বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কওমী মাদরাসা ও উলামায়ে কেরামের অবদান অনস্বীকার্য

আমীরে হেফাজত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী

আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ২ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আল জামিআতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী চট্টগ্রাম এর বার্ষিক মাহফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলন গতকাল অনুষ্ঠিত হয়। জামিআর মজলিসে ইদারীর প্রধান মুফতী আজম আল্লামা আব্দুচ্ছালাম চাটগামী -এর উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে মাহফিলের আনুষ্ঠিানিক কার্যক্রম আরম্ভ হয়। যথা নিয়মে অন্যান্য উলামায়ে কেরাম নির্ধারিত বিষয়ে তাকরীর পেশ করেন। চলমান বিভিন্ন ইস্যুতে মুসলিম উম্মাহকে দ্বীনি দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়। একই দিন বাদ ইশা দস্তারবন্দী সম্মেলনে গত বছরের দাওরায়ে হাদীস উত্তীর্ণ দুই সহস্রাধিক শিক্ষার্থীদের পাগড়ী সনদ প্রদান করা হয়।
বিশ্বখ্যাত দারুল উলূম হাটহাজারীর বার্ষিক মাহফিলের মূল অনুষ্ঠান বাদ ফজর থেকে আরম্ভ হয়ে ইশা পর্যন্ত চলমান থাকে। বাদ এশা গত বছর দাওরায়ে হাদীস উত্তীর্ণ ছাত্রদের সম্মাননা পাগড়ি প্রদানের মাধ্যমে মাহফিলের সমাপ্ত হয়।
প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে দেশ ও জাতির উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ নসীহত পেশ করেন জামিআর শায়খুল হাদীস ও আমীরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, মানবতার মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশ্ববাসীর জন্য রাহমাতুল লিল আলামিন বা শান্তির বার্তাবাহক হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন। নবুওয়াত প্রাপ্তির পর ইলমে ওহীর মাধ্যমে আইয়্যামে জাহিলিয়্যাত বা বর্বরতার যুগের নিকৃষ্ট মানুষগুলোকে সোনার মানুষে পরিণত করেছিলেন। তাদের অন্ধকারাচ্ছন্ন আত্মাগুলোকে নির্মল ও পরিশুদ্ধ করেছিলেন।
আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, পবিত্র কোরআনে নবী-রাসূলদের (আ.) মৌলিক চারটি কাজের কথা বলা হয়েছে। আল্লাহতাআলা এ প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদেরকে তার আয়াতগুলো পড়ে শোনান, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেন। অথচ এর আগে তারা সুস্পষ্ট গোমরাহিতে নিমজ্জিত ছিল। নবীগণের এ কাজ চলমান থাকবে। আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর অবর্তমানে এ কাজ সম্পাদন করবেন হক্কানী উলামায়ে কেরাম।
নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশেষ নবী। নতুন কেহ নবুওয়াতের বা নবী হওয়ার দাবি করলে সে হবে ভন্ড, প্রতারক। বর্তমান সময়ে কাদিয়ানীরা মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে তাদের নবী বলে দাবি করে। তাকে তারা নবী। মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী কখনো নবী হতে পারে না। সে ছিলো ইংরেজদের দালাল। তাকে যারা নবী মানবে তারা নিঃসন্দেহে কাফের। কাদিয়ানীরা সন্দেহ ছাড়া কাফের। ৯০% মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে মুসলিম পরিচয়ে কাদিয়ানীরা থাকতে পারে না। কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রিয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। উলামায়ে কেরাম নবী-রাসূলের উত্তরসূরি হিসেবে দীপ্ত কণ্ঠে জাতির সামনে হক কথা বলবেন। হক ও ন্যায়ের কথা বলতে ওলামায়ে কেরাম কারো রক্তচক্ষুকে ভয় করেন না।
মাহফিলের শেষ অধিবেশন ছিলো সমাবর্তন তথা দাওরা হাদীস (মাস্টার্স) উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদেরকে সম্মাননা পাগড়ি প্রদান। শিক্ষার্থীরা আবেগঘন পরিবেশে পাগড়ি গ্রহণ করে। পাগড়ি প্রদান শেষে মজলিসে ইদারীর প্রধান মুফতী আজম আল্লামা আব্দুচ্ছালাম চাটগামী, মূল্যবান নসীহত করে মুনাজাতের মাধ্যমে মাহফিল সমাপ্তি করেন।
অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, হযরত মাওলানা আল্লামা শেখ আহমদ, মাওলানা ইয়াহইয়া, মাওলানা সালাহ উদ্দীন, মাওলানা নূরুল ইসলাম, হযরত মাওলানা নোমান ফয়জী, মুফতী জসীম উদ্দীন, মুফতী কিফায়াতুল্লাহ, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, ড.আফম খালিদ হোসেন, মাওলানা সাজেদুর রহমান, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব প্রমূখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন