মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নদী শাসনে জোর দিচ্ছে সেতু বিভাগ

পদ্মা সেতু রক্ষায়

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

নদীর ভাঙ্গন ঠেকাতে এবং পদ্মা সেতু রক্ষায় নদী শাসনের কাজ শুরু দিচ্ছে। এবারের বন্যায় ব্যাপক ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাওয়া পদ্মা সেতুর মাওয়া অংশের কুমার ভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড। আগামী বছর নদীর গতি পরিবর্তন হয়ে জাজিরাতে ভাঙ্গনের আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তাই এবারের শুকনো মৌসুমের সুবিধা কাজে লাগিয়ে যে কোনো সময় জাজিরায় বাকি থাকা ছয় কিলোমিটার নদী শাসনে গুরুত্ব দিচ্ছে সেতু কর্তৃপক্ষ। পদ্মা সেতুর সুরক্ষায় মাওয়া প্রান্তেও নদী শাসনের কাজের গতি আরো বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে সেতু বিভাগ। চাইনিজ কোম্পানি সিনোহাইড্রো করপোরেশনকে দ্রুতকাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সেতু বিভাগের সচিব বেলায়েত হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, শুকনো মৌসুমে আমরা টার্গেট দিয়েছি জাজিরা প্রান্তে অন্তত ছয় কিলোমিটার নদী শাসন করা। আশা করি পারবে। সবচেয়ে বড় একক চুক্তি হয়েছে নদী শাসনে। জাজিরাতে সাড়ে এগারো কিলোমিটার, আর মাওয়াতে দেড় কিলোমিটার। আরো বাড়ানো হচ্ছে এ প্রান্তে। এবারের বন্যা কাজের গতি কমিয়ে দিয়েছে। উভর প্রান্তের ফেরি চালু রাখতে হয়। তাই যে গতিতে কাজ করার কথা সেটি সম্ভব হয়না।
পদ্মাসেতুর সবশেষ ৪১ নম্বর স্প্যান বসানোয় উত্তাল পদ্মার বুকে এখন সগৌরবে দাড়িয়েছে। কোটি মানুষের স্বপ্ন পূরণ এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তবে, শুধু সেতু হলেই হবে না, এর সুরক্ষায় নদী শাসন সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবার পদ্মা ভাঙন যখন শুরু হয়, তখন কানাডিয়ান একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে সার্ভে করা হয়। মাওয়ার পদ্মা সেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের কোনো ক্ষতি হবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, অর্ধ কিলোমিটার ভাঙনে শুধু ইয়ার্ডের ক্ষতিই নয়, নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে দুই শতাধিক রোডওয়ে ও রেলওয়ে স্ট্রিঞ্জার। এতে মাওয়া অংশে ১.৬ কিলোমিটার নদী শাসন পদ্মা সেতুর সুরক্ষায় যথেষ্ট কিনা, সেই প্রশ্নই এখন সামনে এসেছে। ৯ হাজার ৪শ› কোটি টাকা ব্যয়ে জাজিরাতে ১২ দশমিক ৬ ও মাওয়াতে ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার নদী শাসন করছে চাইনিজ কোম্পানি সিনোহাইড্রো করপোরেশন। এখন পর্যন্ত এ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৭৭ ভাগ। তাদের নদী শাসনের কাজ এখনো অনেক বাকি রয়েছে।
পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম ইনকিলাবকে জানান, বন্যার সময় মাওয়ার কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড কিছুটা ভেঙ্গেগেছে। এটা ঠিক করার কথা ঠিকাদারের। সে ডিসেম্বরের পরে জানুয়ারীতে ইয়ার্ড মেরামত করবে। এছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড শিমুলিয়া ফেরী ঘাটে কিছু কাজ করবে বলে সেখানে আমাদের প্রকল্পের কিছু অংশ মাওয়ার ইয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। এরকম একটা সম্ভাবনা শুনেছি। তারা একটা কমিটি করেছে, সেখানে আমাদের প্রতিনিধি আছে। সেটা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে। আমাদের প্রকল্প থেকে অতিরিক্ত কোনো কাজ করার পরিকল্পনা নেই।
পদ্মা সেতুর প্যানেল অব এক্সপার্টের সদস্য ও পানি বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাদ বলেন, প্রতি ১২ বছরের মধ্যে পদ্মা নদী গতি পরিবর্তন করে বলে মাওয়াতে ২০১৫ সালের বন্যায় ভাঙনের পর এবার হয়েছে। তবে আগামীতে নদী ভাঙন পশ্চিম দিকে অর্থাৎ জাজিরার প্রান্তের দিকে হবে। তাই এ অংশে নদী শাসন এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, নদী শাসনে অনেক কিছু আনপ্রেডিক্টেবল আছে। মাওয়া এবার ভাঙ্গছে, কিন্তু সামনের বছর জাজিরাতে ভাঙবে। এজন্য এখন থেকেই আমরা ঠিকাদারকে প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করছি। চর জানাজাতটা অবিলম্বে শেষ করতে। আশা করি এ বছর নাগাত তারা যদি চর জানাজাত সাইটে নদী শাসন শেষ করতে পারে তাহলে আমরা নিশ্চিন্ত থাকতে পারবো।
##

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন