বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মাধবপুরে ট্রিপল মার্ডার ঘাতকের দায় স্বীকার

প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

হবিগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : আর্থিক দৈন্য আর বিদেশ যেতে না পারার হতাশার মাঝে ভাবীর প্রতারণা আর উপহাসের শিকার হয়ে খুনের সিদ্ধান্ত নেয় তাহের উদ্দিন এলাইছ ওরফে শাহ আলম। শুধু ভাবীকে খুন করতে গেলেও অন্যরা সামনে এসে পড়ায় তাদেরকেও খুন করে সে। বুধবার বিকেলে হবিগঞ্জে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসাদ বেগমের খাস কামরায় বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় ঘাতক শাহ আলম। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এদিকে ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় নিহত জাহানারা বেগমের ভগ্নিপতি হাজী মোঃ মোহন মিয়া বাদী হয়ে সকালে মাধবপুর থানায় শাহ আলমকে একমাত্র আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে দুপুরে নিহত ৩ জনের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
শাহ আলমের জবানবন্দির বরাত দিয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রায় ১১ বছর শাহ আলম কুয়েত এবং গ্রীসে প্রবাসী ছিল। সেখান থেকে সে তার ভাবী জাহানারা বেগমের কাছে উপার্জিত টাকা পাঠায়। প্রায় সাড়ে ৩ বছর পূর্বে সে গ্রীস থেকে দেশে ফিরে। এর পর থেকে তার পাঠানো টাকা ফেরত চেয়ে ব্যর্থ হয়। ভাবী তার কোন টাকা ফেরত দেননি। এমনকি সম্পত্তির ভাগেও তাকে ঠকিয়েছে। এ অবস্থায় প্রায় দুই/আড়াই বছর ধরে ভাবীর সাথে তার কথা বলা পর্যন্ত বন্ধ ছিল। কিন্তু সময়ে অসময়েই ভাবী তাকে উপহাস করে কথা বলেন। এরই মাঝে সে বিয়ে করে। তার একটি সন্তানও রয়েছে। আর্থিক কষ্টে সে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে দৈন্যের মাঝে দিনাতিপাত করছিলো। সম্প্রতি শাহ আলম আবারও ইরাক যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছিল। ১৯ আগস্ট তার ফ্লাইট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফ্লাইট হবেনা জানতে পেরে ১৮ আগস্টই সে বাড়ি ফিরে আসে। তখন থেকে ভাবীর উপহাসের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। মঙ্গলবার বিকেলে সে স্থানীয় বাজারে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়।
এ সময় ভাবী জাহানারা বেগম তাকে উদ্দেশ্য করে নিজের মেয়ে শারমিন আক্তারকে উপহাস করে বলে, তোমার আর বিদেশ যাওয়া হবে না। একাধিকবার এমন বলার পর সে সিদ্ধান্ত নেয় ভাবীকে খুন করবে। রাতে রান্না ঘর থেকে ছোরা নিয়ে ভাবীর ঘরে ঢুকে তাকে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। এসময় বিদ্যুৎ চলে যায়। মায়ের চিৎকার শুনে তার মেয়ে শারমিন এবং ছেলে সুজন এগিয়ে এসে জাহানারাকে জড়িয়ে ধরলে তাদেরকেও ছুরিকাঘাত করে শাহ আলম। ছুটে আসেন শাহ আলমের বৃদ্ধা মা’ও। তিনি এমন অবস্থা দেখে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যান। তাদের চিৎকারে প্রতিবেশী শিমুল মিয়া এসে এমন অবস্থা দেখে ঘরে থাকা একটি সাবল শাহ আলমের দিকে ছুঁড়ে মারেন। তখন ক্ষুব্ধ হয়ে শিমুল মিয়াকেও ছুরিকাঘাত করে। আহতদের মাঝে জাহানারা বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে শিমুল মিয়া এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর শারমিন মারা যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় সুজন মিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন