গোপালগঞ্জে লাল তালিকা থেকে বাদপড়া ৮ মুক্তিযোদ্ধা নতুন যাচাই-বছাই থেকে অব্যহতি চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন গোবরা ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চৌধূরী টুটুট।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গোবরা ইউনিয়নে গত ২০০৩,২০০৫ ও ২০১৭ সালে ৩ দফা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ের পর থেকে ১৯ জন মুক্তিযোদ্ধা ১৫ বছর ধরে ভাতা পেয়ে আসছেন। নতুন করে তাদের যাচাই বাছাইয়ের চিঠি দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা মুত্যু বরণ করেছেন। ৮ জন জীবিত আছেন। ২ জন পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু পথযাত্রী। তারা তদ্বির করে যুক্তিযোদ্ধা হননি। এছাড়া আগের ৩টি যাচাই বাছাইতে তারা সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। এখন অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যু বরণ করেছেন। অনেকে রোগাক্রান্ত হয়ে স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। তাই নতুন যাচাই বছাইয়ে জীবিত ৩ জন সহযোদ্ধা নিয়ে যাচাই-বাছাই কমিটিতে হাজির হওয়া অত্যন্ত কঠিন ও কষ্টসাধ্য বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। তাই মুক্তিযোদ্ধারা যাচাই বাছাই থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
গোবরা ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হাবিবুর রহনমান মৃধা বলেন, ভাতার আশায় সেদিন মুক্তিযুদ্ধে যাইনি। দেশ মাতৃকার মুক্তির জন্য যুদ্ধে গিয়েছিলাম। তারপর ৩ বার আমাদের যাচাই বাছাই হয়েছে। সেখানে সব প্রক্রিয়া সম্মন্ন করা হয়। আমাদের সবুজ তালিকা ও মুক্তি বার্তায় নাম আছে। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রনালয়, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষরিত সনদ আমাদের প্রত্যেকের কাছে রয়েছে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের বেসামরিক গেজেটে আমাদের তালিকা রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৭ সালের যাচাইয়েও আমার উত্তীর্ণ হয়েছি। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ঠেলাঠেলিতে লাল তালিকায় আমরা অর্ন্তভূক্ত হতে পারিনি। তাই আগামী ৯ জানুয়ারী নতুন করে যাচাই বছাই বোর্ডে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেকেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম ফকির বলেন, নতুন যাচাই বাছাইয়ে ৩ জন সহযোদ্ধাকে হাজির করতে বলা হয়েছে। এটি খুবই কঠিন কাজ। ইতিমধ্যে অধিকাংশ সহযোদ্ধা মৃত্যু বরণ করেছেন। এছাড়া জীবিতরা সয়সের ভারে ন্যুজ্ব। অনেকে রোগ শোকে স্মৃতিশক্তি হারিয়েছেন। তাই এই অত্যন্ত কঠিন এ কাজ থেকে আমাদের অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আতিয়ার রহমান শেখ বলেন, আগের ৩টি যাচাই বাছাইয়ে সহযোদ্ধাদের স্বাক্ষাতকার গ্রহন করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর আমরা ২০১৭ সালের সর্বশেষ যাচাই বাছাইয়ে আমরা উত্তীর্ণ হই। এখান আমাদের এ যাচাই বাছাই থেকে অব্যহতি দেয়া হোক।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ও গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল নতুন যাচাই বাছাইয়ের নির্দেশনা দিয়েছে। আমাকে ওই নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে । তাই তাদের যাচাই বাছাই থেকে ব্যহতি দেয়ার এখতিয়ার আমার নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন