শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

শীত-কুয়াশা-ধুলোবালিতে রোগব্যাধি-জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি

বোরো চারা-বীজতলা কোল্ড ইনজুরি, ফল-ফসল-সবজি রোগ-বালাই থেকে সুরক্ষায় কৃষিবিদের পরামর্শ : বছরের শেষ আর শুরুতে আরো তীব্র শৈত্যপ্রবাহের শঙ্কা

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

উত্তর, পশ্চিম, দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিম, সিলেট অঞ্চলসহ দেশের অধিকাংশ জেলা-উপজেলা কনকনে শীত ও কুয়াশায় প্রায় কাবু। মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে ঘন কুয়াশা, জলীয়বাষ্পে মিশেছে ব্যাপকহারে বাতাসে ভাসমান ধুলোবালি ও ধোঁয়া। এতে করে সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট-হাঁপানি, গলাব্যাথা, টনসিল ও ফুসফুসের জটিলতাসহ বেড়ে যাচ্ছে বিভিন্ন রোগব্যাধি। বাড়ছে নিত্যদিনে কর্মমুখী মানুষের নানামুখী কষ্ট-দুর্ভোগ। সকাল ৯টা, ১০টা পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশায় কাছাকাছি দৃষ্টিসীমা আটকে যাচ্ছে। নৌপথে নৌযান, ফেরি, সড়ক মহাসড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বাড়ছে ঝুঁকি।
গতকাল রোববার ২৪ ঘণ্টায় সর্ব-উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ও কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ছিল দেশের সর্বনিম্ন পারদ ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সোমবার প্রায় সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা খানিকটা বৃদ্ধির সুখবর দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। তবে সেই সঙ্গে কপালভাঁজ করা সতর্কতা, ডিসেম্বরের তথা বছর শেষে ও নয়া বছর ২০২১ সালের শুরুতেই দেশের পশ্চিম, উত্তর, মধ্যাঞ্চলসহ অনেক এলাকা মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়তে পারে। তখন রাত থেকে ভোর ও সকালে পারদ নেমে যেতে পারে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। কুয়াশা বিস্তারের শঙ্কা রয়েছে।

চাষিদের জন্য কৃষিবিদের পরামর্শ : ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহের বর্তমান সময়ে কৃষকদের জরুরি করণীয় প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. নাছির উদ্দীন গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা ও শীতের তীব্রতা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে বোরো বীজতলা-চারার ক্ষতি হতে পারে। অন্যান্য ফল-ফসলেরও সমস্যার কারণ ঘটতে পারে। সকালবেলায় বোরোর বীজতলা-চারার উপর দিয়ে লম্বালম্বি করে রশি টেনে নিয়ে জমে থাকা কুয়াশার পানি দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে প্রতিদিনই। চারার গোড়ায় পানি জমতে দেয়া যাবেনা। শাক-সবজির চারার গোড়ায় ছাই দিলে ভালো ফল হবে। এতে ছত্রাকজনিত রোগ-বালাই দূরীভূত হবে। কৃষিবিদ নাছির উদ্দীনের আরও পরামর্শ, ফল-ফসল ও অন্যান্য অর্থকরী গাছের অপ্রয়োজনীয় ও মরা ডালপালা কেটে-ছেঁটে ফেলে দিতে হবে। এরফলে শীতকালে অল্প সময়ের অথচ প্রয়োজনীয় সূর্যালোক ও রোদ, বাতাস পাবে গাছপালা।

সর্বশেষ আবহাওয়া ও পূর্বাভাস
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, রাজশাহী বিভাগসহ গোপালগঞ্জ, সীতাকুন্ড, শ্রীমঙ্গল, ফেনী, পাবনা, বদলগাছী, যশোর, কুমারখালী, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, ভোলা অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। মাঝরাত থেকে সকাল পর্যন্ত বিশেষত নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের অন্যত্র পড়বে হালকা থেকে মাঝারি। আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। এরপরের ৫ দিনে শেষের দিকে রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে।

গেল ২৪ ঘণ্টায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহের পর্যায়ে তাপমাত্রা ছিল শ্রীমঙ্গলে ৭.৩, চুয়াডাঙ্গায় ৭.৫, বদলগাছীতে ৭.৭, যশোরে ৭.৮, গোপালগঞ্জে ৮.৫, সৈয়দপুরে ৯, ঈশ্বরদীতে ৯.২, বরিশাল ও সীতাকুন্ডে ৯.৩, ভোলা ও দিনাজপুরে ৯.৫, ফেনী ও কুমারখালীতে ১০ ডিগ্রি সে.। তবে ঢাকার তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ২৪.৬ এবং সর্বনিম্ন ১৩.৪, চট্টগ্রামে যথাক্রমে ২৬ ও ১৩.২ ডিগ্রি সে.। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সীতাকুন্ডে ২৭.৫ ডিগ্রি সে.। দেশে দিনের বেলায় পারদ তেমন নামেনি।

জলীয়বাষ্প, মেঘ ও কুয়াশার সঙ্গে ব্যাপকহারে ধুলোবালি ধোঁয়া মিশে বায়ুদূষণ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল দুপুরে ঢাকায় বায়ুমান সূচক (একিউআই) ও বায়ুদূষণ মাত্রা (পিএম ২.৫) ছিল আইকিউএয়ার’র পর্যবেক্ষণ তথ্য মতে ৩৩৩। যা ‘দুর্যোগপূর্ণ বায়ুদূষণ’। রাতে ছিল ২৫০-এ। বিশে^ সর্বাধিক বায়ুদূষিত প্রধান শহরের তালিকায় ঢাকা ছিল প্রথম স্থানে। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান করছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন