বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

মৃত্যুর প্রহর গুণছে অবরুদ্ধ অভিবাসন প্রত্যাশীরা

কয়েক মাস ধরে ভেলিকা ক্লাদুসার জঙ্গলে অবস্থান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

পশ্চিম ইউরোপে পৌঁছানোর প্রত্যাশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসনিয়া-ক্রোয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী শহর ভেলিকা ক্লাদুসার একটি জঙ্গলে কয়েক মাস ধরে অবরুদ্ধ হাজারো অভিবাসনপ্রত্যাশী। বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ মধ্যেপ্রাচ্য থেকে আসা কয়েক দেশের নাগরিক রয়েছেন। প্রচন্ড শীতে তেমন কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা ছাড়াই ছাদহীন বিশাল জঙ্গলে কাটছে তাদের দিন-রাত। তুষারে ঢেকে গেছে বসনিয়ার সীমান্ত এলাকা। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে। ঠান্ডা হাওয়ায় জেঁকে বসেছে শীত। গত কয়েক দিন আগে বসনিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলে অভিবাসীদের অস্থায়ী লিপা আশ্রয়শিবির আগুনে পুড়ে যাওয়ায় প্রবল তুষারপাতে খোলা আকাশের নিচেই কাটছে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জীবন। শনিবার থেকে আবহাওয়ার চরম অবনতিতে মৃত্যুর মুখে তারা। যাদের লক্ষ্য ছিল ক্রোয়েশিয়া হয়ে ইউরোপে প্রবেশ করা। সঙ্গে থাকা কম্বল এবং ব্যাগের মধ্যে ঢুকেই তীব্র শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা এক হাজারের মতো অভিবাসনপ্রত্যাশী। বিভিন্ন জায়গা থেকে যেই সামান্য খাবারটুকু সহায়তা হিসেবে আসছে তা খেয়েই কোনো রকম বেঁচে আছেন তারা। বসনিয়া সরকারও তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারছে না। এখানে প্রচন্ড তুষারপাত হচ্ছে। তাপমাত্রা প্রতিনিয়ত কমছে। শীত নিবারণের জন্য কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা নেই। এক টুইটবার্তায় এমনটাই বলছিলেন বসনিয়ার আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার প্রধান পিটার ভন দুর অরায়ের্ট। তিনি আরও যোগ করেন, জীবনযুদ্ধে এভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জীবন বাঁচাতে সাহসী রাজনৈতিক পদক্ষেপ জরুরি। পশ্চিম ইউরোপে পৌঁছানোর প্রত্যাশায় হাজারো অভিবাসীর পক্ষে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বসনিয়া। বেশির ভাগ বসনিয়ার উত্তর-পশ্চিম ক্রাজিনা অঞ্চলে আটকে আছেন। কারণ জাতিগতভাবে বিভক্ত জাতিটির অন্যান্য অঞ্চল অভিবাসীদের দায়িত্ব নিতে চাইছে না। ঠান্ডায় অভিবাসীদের মানবেতর অবস্থা হবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বসনিয়াকে সতর্ক করেছে আগেই। রাজনীতিবিদদের একটি ঐকমত্যে আসারও আহবান জানানো হয়। তবে তারা কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেননি এখনো। শনিবার বসনিয়ার আন্তর্জাতিক রেডক্রসের একটি দল বিপর্যস্ত অভিবাসীদের পানি এবং কিছু ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে। খাবার বিতরণে সহযোগিতা করে সেখানে থাকা দায়িত্বরত পুলিশ। এক পাকিস্তানি অভিবাসনপ্রত্যাশী কাছিম বলেন, ‘আমারা এখানে পশুর মতো জীবনযাপন করছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে একটা পশু আমাদের থেকে ভালোভাবে বেঁচে থাকে। আমারা যদিও এখন সাহায্য না পাই এখানে মৃত্যু অবধারিত। দয়া করে আমাদের বাঁচান।’ আরেকজন জানান, ‘তিনদিন ধরে আমাদের কম্বল নেই, ঘুমানোর জায়গা নেই। সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। আশ্রয়শিবিরের ভেতরে তুষার পড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা সবাই মারা যাব।’ তাদের পুনর্বাসনের জন্য বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায়ার বিহাক শহরের মধ্যাঞ্চলের এলাকা বেছে নেওয়া হয়েছিল, তবে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সেখানে নেওয়া সম্ভব হয়নি। ভিওএ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন