বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নরসিংদীতে বিএনপি নেতারা এখন আ.লীগে

দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ

স্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে ত্যাগী নেতাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। যুগ যুগ ধরে যারা আওয়ামী লীগকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন, তাদের অনেকেই জেলা কমিটির বাইরে কিংবা পিছনের সারিতে পরে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। পক্ষান্তরে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব ও তাঁতী লীগের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্বে রয়েছেন নরসিংদীর দু’জন মধ্য সারির বিএনপি নেতা। যথাক্রমে জিএম তালেব হোসেন এবং শওকত আলী ইঞ্জিনিয়ার।

তাছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন একজন অরাজনৈতিক ব্যক্তি। যার নাম মোহাম্মদ আলী। তিনি অতীতে কখনোই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেননি। লোকমান হোসেন মেয়র নির্বাচিত হবার পর কাকতালীয়ভাবে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক পদ লাভ করেন। ইতোপূর্বে জেলা আওয়ামী লীগের ইতিহাসে কোন ব্যক্তি এত সহজে, সংক্ষিপ্ত পথে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হতে পারেননি।

আর এসব ব্যক্তিদেরকে নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। দেখা দিয়েছে হতাশা, ক্ষোভ ও দুঃখ। দলের ভিতরে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক অনিশ্চয়তা।

জানা গেছে, নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগের একজন হঠাৎ নেতা দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ভূমিদস্যুতা ও মাদক ব্যবসা করে রাতারাতি হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে।

আওয়ামী লীগের নেতার মাত্র কয়েক বছরে অগাধ বিত্ত-বৈভবের মালিকনা শহরের মানুষ আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতাকর্মীদের ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। আর এসব আলোচনা-সমালোচনাকে কেন্দ্র করেই আওয়ামী লীগের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। নরসিংদী সদর আসনের এমপি সাবেক প্রতিমন্ত্রী লে কর্নেল (অব.) মো. নজরুল ইসলাম হিরু ওই বিতর্কিত দুর্নীতিবাজ নেতাকে সতর্ক করে দেয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে কর্নেল হিরুর মুক্তিযুদ্ধ, বীর প্রতীক খেতাব নিয়ে প্রকাশ্য মাঠে ময়দানে অশালীন ও আপত্তিজনক উক্তি করতে থাকে।

এসব ঘটনা নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে সুস্পষ্ট বিভক্তির সৃষ্টি হয়। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দেন কর্নেল হিরু এমপি এবং অপরগ্রুপের নেতৃত্ব দেন জেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন ভূইয়া। গত দুই বছরে দুই গ্রুপ কখনো একমঞ্চে সভা করতে পারেনি। তারা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য সমাবেশে খিস্তিখেউড় করতে থাকে।
আর এদের পেছনে মদদ দেন আওয়ামী লীগের কিছু কেন্দ্রীয় নেতা। যার কারণে দলের ভিতরে কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কর্নেল হিরু এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন ভূঁইয়াকে স্ব স্ব পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে দেন।

যার ফলে সিনিয়র সহ-সভাপতি জিএম তালেব হোসেন দায়িত্ব পান ভারপ্রাপ্ত সভাপতির এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদককের দায়িত্ব পান যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী। জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে নতুন পদায়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। নেতাকর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় যে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিএম তালেব হোসেন ছিলেন একজন বিএনপি নেতা। তিনি তৎকালীন নরসিংদী থানা বিএনপির সহ-সভাপতি ছিলেন।

তিনি ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত থানা বিএনপির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি একই কমিটি সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শওকত আলী ইঞ্জিনিয়ার। তিনিও ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত থানা বিএনপিসাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। নেতাকর্মীরা প্রশ্ন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত হচ্ছে, বিএনপি-জামায়াতের কোন নেতা যাতে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন