গণফোরামের সভাপতি ও সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ঘুষ, দুর্নীতি, বিদেশে অর্থপাচারসহ নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশ এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বর্তমানে দেশে অস্বস্তিকর রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিরাজমান বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। গতকাল রাজধানীর বেইলী রোডের নিজ বাসভবনে সিনিয়র নেতাদের সাথে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
দলের অভ্যন্তরীন সংকটের অবসান ঘটেছে জানিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমাদের দলে আর কোনো সমস্যা নাই। আমরা সবাই এক আছি। আগামী ৯ জানুয়ারি আমরা বসব। সব কিছু তুলে ধরা হবে। ওই বৈঠক থেকে পরবর্তি ঐক্যবদ্ধ কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, বর্তমান দেশে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি বিরাজমান। ঘুষ, দুর্নীতি, বিদেশে অর্থপাচারসহ দেশে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এর থেকে উত্তোরণের জন্য দলমত নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দেশের জনগনকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানাচ্ছি।
করোনা মহামারীর শুরু থেকে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঢাকাসহ সারাদেশে ত্রাণ সামগ্রিসহ শীতবস্ত্র বিতরণের কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে বলে জানান তিনি।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্করয ভাংচুর নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এই বিষয়টি নিয়ে এখানে কথা বলতে চান না বলে জানান গণফোরাম সভাপতি। তিনি বলেন, এখানে এই বিষয়ে কথা বলতে চাই না। ভাস্কর্যের সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। ভাস্কর্য একটি দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে। এটা ধর্মের অপব্যবহার আর কিছু না। জাতিকে বিভক্ত করার জন্য এটা করা হচ্ছে।
ড. রেজা কিবরিয়া, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও সুব্রত চৌধুরী এই তিন নেতা করোনার সংক্রামণে আইসোলেশনের থাকায় বৈঠকে আসতে পারেননি বলে জানান গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু।
বৈঠকে গণফোরাম নেতাদের মধ্যে মন্টু ছাড়া ছিলেন মোকাব্বির খান, মহসিন রশিদ, জগলুল হায়দার আফ্রিক, আওম শফিকুল্লাহ, মোশতাক আহমেদ প্রমূখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ড. রেজা কিবরিয়াকে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন দেয়ার পর থেকে দলের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়। সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, সাবেক কার্যনির্বাহী সভাপতি আবু সাইয়িদ, স্ব্রুত চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি অংশ ড. রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। পরে এই অংশের কয়েকজনকে বহিস্কার করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে মন্টুর অংশ বর্ধিত সভা ডেকে ড. রেজা কিবরিয়াসহ চারজনকে পাল্টা বহিস্কার করে। ফলে গণফোরামে স্পষ্ট বিভক্ত হয়ে পড়ে। তারা পাল্টা –পাল্টা জাতীয় কাউন্সিলও আহবান করেছিলো। এই সমস্যা সমাধানে ড. কামাল হোসেন দুই দফা মন্টুর নেতৃত্বাধীন অংশের নেতাদের সাথে বৈঠক করেন। পরে ১১ নভেম্বর ড. রেজা কিবরিয়া তাদের পূর্বঘোষিত ১২ ডিসেম্বরের কাউন্সিল স্থগিত করে দেন। পরে গত ১৩ ডিসেম্বর ড. কামাল হোসেন এক বিবৃতিতে গণফোরামের যেসব বহিস্কার পাল্টা বহিস্কার হয়েছে তা এখন থেকে অকার্যকর হিসেবে গণ্য হবে বলে জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন