অর্ধ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের জুতা চুরি করে শালিস দরবারে মুচলেকা দিয়েও এখন টাকা পরিশোধে টালবাহানা করছে জুতা চোর আমিন মিয়াসহ কয়েকজন। টাকা পরিশোধের তাগাদা দেয়ায় তারা ব্যবসায়ী ইউসুফ আলীকে হামলা মামলা করার হুমকি দিচ্ছে।
জানা গেছে, নরসিংদী শহরের পোস্ট অফিস রোড বাটা ডলফিন সু স্টোরের মালিক ইউসুফ আলী তার দোকানের হিসাবরক্ষক কাম গুদামরক্ষক পদে নিজ ভাগিনা আমিন মিয়াকে ২০১৭ সালে নিয়োগ দান করে। দোকানের কর্মচারী নিয়োগ করে মফিজউদ্দিন, বাইজিদ এবং সাদ্দাম হোসেন নামে ৩ ব্যক্তিকে। দোকানের মালিক ইউসুফ আলী একজন ধর্মভীরু ব্যক্তি হিসেবে প্রায়ই তাবলীগ জামাতে চলে যেতেন। এই সুযোগে তার ভাগিনা দোকানের হিসাবরক্ষক আমিন মিয়া, দোকান কর্মচারী মফিজ উদ্দিন বাইজিদ সাদ্দাম হোসেনকে সাথে নিয়ে দোকান থেকে জুতাসহ বিভিন্ন মালামাল চুরি করতে থাকে। এসব চোরাই জুতা বিক্রি করে পার্শ্ববর্তী বশির সুজ এর মালিক বশির উদ্দিন এবং নাজির মিয়া নামে দুই ব্যক্তির নিকট। দিনের পর দিন আমিন মিয়া জুতা চুরি করতে করতে ৫৪ লাখ টাকার জুতা চুরি করে বশিরউদ্দিন ও নাজির মিয়া নিকট বিক্রি করে সেই টাকা আমিন মিয়ার ইসলামী ব্যাংকের ব্যক্তিগত একাউন্টে জমা করে এবং কিছু টাকা দিয়ে ঘোড়াদিয়া এবং আইয়ুবপুরে জমি কিনে রাখে।
দোকানের মালিক ইউসুফ মিয়া দোকানে ঢুকে মালামাল কম দেখে হিসাবরক্ষক আমিন মিয়াকে হিসাবপত্র তৈরির নির্দেশ দেয়। কিন্তু আমিন মিয়া হিসাবপত্র তৈরি করতে গরিমসি শুরু করলে দোকান মালিক ইউসুফ আলীর সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। এই অবস্থায় ইউসুফ আলী ইসলামী ব্যাংকে আমিন মিয়ার ব্যক্তিগত একাউন্টের খবর নিয়ে জানতে পারে যে তার একাউন্টে ৬ লাখ ৭৭ হাজার টাকা জমা রয়েছে। এই অবস্থায় দোকান মালিক ইউসুফ আলী হিসাব পত্র তৈরি করে দেখতে পান যে হিসাবরক্ষক আমিন মিয়া দোকান থেকে ৫৪ লাখ টাকার জুতা ও বিভিন্ন মালামাল চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছেন। পরে নরসিংদী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় দরবার বসালে আমিন মিয়া ও দোকান কর্মচারী স্বীকার করে যে তারা জুতা চুরি করে পার্শ্ববর্তী বশির সুজ এর মালিক বশির উদ্দিন এর নিকট বিক্রি করে। এই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সালিশ দরবারিগণ আমিন মিয়াকে টাকা ফেরত দেয়ার জন্য চাপ দিলে সে তাৎক্ষণিকভাবে ইউসুফ আলী কে ৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকার একটি চেক প্রদান করে। এবং বাকি টাকা পরে দিয়ে দিবে বলে মুচলেকা দেয়। এরপর দীর্ঘ দিন অতিক্রান্ত হলেও আমিন মিয়া তার জুতা চুরির টাকা ইউসুফ আলী ফেরত দিচ্ছে না।
এ ব্যাপারে ইউসুফ আলী আমিন মিয়াকে তাগাদা দেয়ার পর জুতা চোর আমিন মিয়া ইউসুফ আলীকে পাল্টা হামলা-মামলাল হুমকি দেয়। অনন্যোপায় হয়ে দোকান মালিক ইউসুফ আলী বাদী হয়ে জুতা চোর আমিন মিয়া বশির উদ্দিন নাজির মিয়া মফিজ উদ্দিন বাইজিদ ও সাদ্দাম হোসেনকে আসামি করে নরসিংদীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। কিন্তু দীর্ঘদিনেও পুলিশ আমিন মিয়াকে গ্রেফতার করতে পারছনা। সে দোকান মালিককে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন