর নেয়ামত গুলোকে গণনা করো গণনা করে শেষ করতে পারবে না" আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত প্রাপ্ত হওয়ার পর বান্দার ওয়াজিব হলো নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা। এজন্যই আল্লাহ তা'য়ালা পবিত্র কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেন "যদি তোমরা আল্লাহপাকের নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করো অবশ্যই তিনি তোমাদের ওপর নেয়ামতকে আরো বৃদ্ধি করে দিবেন"। আল্লাহ তায়ালার সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ নেয়ামত হল বান্দার জন্য ঈমান গ্রহণ করা। আরো অসংখ্য অগণিত নিয়ামত যেমন সুস্থতা, ধন-সম্পদ, সন্তান ইত্যাদি বিষয়গুলোর ব্যাপারে বান্দার প্রত্যেকটা মুহূর্তে শুকরিয়া আদায় করা উচিত। আর একজন মুমিন বান্দা আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত পেয়ে শুকরিয়া আদায় আর মুসিবতের সময় সবর করার ব্যাপারে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীস শরীফে ইরশাদ করেন "মুমিনের প্রত্যেকটি কাজ বিস্ময়কর! মুমিন যদি মুসিবত গ্রস্ত হয় আর সবর করে তাহলে এটা তার জন্য নেকীর কাজ আর যদি আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত প্রাপ্ত হয়ে শুকরিয়া আদায় করে তাহলে এটাও তার জন্য নেকীর কাজ" সুতরাং আমাদের উচিত আল্লাহ তায়ালার নেয়ামতের বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করা এবং মুসিবতের সময় সবর করা।

ঢাকার ইসলামবাগ বড় মসজিদের খতীব শাইখুল হাদীস মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী জুমার খুৎবাপূর্ব বক্তব্যে বলেছেন, ক্ষণস্থায়ী এই পৃথিবীতে যে যেমন কর্ম করবে পরকালে সে তেমন ফল পাবে। ঈমান ও সৎকর্মের উপর মৃত্যু হলে পুরুস্কার ও প্রতিদানের প্রতিশ্রæতি যেমন দেয়া হয়েছে। বিপরীতে কুফর ও অবাধ্যতার উপর মৃত্যু হলে কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারীও তেমন দেয়া হয়েছে। আলো আর অন্ধকার যেমন সমান হতে পারেনা। ঈমান আর অবাধ্যতাও তেমন সমান হতে পারেনা। সুতরাং আমাদেরকে আল্লাহর দেয়া প্রতিশ্রæতির উপর পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করে তাঁর অবাধ্যতার পথ পরিহার করতে হবে এবং সর্বক্ষেত্রে তাঁর মর্জি ও পছন্দকে প্রাধান্য দিয়েই চলতে হবে। পবিত্র কুরআনে মহান রাব্বুল আলামীন ইরশাদ ফরমান "ঈমানদার ব্যক্তি কি অবাধ্য ব্যক্তির সমান হতে পারে? না তারা সমান হতে পারেনা। যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে তাদের জন্য রয়েছে তাদের কৃত কর্মের জন্য আপ্যায়ন স্বরূপ বসবাসের জান্নাত। পক্ষান্তরে যারা অবাধ্য হয় তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। যখনই তারা জাহান্নাম থেকে বের হতে চাইবে তখনই তাদেরকে সেখানে ফিরিয়ে আনা হবে এবং তাদেরকে বলা হবে তোমরা জহান্নামের যে শাস্তিকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে তার স্বাদ আস্বাদন করো"। (সূরা সেজদাহ, আয়াত-১৮,১৯,২০) আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এই আলোচনার উপর আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন!
ঢাকার ডেমরার দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম আজ জুমার বয়ানে বলেছেন, একমাত্র আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমেই মনের প্রশান্তি অর্জিত হয়। জিকিরই হলো মূল ইবাদত। অন্যান্য ইবাদতকে আল্লাহর ওপর ফরজ করেছেন তা’তাঁর জিকিরের জন্যই। মহান আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন, ’নিশ্চয় আমিই আল্লাহ আমি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই। সুতরাং আমার ইবাদত করো, এর আমার জিকিরের জন্য নামাজ কায়েম করো। আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন, যখন তোমরা তোমাদের হজের কার্যবলী শেষ করবে তখন তোমরা আল্লাহর জিকির করো। তাছাড়া সূরা আনকাবুতের মধ্যে আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন, হে নবী আপনার ওপর যে কিতাব নাযিল করা হয়েছে তা আপনি তেলাওয়াত করুন, নামাজ কায়েম করুন;নিশ্চয় নামাজ ফাহেসা ও অশ্লীল কাজ থেকে বাধা প্রদান করে। আর নিশ্চয় আল্লাহর জিকির সবচেয়ে উত্তম। জিকির হলো জান্নাতের চারা গাছ।

মিরপুর বাউনিয়াবাদ ই-বøক বাইতুল মা’মুর জামে মসজিদ-এর খতিব মুফতি আব্দুর রহীম কাসেমী আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, বিজয় আল্লাহ তায়ালার একটি বড় নেয়ামত। যা মূলত : তিনিই আমাদেরকে দান করেছেন। তা নাহলে আজ এদেশে আমরা স্বাধীন ভাবে বসবাস করতে পারতামনা। পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ থাকতে হত। তাই যারা দেশের বিজয় অর্জনে অবদান রেখেছেন তাদের যেমন স্মরন রাখা উচিৎ তার থেকেও অধিক পরিমাণে স্মরন রাখতে হবে যিনি মূলত:বিজয় দান করেছেন সে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে। তা’হলে তিনি আমাদেরকে উভয় জগতে শান্তি ও মুক্তি দান করবেন। খতিব বলেন, এ জন্য একটি বিজয়ী মুসলিম জনগোষ্ঠীর দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো তারা বেশি বেশি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় ও তাসবিহ পাঠ করবে। ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনে দুর্নীতি-দুস্কৃতি ও অন্যায়, অবিচার-অরাজকতা সৃষ্টির পরিবর্তে নামাজ কায়েম করবে। ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় যাকাত প্রদান করবে। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা অর্জনে যে সকল মর্দে মুমিন অবদান রেখে গেছেন তাদের রূহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া করতে হবে। আল্লাহ সবাইকে তৌফিক দান করুন। আমিন!

রাজধানী ঢাকার গুলিস্তান পীর ইয়ামেনী জামে মসজিদের খতিব মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে একটি হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদি.) বলেন, নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেন, সুদের ৭০ টির বেশি দরজা রয়েছে। তন্মধ্যে সবচেয়ে কম সুদেও দরজার পাপ হলো ঐ ব্যক্তির পাপের মতো, যে ব্যক্তি মুসলমান অবস্থায় নিজের মায়ের সঙ্গে অপকর্মে লিপ্ত হলো। সুদের মাধ্যমে প্রাপ্ত এক দিরহামের গুনাহ ৩৫ বার ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার মতো। আর সবচেয়ে বড় কঠিন ও জঘন্যতম সুদ হলো কোন মুসলমানের ইজ্জতহানি করা। (বাইহকি শরীফ)। পেশ ইমাম বলেন, গীবত নামক ব্যাধি আজকাল চা-স্টল থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। আজকাল গীবত ছাড়া কোন আড্ডা জমে ওঠে না। গীবত নামক ব্যাধিটি গুনাহ ও অন্যায় হওয়ার অনুভূতিও আমাদের অন্তর থেকে উঠে গেছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে গীবত ও পরনিন্দা থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন। আমিন!

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন