মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

ইংল্যান্ডকে আতিথ্য দেয়ার আকুতি মাশরাফির

প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : এর আগে ইংল্যান্ড ওয়ানডে অধিনায়ক যখন বাংলাদেশ সফর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলার প্রস্তাব করেছেন, তখন ইংল্যান্ড দলকে নির্বিঘেœ বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি। ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী দেশে সংঘাতপূর্ণ অবস্থার মধ্যে টি-২০ বিশ্বকাপ খেলে গেছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। নিরাপত্তা অজুহাতে এ বছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ থেকে অস্ট্রেলিয়া তাদের দল প্রত্যাহার করলেও  ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ দল অংশ নিয়েছে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত আইসিসি’র এই মেগা ইভেন্টে।  ক্রিকেটের অতীত ঐতিহ্য বজায় রেখে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল পূর্ব নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশ সফর করবে বলেও আশা প্রকাশ করেছিলেন মাশরাফি। গত পরশু ইংল্যান্ডের প্রভাবশালী  দৈনিক ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এর একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সফরকালে বিমানবন্দর থেকে টিম হোটেল এবং টিম হোটেল থেকে খেলার মাঠে যাতায়াত পথের নিরাপত্তা নিয়ে ইসিবি’র প্রধান নিরাপত্তা উপদেষ্টা রেগ ডিকাসন শঙ্কা প্রকাশ করায় ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে এখন উৎকণ্ঠায় পড়েছে পুরো দেশ।
 গত ১৭ থেকে ২০ আগস্ট- এই চারদিন বাংলাদেশ সফরকালে ইসিসি’র নিরাপত্তা প্রতিনিধি দল যে সব তথ্য সংগ্রহ করেছেন, সেসব তথ্য ক্রিকেটারদের সামনে তুলে ধরবেন আজ। যে সভায় ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত মতামতকে দেয়া হবে গুরুত্ব, কাউকে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া হবে না- গতকাল ক্রিকইনফো এবং বিসিবি রেডিও ফাইভকে দেয়া ইংলিশ ওয়ানডে অধিনায়ক মরগানের এই অবস্থান শুনে উদ্বিগ্ন হওয়ারই কথা মাশরাফির। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন দ্বি-পাক্ষিক সিরিজকে সামনে রেখে গত ২০ জুলাই থেকে অনুশীলন শুরু করে সফরটি যখন ঘনিয়ে আসছে, তখন ইংল্যান্ড মিডিয়ার একটার পর একটা রিপোর্টে উদ্বিগ্ন হওয়ারই কথা মাশরাফির। তবে মাশরাফি এখনো আশার হাল ছাড়ছেন না। গতকাল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে মিডিয়াকে সে কথাই বলেছেন মাশরাফি- ‘এখনো আমি বিশ্বাস করি তারা আসবে। ইংল্যান্ড শুরু থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের পাশে ছিল। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে তারা এসেছিল। বাংলাদেশের এমন পরিস্থিতিতে সব সময় ইংল্যান্ড আমাদের পাশে ছিল। এখনো আমি আশা করছি ওরা থাকবে আমাদের সঙ্গে। নরম্যাল অবস্থা থাকলেও অন্যান্য দলকে কঠোর নিরাপত্তা দেয়া হয়। আমরা অনেক আত্মবিশ্বাসী, বিসিবি ও সরকারের পক্ষ থেকে সেভাবে নিরাপত্তা দেয়া হবে। আমার বিশ্বাস, কোনো সমস্যা হবে না আশা করি।’
পশ্চিমা দেশে একটার পর একটা সহিংস এবং সন্ত্রাসী ঘটনার পরও আন্তর্জাতিক খেলায় তার বিরূপ প্রভাব পড়ছে না, সেই দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলকে বাংলাদেশ সফরে আসার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন মাশরাফি- ‘একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমি বলব খেলা চালু রাখতে। যাতে খেলাটা হয়। পৃথিবীর সব জায়গাতেই এই ঘটনাগুলো ঘটছে। এভাবে খেলা বাদ দিলে এক সময়তো খেলাই বন্ধ হয়ে যাবে। ফ্রান্সের মতো জায়গায় সন্ত্রাসী হামলার পর কিন্তু ইউরো হয়েছে। সব দল খেলেছে। সব জায়গাতেই এমন কম-বেশি সমস্যা হচ্ছে। আমি বলব তোমরা আসো। আমি নিশ্চিত তোমরা এখানে এসে নিশ্চিন্ত মনে ক্রিকেট খেলতে পারবে। অন্য কিছু নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই। আশা করছি খুব ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এই পরিস্থিতিতে খেললে  বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হবে।’
ইসিবি’র প্রধান নিরাপত্তা উপদেষ্টার সূত্র দিয়ে বাংলাদেশে পথের নিরাপত্তা নিয়ে যে শংকার কথা জানিয়েছে দ্য টেলিগ্রাফ, তা উড়িয়ে দিয়েছেন মাশরাফি-‘খেলোয়াড়দের ঠিকভাবে নিয়ে যাওয়া এবং নিয়ে আসার ক্ষমতা আমাদের আছে। তাছাড়া  আমাদেরও কিন্তু পরিবার আছে। আমরাওতো মানুষ। আমাদের যাতায়াতের বিষয়টি এর মধ্যেই পড়ে। আমি মনে করি, বিসিবি খুব ভালোভাবে এই বিষয়টি সামলাতে পারবে। এটা খুব কঠিন কাজ নয়, আমার বিশ্বাস।’
বাংলাদেশে ক্রিকেটারদের  সংগঠন কোয়াবকে ব্যক্তিগতভাবে বিদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেছেন মাশরাফিÑ ‘প্লেয়ার্স এসোসিয়েশনের প্রভাব একটা আছে।  হয়তোবা আমরা এতটা শক্তিশালীভাবে করতে পারিনি। কেননা আমাদের খেলোয়াড়দেরও কিছুটা ভুল আছে। তারপরও আমি মনে করি, বড় স্বার্থের ব্যাপারে যদি সুযোগ থাকে এখান থেকে পদক্ষেপ নেয়া উচিত।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন