শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বায়ুদূষণকে মৃত্যুর কারণ জানিয়ে ব্রিটিশ আদালতের ঐতিহাসিক রায়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:৩২ পিএম

নিজের মোবাইল ফোনে মেয়ে এলা আদু কিসি ডেবরার ছবি দেখছেন মা রোজামুন্ড কিসি ডেবরা


বায়ু দূষণের কারণেই লন্ডনের এক স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে বুধবার রায় দিয়েছে ব্রিটেনের একটি আদালত। এই যুগান্তকারী রায়ের ফলে ব্রিটেনে ট্র্যাফিকের উপর আরও কঠোর হতে এবং শহরের বায়ু পরিষ্কার রাখতে সরকারের উপরে চাপ বাড়বে।

দুই সপ্তাহ ধরে চলা শুনানি শেষে আদালতে করোনার ফিলিপ বার্লো জানিয়েছিলেন যে, ২০১৩ সালে সালে ৯ বছর বয়সী এলা আদু কিসি ডেবরার মৃত্যু শ্বাস-প্রশ্বাসে তীব্র সমস্যা, গুরুতর হাঁপানি এবং দূষণের সংস্পর্শের কারণে ঘটেছিল। দক্ষিণ লন্ডনের সাউথওয়ারক করোনার কোর্টে দেয়া রায়ে তিনি বলেন, ‘সব তথ্য বিশ্লেষন করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, অতিরিক্ত বায়ু দূষণের মধ্যে থাকার কারনেই এলার প্রচণ্ড হাঁপানি হয়েছিল এবং সে কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।’ তিনি মন্তব্য করেন, বায়ু দূষণ একটি ‘উল্লেখযোগ্য অবদানমূলক কারণ’ যা তার হাঁপানিটিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছিল। এই দূষনের মূল উৎস অতিরিক্ত ট্র্যাফিকের কারণে নির্গত ধোঁয়া।

ছয় বছর আগে ৯ বছরের ব্রিটিশ কিশোরী এলা আদু কিসি ডেবরার মৃত্যু হয়েছিল শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে অসুস্থ হওয়ার পর। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে মামলা চলছিল। পরিবেশ দূষণ নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেবরার মৃত্যুর কারণ হিসেবে বায়ুদূষণকে দায়ী করা গুরুত্বপূর্ণ। যা থেকে দূষণ কতটা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। এটি জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থার মতোই সংকটজনক পরিস্থিতি। সম্প্রতি ব্রিটেনে বরিস জনসনের সরকার পরিবেশ নিয়ে বেশ সচেতন হয়ে উঠেছে। জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকিয়ে পরিবেশ বাঁচাতে ‘সবুজ বিপ্লব’- এর পথে হেঁটে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এমনই সময়ে ডেবরার মৃত্যু নিয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং শিক্ষণীয় হয়ে উঠল বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।

লন্ডনের দক্ষিণ-পূর্ব এলাকায় বসবাস ছিল এলার। বুধবার আদালতের রায়ে বলা হয়, নির্দিষ্ট সহন ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি বিষাক্ত নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড ঢুকেছিল এলার শরীরে। তাতেই তার শ্বাসকষ্টের সমস্যা ও মৃত্যু হয়েছে। ঐতিহাসিক এই রায়ের পর এলার মা জানিয়েছেন, এতদিন পর তার মেয়ে সুবিচার পেয়েছে। পাশাপাশি তিনি আদালতের এই পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করে জনস্বাস্থ্য নিয়ে ব্রিটিশদের সতর্কও করেছেন।

২০১৩ সালে মৃত্যুর আগের তিন বছরে অন্তত ৩০ বার তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। অর্থাৎ গড়ে বছরে ১০ বার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল সে। তার মৃত্যুর পর ২০১৪ সাল থেকে বিচারবিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়। এল্লার বাসস্থান এলাকার পরিবেশ খতিয়ে দেখে জানা গেছে, শুধু যানজটের কারণেই সেখানকার বাতাস নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের মাত্রা অনেক বেশি। প্রতিদিন নিঃশ্বাসের সঙ্গে তা শরীরে ঢুকেই তার শ্বাসকষ্টের সমস্যা তৈরি করেছে। আরও জানা গেছে, এলাকাটিতে বায়ুদূষণের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। সেই হিসেবে তা নিয়মভঙ্গকারীও।

আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, ডেবরার মাকে মেয়ের অসুস্থতার কারণ ঠিকমতো জানানো হয়নি চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে। যদি তা করা হতো তাহলে তিনি মেয়েকে সুরক্ষিত রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে পারতেন এবং মৃত্যু এড়ানো যেত। প্রসঙ্গত, বায়ু দূষণজনিত মৃত্যুর পরিসংখ্যানগুলো অনুসারে, যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর বায়ু দূষণের ফলে ২৮ থেকে ৩৬ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে। সূত্র: স্কাই নিউজ, দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Jack Ali ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ৫:০১ পিএম says : 0
What about our country. Our country is like poisonous gas chamber, so many people are dying of pollution. Government don't know how rule a country they only know how to say in power and loot our tax payers money.. and doing some project by the help of other country, from that project they are looting money also. we the general people are victim of government, they oppressed us in so many way then why we liberated our country from barbarian pakistan not our government and their supporter and also general people 100% more barbarian than pakistan. After liberation we have so many dread that will develop our country more advance than any European country but our country looks like big junk yard and also open dustbin. If our country ruled by the Law of Allah then we would have develop our country more advance than any other country in the world.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন