শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মা ও মায়ের প্রেমিকের ফাঁসি

শিশু সামিউল হত্যা মামলার রায়

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

এক দশক আগে রাজধানীর আদাবরের নবোদয় হাউজিংয়ে ৫বছরের শিশু খন্দকার সামিউল আজিম ওয়াফিকে হত্যার ঘটনায় তার মা আয়েশা হুমায়রা ওরফে এশা ও তার প্রেমিক শামসুজ্জামান বাক্কুর মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের এ রায় দেন। মৃত্যুদন্ডের পাশাপাশি দুই আসামির প্রত্যেককে একটি ধারায় ৫হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন বিচারক।
রায়ের পর্যবেক্ষণে তিনি বলেছেন, এশা ও বাক্কুর সম্পর্কের বিষয়টি জেনে ফেলায় শিশু সামিউলকে তারা হত্যা করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলা প্রমাণে সক্ষম হয়েছে। এমন কাজ তারা করেছে, যে জন্য যাবজ্জীবন কারাদন্ড পর্যাপ্ত নয়, সেজন্য তাদের মৃত্যুদন্ড দেয়াই সমীচীন।

ব্যক্তিগত আইনজীবী ইসলাম উদ্দিন বিশ্বাস এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ফারুক উজ্জামান ভূঁইয়া এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আয়েশা হুমায়রা এশা এবং শামসুজ্জামান বাক্কু জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন। আর মামলার বাদী সামিউলের বাবা আজম বিচার চলার মধ্যেই মারা গেছেন। মৃত্যুর আগে ২০১৫ সালের নভেম্বরে মামলার গতিপ্রকৃতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। আলোচিত এ মামলায় এ পর্যন্ত ২২ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। এতে এশা ও বাক্কু উভয় হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২৩ নভেম্বর রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, নবোদয় হাউজিংয়ের গ্রিনউড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্লে গ্রুপের ছাত্র ছিল সামিউল আজিম ওয়াফিক। ২০১০ সালের ২৩ জুন পরকীয়া প্রেমিক শামসুজ্জামান আরিফ ওরফে বাক্কুর সঙ্গে মায়ের অনৈতিক কোনো ঘটনা দেখে ফেলায় সামিউলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ গুম করতে ফ্রিজে লুকিয়ে রাখা হয়। লাশপি বস্তায় ঢুকিয়ে পরদিন ২৪ জুন রাস্তায় ফেলে দেয়া হয়। একইদিন আদাবরের নবোদয় হাউজিং এলাকা থেকে সামিউলের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সামিউলের বাবা কে এ আজম বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। গ্রেফতারকৃত দুই আসামিই আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছিলেন বলে সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। ২০১২ সালের ২৫ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার ওসি কাজী শাহান হক এশা ও বাক্কুর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর সাত দিনের মাথায় আদালতে বাদী আজমের জবানবন্দি ও জেরা গ্রহণের মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। জামিনে থাকা এশা গত ২৩ নভেম্বরের পর আর আদালতে হাজির হননি। ওইদিনই আদালত জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আর এশার প্রেমিক শামসুজ্জামান আরিফ ওরফে বাক্কু আগে থেকেই পলাতক ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন