বিলুপ্ত বিডিআর পিলখানা হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া চার আসামির বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে (আপিলের অনুমোদন) সরকার। বিচারিক আদালতে মৃত্যুদন্ড এবং যাবজ্জীবন পেলেও এই চার আসামিকে খালাস দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে চায় সরকার। এই চার আসামি হলেন, হাবিলদার মো.খায়রুল আলম, নায়েব সুবেদার আলী আকবর, হাবিলদার বিল্লাল হোসেন ও সিপাহী মেজবাহ উদ্দিন (পলাতক)। গত ১৭ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আপিল করা হয়।
এ বিষয়ে গতকাল সোমবার অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ের প্রত্যয়িত অনুলিপির পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩০ হাজারের বেশি। উচ্চ আদালতের রায়ে খালাসপ্রাপ্ত ও সাজা কমেছে-এমন দন্ডিতের ক্ষেত্রে আপিল করা হবে। আপিলের প্রস্তুতি চলছে। হাইকোর্টের রায়সহ একটি লিভ টু আপিলে পৃষ্ঠাসংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৫০ হাজারের বেশি। এই আপিলের ১০টি করে কপি তৈরি করতে হচ্ছে। এত অধিক পৃষ্ঠার আপিল এর আগে দায়ের হয়নি। এই আপিলের কাগজপত্র দিয়ে অন্যান্য আপিল শুনানির জন্য আদালতের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হবে। বিচারিক আদালতের রায়ে মৃতুদন্ডপ্রাপ্ত তবে হাইকোর্টে খালাস পাওয়া চারজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করেছে।
প্রসঙ্গত: ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। সেদিন ঢাকার পিলখানায় (বিজিবি সদর দপ্তর) নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। নিষ্ঠুর আচরণ ও পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন তৎকালীন বিডিআরে কর্মরত সামরিক কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরাও। দুই দিনব্যাপী ওই বিদ্রোহের সময় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। নৃশংস ওই হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হয়, যা পরে নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বরে হত্যা মামলার রায় দেন বিচারিক আদালত। এতে ৮৪৬ জনকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালতের রায়ে ১৫২ জনের মৃত্যুদন্ড, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ২৫৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড হয় আর খালাস পান ২৭৮ জন। দেশের ইতিহাসে আসামির সংখ্যার দিক থেকে এটিই সবচেয়ে বড় হত্যা মামলা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন